দুনিয়াজুড়ে
করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ১৯ লাখ ৭০ হাজার ছাড়িয়েছে। বাংলাদেশ সময় বুধবার
সকাল সাড়ে ৮টার দিকে আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারস এ তথ্য
জানিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস বৈশ্বিক
মহামারিতে এ পর্যন্ত বিশ্বের ২১৯টি দেশ ও অঞ্চল আক্রান্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত
বিশ্বজুড়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৯ কোটি ২০ লাখ ছয় হাজার ১৬৫। এর মধ্যে ১৯
লাখ ৭০ হাজার ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ইতোমধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছে ছয় কোটি ৫৮
লাখ ১৮ হাজার ৬২৯ জন।২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের
হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে ছড়িয়ে পড়ে করোনাভাইরাস। এক পর্যায়ে
উৎপত্তিস্থল চীনে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব কমলেও বিশ্বের অন্যান্য দেশে এর
প্রকোপ বাড়তে শুরু করে। চীনের বাইরে করোনাভাইরাসের প্রকোপ ১৩ গুণ বৃদ্ধি
পাওয়ার প্রেক্ষাপটে গত ১১ মার্চ দুনিয়াজুড়ে মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব
স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। তবে আশার কথা হচ্ছে, এখন আক্রান্তের পর
সুস্থ হওয়ার হার দ্রুত বাড়ছে। এরইমধ্যে করোনার টিকাও আবিষ্কৃত হয়েছে।ওয়ার্ল্ডোমিটারস-এর
তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা
যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দুই কোটি ৩৩ লাখ ৬৮ হাজার
২২৫। মৃত্যু হয়েছে তিন লাখ ৮৯ হাজার ৫৯৯ জনের।আক্রান্তের
হিসাবে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভারত। দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এক কোটি
চার লাখ ৯৫ হাজার ৮১৬। এর মধ্যে এক লাখ ৫১ হাজার ৫৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ব্রাজিলে আক্রান্তের সংখ্যা ৮১ লাখ ৯৫ হাজার ৬৩৭। এর মধ্যে দুই লাখ চার
হাজার ৭২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।উৎপত্তিস্থল চীনে
আক্রান্তের সংখ্যা ৮৭ হাজার ৭০৬। এর মধ্যে চার হাজার ৬৩৪ জনের মৃত্যু
হয়েছে। যদিও দেশটির বিরুদ্ধে প্রকৃত পরিস্থিতি গোপন করার অভিযোগ রয়েছে।
উহানের একজন স্বেচ্ছাসেবী বলেন, ‘বুদ্ধি-বিবেচনাসম্পন্ন যেকোনও মানুষ এই
সংখ্যা (সরকারি পরিসংখ্যান) নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করবেন।’মহামারির
শুরু থেকেই যুক্তরাষ্ট্র দাবি করে আসছিল, করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পেছনে
চীনের ভূমিকা রয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের সেই দাবিকে আরও জোরালো করে চীনের
উহানের ল্যাবের এক ভাইরোলজিস্ট লি মেং ইয়ানের বক্তব্য। লি মেং ইয়ান বলেন,
চীনের ল্যাবেই তৈরি করা হয়েছে করোনাভাইরাস। এটি মানুষের তৈরি বলে তার কাছে
শতভাগ প্রমাণ রয়েছে।হংকংয়ে জন্ম নেওয়া
ভাইরোলজিস্ট লি মেং ইয়ান পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে। বছরের শুরুতে
তাকে চীন হত্যা করতে চেয়েছিল বলে ভয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে যান তিনি।তিনি
জানান, চীনের পূর্বাঞ্চলে গত বছরের শেষ দিকে নিউমোনিয়ার মতো এই রোগ নিয়ে
প্রথম দিকে গবেষণাকারীদের একজন ছিলেন তিনি। কিন্তু যখন রোগীর সংখ্যা বাড়তে
থাকে তখন তাকে নীরব ও সতর্ক থাকতে বলা হয়। তার সুপারভাইজার তাকে বলেন, আমরা
সমস্যায় পড়বো এবং গুম হয়ে যাবো।এদিকে উহান শহরে
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ে খবর প্রকাশের জেরে গ্রেফতার হওয়া চীনা
সাংবাদিক ঝ্যাং ঝানকে চার বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ৩৭ বছর বছরের ঝ্যাং
ঝান ২০২০ সালের মে মাসে গ্রেফতার হন। বিবাদ সৃষ্টি ও ঝামেলায় উসকানি দেওয়ার
দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে তাকে।