নিজস্ব
প্রতিবেদক।। কুমিল্লা জেলা বাংলাদেশ উপজেলা পরিষদ এসোসিয়েশন এক জনাকীর্ণ
সংবাদ সম্মেলনে বলেছে, আইনের নির্দেশনা এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের
পুন: পুন: প্রজ্ঞাপনকে এক যুগেও কিছু কর্মকর্তাদের নেতিবাচক মনোভাবের কারণে
উপজেলা পর্যায় কার্যকর করা হয় নি। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় জারীকৃত সকল
নির্দেশনাবলী উপেক্ষা করে ভিন্ন ভিন্ন মন্ত্রণালয় ইনডেমনিটি অধ্যাদেশের
ন্যায় সাংঘর্ষিক ও অসামাঞ্জস্য পরিপত্র এর প্রধান অন্তরায় বলে মনে করেন
তারা।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, প্রজাতন্ত্রের মালিক জনগণ, যা নিশ্চিত
হবেন প্রতি স্তরে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয় শাসন ব্যবস্থার মাধ্যমে
কিন্তু কিছু কর্মকর্তার নেতিবাচক মনোভাবে তা বিঘিœত। এ যেন
জনপ্রতিনিধিবিহীন জনপ্রশাসন প্রতিষ্ঠা এবং পাকিস্তানিরা যেরূপ বাঙালির শাসন
মেনে নিতে পারে নি তেমনি জনপ্রতিনিধিদের শাসন মেনে না নিতে পারা কিছু
কর্মকর্তাদের অনীহা ও ষড়যন্ত্র।
কুমিল্লা জেলা ক্রীড়া সংস্থার সম্মেলন
কক্ষে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কুমিল্লা জেলা
বাংলাদেশ উপজেলা পরিষদ এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম
টুটুল। বক্তব্য রাখেন কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান
গোলাম সরওয়ার, কুমিল্লা জেলা বাংলাদেশ উপজেলা পরিষদ এসোসিয়েশনের সভাপতি মো:
সামছুদ্দিন কালু। অন্যান্যদের মধ্যে চান্দিনা উপজেলা চেয়ারম্যান তপন বকশী,
তিতাসের উপজেলা চেয়ারম্যান পারভেজ হোসেন সরকার, মনোহরগঞ্জের উপজেলা
চেয়ারম্যান মো: জাকির হোসেন, মুরাদনগরের উপজেলা চেয়ারম্যান ড.আহসানুল আলম
সরকার কিশোর, কুমিল্লা সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান তরিকুর রহমান জুয়েল,
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাবলু, চৌদ্দগ্রাম
উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রাশেদা আখতার উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে ৫
দফা দাবি তুলে ধরে বলা হয়, নির্বাচিত প্রশাসনিক একাংশ উপজেলা পরিষদের কাছে
আইনের তৃতীয় তফসিল অনুযায়ী হস্তান্তরিত ১৭টি বিভাগের কার্যক্রম যাতে উপজেলা
পরিষদের মাধ্যমে পরিচালিত হয় এর প্রতিবন্ধকতা হিসাবে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়
কর্তৃক সংবিধান ও আইন বহির্ভূত ইনডেমনিটির ন্যায় জারীকৃত পরিপত্রসমূহ
অবিলম্বে সংশোধন করা। সেই সাথে নির্বাচিত পরিষদের কার্যক্রম বাস্তবায়নের
জন্য আইনের ২৯ ধারা অনুযায়ী ১৭টি বিভাগের জন্য ভাইস চেয়ারম্যানদের
সভাপতিত্বে ১৭টি স্থায়ী কমিটি বিদ্যমান রয়েছে তা কার্যকর করা। এরপরেও যদি
কমিটি প্রয়োজন হয়, মাননীয় সংসদ সদস্য উপদেষ্টা, নির্বাচিত উপজেলা পরিষদ
চেয়ারম্যানকে সভাপতি, ভাইস চেয়ারম্যানদ্বয়কে সহ-সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী
অফিসার এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব করা যেতে পারে। আমরা
সকলকে নিয়ে একযোগে কাজ করতে চাই।
সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, উপজেলা
পরিষদের প্রধান নির্বাহী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের অনুমোদনক্রমে বিভাগের
প্রশাসনিক ও বেতন ভাতাদিসহ আর্থিক অনুমোদন নিয়ে হস্তান্তরিত ১৭টি বিভাগের
কার্যাবলী সম্পাদন করার নির্দেশনা মন্ত্রি পরিষদ বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট
মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রজ্ঞাপন জারী করা এবং উপজেলাধীন সকল রাজস্ব জমা-বিভাজন
ব্যয় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের অনুমোদনক্রমে সম্পাদনে যৌথ আয়ন-ব্যয়নের
আদেশ প্রদান করা হোক। জনস্বার্থে, এ খাতে বিদ্যমান অনিয়ম বন্ধ করা এবং
বিদ্যমান নির্বাচিত উপজেলা পরিষদ প্রশাসনিক একাংশ। সকল আনুষ্ঠানিকতায় আইন
বর্হিভূত উপজেলা প্রশাসন ব্যবহার না করে ২০১০ সালে সরকার কর্তৃক জারীকৃত
নিদের্শনা ‘উপজেলা পরিষদ’ ব্যবহার কার্যকরা হোক। কেননা নির্বাচিত
জনপ্রতিনিধি এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের নিয়ে টিম ওয়ার্কের মাধ্যমে তৃনমূলে
সুশাসন প্রতিষ্ঠায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা
অঙ্গিকারাবদ্ধ।
উল্লেখ্য যে ১৭টি মন্ত্রণালয়ের কার্য সম্পাদন করার সুযোগ
দেওয়া আছে সেগুলো হলো-জন প্রশাসন মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ
মন্ত্রণালয়, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয়,
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ, স্থানীয় সরকার,
পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও
ত্রাণ মন্ত্রণালয়, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, পরিবেশন ও বন মন্ত্রণালয়,
শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
কুমিল্লা জেলা বাংলাদেশ উপজেলা পরিষদ এসোসিয়েশনের
নেতৃবৃন্দ বলেন , আমাদের শান্তিপূর্ন কর্মসূচী কোন ব্যক্তি বা কর্মকর্তার
বিরুদ্ধে নয়, জাতির পিতার সংবিধান ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
কর্তৃক মহান জাতীয় সংসদে পাসকৃত আইনের যথাযথ বাস্তবায়নে চিহ্নিত
প্রতিবন্ধকতা দূর করে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নেতৃত্বে উপজেলা প্রশাসনিক
স্তরে কর্মকর্তাদের সমন্বয় একযোগে জনগনের জন্য কাজ করা।