একাদশ জাতীয় সংসদের একাদশ অধিবেশন শুরু হলো। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সোমবার (১৮ জানুয়ারি) বিকাল সাড়ে চারটায় নতুন বছরের প্রথম এ অধিবেশন শুরু হয়। ‘শীতকালীন অধিবেশন’ নামে পরিচিত এ অধিবেশনের প্রথম বৈঠকে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ভাষণ দেবেন।
সাধারণত বছরের প্রথম অধিবেশন দীর্ঘ হয়। রাষ্ট্রপতির ভাষণের পর সংসদ সদস্যরা অধিবেশনজুড়ে ওই ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করেন। তবে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে এই অধিবেশন যতটা সম্ভব সংক্ষিপ্ত হবে। অধিবেশন ১২ থেকে ১৪ কার্যদিবস চলতে পারে। সাধারণত কার্য উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে অধিবেশনের মেয়াদ ঠিক করা হয়। তবে মহামারির কারণে পাঁচটি অধিবেশনের আগে ওই কমিটির বৈঠক হয়নি।
অধিবেশনের শুরুতে স্পিকার প্রথমে সভাপতিমণ্ডলী মনোনয়ন করেন। এবার অধিবেশনে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যরা হলেন— নজরুল ইসলাম, আফতাব উদ্দিন সরকার, আব্দুস সালাম মুর্দেশী, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও বেগম মমতাজ। স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের অনুপস্থিতিতে এদের মধ্যে অগ্রবর্তীজন অধিবেশনে সভাপতিত্ব করবেন।
সভাপতিমণ্ডলীর মনোনয়নের পর স্পিকার শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন। সাবেক ডেপুটি স্পিকার শওকত আলী, সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, সাবেক সংসদ সদস্য আখম জাহাঙ্গীর হোসাইন, খালেদুর রহমান টিটো, শাহ-ই-জাহান চৌধুরী, মোহাম্মদ আলী মোহাম্মদ আবু হেনা, এম হাসেম, আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, দেলোয়ার হোসেন খান, সামসুদ্দীন আহমেদ, নুরজাহান ইয়াসমিন, খালেদা পান্নার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করা হয়। এছাড়া সংসদ সচিবালয়ের কর্মচারী কোরবান আলীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচি ও সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিনের মা শেখ রাজিয়া নাসের, প্রধানমন্ত্রীর বড় জা রওশন আরা ওয়াহেদ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানের স্ত্রী বুলাহ আহম্মেদ, সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের স্ত্রী গুলশান আরা, মহিলা পরিষদের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আয়শা খানম, কথা সাহিত্যিক রাবেয়া খাতুন, ভাষা সৈনিক জাহিদ হোসেন মুসা মিয়া, কবি মনজুরে মাওলা, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার সমন্বয়ত আবদুল হান্নান খান, নাট্য ব্যক্তিত্ব আলী যাকের, সংগীতজ্ঞ ওস্তাদ শাহাদাৎ হোসেন খান, বীর উত্তম ক্যাপ্টেন আকরাম, অভিনেতা আব্দুল কাদের, প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান খান, অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করা হয়।
এছাড়া করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশ-বিদেশে যারা মারা গেছেন, তাদের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করা হয়। একইসঙ্গে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনায় হতাহতদের জন্য শোক প্রকাশ করা হয়।
শোক প্রস্তাব উত্থাপনের পর এক মিনিট নীরবতা পালন এবং মৃতদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করে মোনাজাত করা হয়। ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন।
এদিকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে মহামারিকালের অন্য চারটি অধিবেশনের মতো এবারও সীমিত সংখ্যক সংসদ সদস্য অধিবেশনে অংশ নেবেন। প্রথম দিন করোনাভাইরাস পরীক্ষায় নেগেটিভ রিপোর্ট পাওয়া সংসদ সদস্যরা অংশ নিচ্ছেন। এরপর প্রতি কার্যদিবসে সর্বোচ্চ ৯০ জনকে পর্যায়ক্রমে আমন্ত্রণ জানানো হবে।
সংসদ সচিবালয়ের কর্মরতদেরও অধিবেশন চলার সময় সংসদ ভবনে প্রবেশ সীমিত থাকবে। একমাত্র দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা সংসদে ঢুকতে পারবেন। তবে তাদের করোনাভাইরাস নেগেটিভ রিপোর্ট থাকতে হবে।