মহামারীর ১০ মাসে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ বেড়েছে ৬৫%
Published : Thursday, 14 January, 2021 at 12:00 AM
করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে গেল বছরের ১০ মাসে দেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ বেড়েছে ৬৫ শতাংশের বেশি।
টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে এ তথ্য উঠে এসেছে।
বিটিআরসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হওয়ার আগে গত বছর ফেব্রুয়ারি নাগাদ ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ ছিল ৫৭ লাখ ৪৩ হাজার। ডিসেম্বরে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৫ লাখ ২২ হাজারে।
সে হিসাবে মহামারীর মধ্যে মার্চ থেকে ডিসেম্বর নাগাদ ১০ মাসে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ বেড়েছে ৩৭ লাখ ৭৯ হাজার। শতকরা হিসাবে এই সময়ে বৃদ্ধি ঘটেছে ৬৫.৮০%।
সাম্প্রতিক বছরগুলোর তুলনায় মহামারীর এই সময়ে দেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ বৃদ্ধির হার কয়েক গুণ বেশি। গত ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে ব্রডব্যান্ড ইন্টারেনট সংযোগ ছিল ৫৭ লাখ ৪২ হাজার। তার আগের বছর ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ ছিল ৫৭ লাখ ৩৫ হাজার।
সে হিসাবে ২০১৮ সালের তুলনায় ২০১৯ সালে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ বৃদ্ধির হার ছিল ০ দশমিক ১২ শতাংশ।
আর ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ ছিল ৫৩ লাখ ৪৪ হাজার। ২০১৭ সালের তুলনায় ২০১৮ সালে বৃদ্ধির হার ছিল ৭ দশমিক ৩১ শতাংশ।
বৈশ্বিক মহামারী রূপ নেওয়া ছোঁয়াচে রোগ কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ আটকাতে গত বছর ২৬ মার্চ থেকে দুই মাসের মতো দেশের সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সাধারণ ছুটি দেওয়া হয়। সে সময় বন্ধ হওয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখনও খোলেনি, অনেক প্রতিষ্ঠানই লেখাপড়া চালিয়ে নিচ্ছে অনলাইনে।
ওই ছুটি শুরু হওয়ার পরপরই দেশে ইন্টারনেটের চাহিদা বাড়তে থাকে, সেই সঙ্গে বাড়তে থাকে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের চাহিদা।
মহামারীকালে মানুষের জীবনধারা পরিবর্তনের কারণে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের চাহিদা বেড়ে চলছে বলে মনে করেন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি এম এ হাকিম।
তিনি বলেন, “মহামারীকালে অনেক সেবা এখন ইন্টারনেটনির্ভর হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা অনলাইনে ক্লাস করছে, অনেকে বাসায় বসে অফিস করছে। মোবাইল ইন্টারনেট দিয়ে এ সেবা নিলে খরচ বেশি পড়বে, তাই ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের দিকে ঝুঁকছেন গ্রাহকরা।”
ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট আগে শুধু শহরকেন্দ্রিক হলেও বর্তমানে জেলা ও উপজেলায় গ্রাহক বাড়ছে বলে জানান এম এ হাকিম।
তিনি বলেন, আইএসপি সেবাদাতারা বর্তমানে শুধু শহরকেন্দ্রিক না হয়ে জেলা-উপজেলায়ও তাদের সেবা বৃদ্ধি করাতে গ্রাহক বাড়ছে।
এদিকে বিটিআরসির হিসাবে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে মোবাইল ইন্টারনেট গ্রাহক সংখ্যা ছিল ৯ কোটি ৩৬ লাখ ৮১ হাজার। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে এ সংখ্যা ছিল ১০ কোটি ২৩ লাখ ৫৩ হাজার। গত এক বছরে এ সংখ্যা বেড়েছে ৮৬ লাখ ৭২ হাজার।
বিটিআরসির হিসাবে গত এক বছরে মোবাইল গ্রাহক বেড়েছে ৪৫ লাখ ৬৫ হাজারের বেশি।
বিটিআরসির হিসাবে গত ডিসেম্বর শেষে মোবাইল ফোন সংযোগ আছে ১৭ কোটি এক লাখ ৩৭ হাজার। এর মধ্যে গ্রামীণফোনের ৭ কোটি ৯০ লাখ ৩৭ হাজার, রবির ৫ কোটি ৯ লাখ ১ হাজার, বাংলালিংকের ৩ কোটি ৫২৩ লাখ ৭২ হাজার এবং টেলিটকের ৪৯ লাখ ২৭ হাজার।
বিটিআরসির হিসাবে গত ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে মোবাইল ফোনের গ্রাহক সংখ্যা ছিল ১৬ কোটি ৫৫ লাখ ৭২ হাজার।