গ্রীষ্মকালীন দলবদলে যে মেম্ফিস ডিপাই আর এরিক গার্সিয়াকে চেয়েও কিনতে পারেনি বার্সেলোনা, এই শীতকালীন দলবদলের সময় কি সেটা হবে? লিভারপুল কি রক্ষণভাগের নতুন কোনো খেলোয়াড় কিনবে? ম্যানচেস্টার সিটি আগুয়েরো-জেসুসদের সঙ্গী হিসেবে আরেক স্ট্রাইকার কেনার কথা ভেবে দেখছে? রামোসের রিয়ালের সঙ্গে চুক্তিরই-বা কী অবস্থা? তিনি যদি রিয়ালে না থাকেন, তাহলে কোথায় যেতে পারেন?
এমন আরও হাজারো দলবদলের গুঞ্জনে মুখর ফুটবলপাড়া। এ রকম অনেক প্রশ্নের উত্তর নিশ্চিত হয়ে যাবে আর কিছুদিনের মধ্যেই। ইউরোপীয় ফুটবলে শীতকালীন দলবদল চলছে এখন। মাসজুড়ে ক্লাবগুলো পছন্দের খেলোয়াড় কিনে নিজেদের দুর্বলতা ঢাকতে চাইবে, অপ্রয়োজনীয় খেলোয়াড় ছেড়ে দিয়ে খরচ কমাতে চাইবে। ইউরোপের প্রধান লিগগুলোর দলবদল চলবে একদম চলতি মাসের শেষ দিন পর্যন্ত।
সম্ভাব্য দলবদলের জন্য বাতাসে ভাসছে অনেক খেলোয়াড় ও তাঁদের প্রতি আগ্রহী ক্লাবগুলোর নাম। সাম্প্রতিক গুঞ্জনগুলো একনজরে দেখে নেওয়া যাক!
ইতালীয় সংবাদমাধ্যম কালসিওমের্কাতোর খবর, আগামী গ্রীষ্মেই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ফরাসি মিডফিল্ডার পল পগবাকে দলে নেওয়ার জন্য জোরেশোরে চেষ্টা চালিয়ে যাবে জুভেন্টাস। পগবা যে ইউনাইটেডে তেমন সুখে নেই, ফিরতেন চান সাবেক ক্লাবে—এ তথ্য এখন পগবার এজেন্ট মিনো রাইওলার কল্যাণে কারও অজানা নয়। দল বদলালে আবারও সেই জুভেন্টাসেই ফেরত যাবেন বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি।
আগামী জুনেই ম্যানচেস্টার সিটির সঙ্গে চুক্তি শেষ হচ্ছে আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার সের্হিও আগুয়েরোর। আগুয়েরোর বিকল্প হিসেবে এর মধ্যেই নতুন স্ট্রাইকার দলে আনার ব্যাপারে চিন্তা করা শুরু করে দিয়েছে সিটি। তবে নতুন স্ট্রাইকার আসলেই যে আগুয়েরোকে পত্রপাঠ বিদায় করে দেবে সিটি, তা নয়। বরং আরও এক বছরের জন্য চুক্তি নবায়ন করতে পারে এই স্ট্রাইকারের সঙ্গে। সে ক্ষেত্রে জানা গেছে, নিজের বেতন কমাতে হতে পারে আগুয়েরোকে, ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড ডেইলি স্টার জানিয়েছে এই তথ্য।
বহুদিন ধরেই টটেনহামের কোচ জোসে মরিনিওর পরিকল্পনায় নেই ইংলিশ মিডফিল্ডার দেলে আলি। মরিনিওর আচরণেও এই ব্যাপার পরিষ্কার, আলি চাইলে ক্লাব ছাড়তে পারেন, মরিনিও তাতে বাধা দেবেন না। এদিকে টটেনহামের সাবেক কোচ, আলির সাবেক গুরু মরিসিও পচেত্তিনো পিএসজিতে যোগ দিয়েছেন। ফলে আলির সামনে সুযোগের সৃষ্টি হয়েছে পিএসজিকে সম্ভাব্য গন্তব্য হিসেবে ভেবে দেখার। এদিক মরিনিও আবারও স্বীকার করেছেন, ক্লাবে নিজের বর্তমান অবস্থা নিয়ে ঠিক সুখে নেই আলি। কিন্তু আপাতত আলিকে ছাড়ার কোনো ইচ্ছাই নেই টটেনহাম সভাপতি ড্যানিয়েল লেভির, এমনটাই জানা গেছে। করোনায় আক্রান্ত সময়ে নিজের দলের ক্ষতি করে আলিকে ছাড়তে চাইছেন না তিনি।
