ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
করোনা প্রতিরোধ ও ভ্যাকসিন ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা
কুমিল্লায় ভ্যাকসিনের প্রাথমিক চাহিদা ১ লাখ ৩৪ হাজার
তানভীর দিপু:
Published : Monday, 18 January, 2021 at 12:00 AM, Update: 18.01.2021 12:31:32 AM
কুমিল্লায় ভ্যাকসিনের প্রাথমিক চাহিদা ১ লাখ ৩৪ হাজার


* প্রবাসী ও মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে বাড়াতে হবে চাহিদা* করোনা ভ্যাকসিন ব্যবস্থাপনা উপ-কমিটি গঠন
* ১০ লক্ষাধিক ডোজ ভ্যাকসিন সংরক্ষণের সক্ষমতা--

প্রাথমিকভাবে কুমিল্লা জেলায় ১ লাখ ৩৪ হাজার ১ শত ২৫ জনের ভ্যাকসিনে প্রথম চাহিদার কথা জানিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. নিয়াতুজ্জামান। গতকাল কুমিল্লা জেলাপ্রশাসক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত কুমিল্লায় করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ সংক্রান্ত কমিটি ও করোনা ভাইরাস ভ্যাকসিন প্রদান ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় এই তথ্য উপস্থাপন করেন তিনি। তবে তালিকায় মুক্তিযোদ্ধা, পরিবহন শ্রমিক ও করোনাকালীন সময়ে ফ্রন্টলাইনে থাকা এনজিও কর্মীদের সংখ্যা লিপিবদ্ধ না থাকায় তা পুনরায় তৈরী করার জন্য সভায় সিদ্ধান্ত হয়। এজন্য একটি উপ-কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্তও নেয় কমিটি, যারা নতুন তালিকা তৈরীতে কাজ করবেন।  
কমিটির সভাপতি জেলাপ্রশাসক মোঃ আবুল ফজল মীর জানান, এই তালিকা সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য কুমিল্লা জেলা সিভিল সার্জন, ডেপুটি সিভিল সার্জন, একজন অতিরিক্ত জেলাপ্রশাসক, একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সমাজকল্যান কর্মকর্তা, সাংবাদিক ও এনজিও প্রতিনিধি রেখে উপ কমিটি কমিটি করে দেয়া হবে।  যদিও সিভিল সার্জন জানান, এই তালিকা সরকারি নীতি মেনে গত নভেম্বরে তৈরী করা। যে কারণে কিছুটা অসঙ্গতি থাকতে পারে। তা পুনরায় সংশোধিত করা যেতে পারে।
কমিটির উপদেষ্টা ও সদর আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার বলেন, কুমিল্লার জনসংখ্য অনুপাতে ভ্যাকসিনের যে চাহিদাপত্র তা খুবই কম। তাই কুমিল্লায় জনসংখ্যার অনুপাতে করোনার ভ্যাকসিন সরবরাহের জন্য সরকারের কাছে দাবি উত্থাপন করা হবে। না হয় কোন জেলায় জনসংখ্যা কম হলেও বেশি ভ্যাকসিন পাবে আর আমরা অধিক জনবহুল এলাকা হওয়া সত্ত্বেও কম ভ্যাকসিন পাবো। এছাড়া কুমিল্লায় যে পরিমান প্রবাসী রয়েছে তাদের কথা বিবেচনায় আনলেও আমাদের অনেক বেশি ভ্যাকসিনের চাহিদা তৈরী হবে। এসব বিষয়গুলো মাথায় রেখে সিভিল সার্জন ভ্যাকসিনের চাহিদা তালিকা তৈরী করতে হবে। এজন্য প্রয়োজনে আসন্ন জাতীয় সংসদ অধিবেশনে দাবি উত্থাপন করবো।  
সভায় জানানো হয়, কুমিল্লায় করোনার ভ্যাকসিন আসলে তা সংরক্ষণের ব্যবস্থা প্রাথমিকভাবে করা আছে। কুমিল্লা জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ষ্টোরেজে দু’টি ডব্লিউআইসি ষ্টোরেজ আছে, যেখানে প্রতিটিতে ১ লাখ ৫০ হাজার করোনা ভ্যাকসিনের ভায়াল সংরক্ষণ করা যাবে। প্রতিটি ভায়ালে ১০টি করে ভ্যাকসিনের ডোজ থাকে। অর্থাৎ এই দুটি ষ্টোরেজে ১০ লাখ ডোজ করোনার ভ্যাকসিন সংরক্ষণের সক্ষমতা রয়েছে।
এছাড়া সভায় আরো জানানো হয়, কুমিল্লায় ভ্যাকসিন আসলেই যারা করোনা পরীক্ষার সাথে জড়িত ছিলো, যেমন: ল্যাব টেকনিশিয়ান- সবার আগে তাদের ভ্যাকসিন দেয়া হবে। এরপর যারা করোনাকালীন সময়ে সক্রিয়ভাবে মাঠে কাজ করেছে তাদের দেয়া হবে। এজন্য অবশ্যই সরকারি যে নীতিমালা প্রনয়ন করা হয়েছে তা মেনে চলা হবে।
এদিকে করোনা ভ্যাকসিন সরবরাহ এবং শুরুতেই যারা ভ্যাকসিন পাবে এই নিয়ে যেন কোন ধরনের বিভ্রান্তি তৈরী না হয় এই বিষয়ে সচেতন থাকার জন্যও কমিটির সদস্যদের সতর্ক করা হয়।
কুমিল্লায় করোনা পরিস্থিতির সার্বিক অবস্থা সন্তোষজন বলে জানায় সভায় অংশ নেয়া করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্যরা। কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মোস্তফা কামাল আজাদ বলেন, করোনা পরীক্ষার জন্য ফেণী চাঁদপুর থেকে প্রাবাসীরা কুমিল্লা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে নমুনা দিতে আসে। যে কারনে কুমিল্লার বিপুল পরিমান প্রবাসীর সাথে দুই জেলার প্রাবাসীদের নতুনা পরীক্ষা করতে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবকে হিমশিম খেতে হয়। যদি সেসব জেলার প্রবাসীদের করোনা পরীক্ষা সেখানেই করা হয় তাহলে কুমিল্লার উপর চাপ কম পরবে এবং প্রবাসীরা সহজে দ্রুত পরীক্ষার ফল পাবে।  
জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও জেলাপ্রশাসক মোঃ আবুল ফজল মীরের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আ ক ম বাহা উদ্দিন বাহার, জেলা পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ, অতিরিক্ত জেলাপ্রশাসক(শিক্ষা ও আইসিটি) মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন, সিভিল সার্জন নিয়াতুজ্জামান, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক মোঃ মহিউদ্দিন ও কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ মোস্তফা কামাল আজাদ, কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর শওকত হোসেন, বিএমএ সভাপতি ডা. আতাউর রহমানসহ কমিটির অন্যান্য সদস্যরা। সভায় করোনা ভ্যাকসিন সম্পর্কিত তথ্য উপস্থাপন করেন সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. সৌমেন রায়।
সভা শেষে সংসদ সদস্য, জেলাপ্রশাসকসহ কমিটির অন্যান্য সদস্যরা কুমিল্লা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে ভ্যাকসিন ষ্টোরেজ পরিদর্শন করেন।