নারীদের ওপর যৌন নির্যাতনসহ একাধিক অভিযোগে ৬৪ বছরের জনপ্রিয় টিভি
ধর্মপ্রচারক আদনান ওকতারকে ১০৭৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে তুরস্কের আদালত।
সোমবার দেশটির একটি আদালতে ওকতারের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি, নাবালিকাদের
যৌন নির্যাতন, প্রতারণা এবং রাজনৈতিক ও সামরিক গুপ্তচরভিত্তিক কাজের অভিযোগ
আনা হয়। পরে আদালত এ রায় দেন।
ওকতারের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, অশ্লীল পোষাক পরা নারী ঘেরা থাকতেন তিনি এবং তাদেরকে ‘বিড়াল ছানা’ বলে ডাকতেন ওকতার।
পাকিস্তানের সংবাদ মাধ্যম ডন অনলাইন জানিয়েছে, আদনান ওকতার যখন
সৃজনশীলতা এবং রক্ষণশীল মূল্যবোধের প্রচার করতেন, তখন নারীরা অর্ধনগ্ন
পোশাকে টিভি স্টুডিওতে সংগীতকে উজ্জীবিত করার জন্য তার চারপাশে নৃত্য
করতেন। ধারণা করা হচ্ছে, ওই নারীরা অনেকেই প্লাস্টিক সার্জারি করেছিল।
তুর্কি সংবাদ মাধ্যম আনাদলু এজেন্সি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক
ধর্মপ্রচারক ফেতুল্লা গুলেনের নেতৃত্বে ২০১৬ সালে তুরস্কে ব্যর্থ সামরিক
অভ্যুত্থানেও আদনান ওকতার জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
গার্ডিয়ান জানিয়েছে, এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আদনান ওকতার। যৌন
নির্যাতনের ঘটনাকে তিনি শহরের কাল্পনিক গল্ট বলে আখ্যায়িত করেছেন।
এর আগে ডিসেম্বরে ওকতার বিচারককে বলেছিলেন, তার প্রায় এক হাজার গালফ্রেন্ড রয়েছে।
অক্টোবরে এক শুনানিতে ওকতার বলেছিলেন, নারীদের জন্য আমার হৃদয়ে
ভালবাসা উপচে পড়া। প্রেম একটি মানবিক গুণ। এটি একটি মুসলিমের গুণ। আরেক
শুনানিতে তিনি বলেন, আমি অসাধারণ শক্তিমান।
১৯৯০ সালে কয়েকটি কেলেংকারির ঘটনায় ওকতারের নাম সামনে আসে। বিচারে একজন
নারী আদালতকে জানান, তাকে ও অন্যান্য নারীদের তিনি যৌন নির্যাতন করেছেন।
কিছু নারীদের তিনি ধর্ষণের পর জোর করে গর্ভনিধোরক বড়ি খাওয়াতেন। ওই নারী
সেখানে ১৭ বছর বয়সে যোগ দিয়েছিলেন।
ওকতারের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ ৯৬ হাজার গর্ভনিধোরক পিল উদ্ধার
করেছে। এ বিষয়ে ওকতার জানান, এসব গর্ভনিধোরক বড়ি তিনি চর্ম রোগ ও নারীদের
অনিয়মিত মাসিকের কাজে ব্যবহার করতেন।