অবশেষে আর্সেনাল ছাড়ছেন মেসুত ওজিল। আর্সেনালের সঙ্গে চুক্তির বাকি সময়ে যে বেতন পেতেন, সেটা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এই জার্মান মিডফিল্ডার। কিছুদিনের মধ্যেই যোগ দেবেন তুর্কি ক্লাব ফেনেরবাচেতে।
রিয়াল বেতিস থেকে বার্সায় আসার পর থেকে মূল একাদশে নিজের জায়গাটা তেমন পোক্ত করতে পারেননি লেফটব্যাক জুনিয়র ফিরপো। এখন জানা গেছেন, এই লেফটব্যাককে দলে রাখতে চাইছে না স্প্যানিশ ক্লাবটা। আর সেই সুবিধা নিতে চাইছে ইতালিয়ান ক্লাব নাপোলি। আপাতত ফিরপোকে ধারে দলে আনতে চাইছে তারা। ২০১৯ সালে বার্সায় আসার পর সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৩৩ ম্যাচ খেলেছেন ফিরপো। নতুন কোচ রোনাল্ড কোমানের অধীনে বলতে গেলে সুযোগই পাচ্ছেন না একদম। খেলেছেন মাত্র চারটি ম্যাচ।
রিয়াল ছাড়বেন মিলিতাও?
বার্সায় ফিরপোর অবস্থা যা, রিয়ালে ব্রাজিল ডিফেন্ডার এদের মিলিতাওর অবস্থাও কমবেশি তেমনই। রামোস-ভারান, এমনকি নাচোর জন্য মূল একাদশে সুযোগই পাচ্ছেন না এই তারকা। ফলে তাঁকে ঘিরে শুরু হয়েছে গুঞ্জন। জানা গেছে, জুভেন্টাস, টটেনহাম, বরুসিয়া ডর্টমুন্ড, লিভারপুল, এমনকি বায়ার্ন মিউনিখের মতো ক্লাবও যোগ দিয়েছে মিলিতাওকে পাওয়ার লড়াইয়ে। এমনিতেই নির্ভরযোগ্য ডিফেন্ডার ডেভিড আলাবা বায়ার্ন ছাড়ছেন, বায়ার্ন মূলত তাঁর বিকল্প হিসেবেই মিলিতাওকে দেখছে বলে জানিয়েছে গোল ডটকম।
এ তো গেল গুঞ্জনের খবর। কিন্তু এ পর্যন্ত কোন কোন খেলোয়াড় দল পরিবর্তন করলেন? লম্বা তালিকাটা একনজরে দেখে নেওয়া যাক—
সম্পাদিত ধার চুক্তি
সোয়ালিহো মেইতে (তুরিনো থেকে এসি মিলান, ধার)
কেভিন স্ট্রুটমান (মার্শেই থেকে জেনোয়া, ধার)
লুকা ইয়োভিচ (রিয়াল মাদ্রিদ থেকে আইনট্রাখট ফ্রাঙ্কফুর্ট, ধার)
মুসা দেম্বেলে (অলিম্পিক লিওঁ থেকে আতলেতিকো মাদ্রিদ, ধার)
তাকেফুসা কুবো (রিয়াল মাদ্রিদ থেকে হেতাফে, ধার)
কার্লেস আলেনিয়া (বার্সেলোনা থেকে হেতাফে, ধার)
উইলিয়াম সালিবা (আর্সেনাল থেকে নিস, ধার)
রাজ্জা নাইনগোলান (ইন্টার মিলান থেকে ক্যালিয়ারি, ধার)
সম্পাদিত পূর্ণাঙ্গ চুক্তি
সেবাস্তিয়েন হলার (ওয়েস্ট হাম থেকে আয়াক্স, ২০ মিলিয়ন পাউন্ড)
ওমর রেকিক (হার্থা বার্লিন থেকে আর্সেনাল, ০.৫ মিলিয়ন পাউন্ড)
আমাদ দিয়ালো (আতালান্তা থেকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, ১৮.৭ মিলিয়ন পাউন্ড)
জোয়াকিম মায়েলে (গেঙ্ক থেকে আতালান্তা, ৯ মিলিয়ন পাউন্ড)
ডমিনিক জবোস্লাই (সালজবুর্গ থেকে লাইপজিগ, ২২.৯ মিলিয়ন পাউন্ড)