টানা পাঁচবার অনলাইন রিটার্ন দাখিলে দেশ সেরা হওয়ার কৃতিত্ব অর্জনের
মাধ্যমে চমক সৃষ্টি করেছে কুমিল্লা কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট।
কুমিল্লা, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষীপুর জেলা নিয়ে
গঠিত কুমিল্লা কমিশনারেট। সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মানের অঙ্গীকার
বাস্তবায়নে মাঠে সক্রিয় ও ধারাবাহিক নিরলস পরিশ্রমের ফসল ঘরে উঠেছে কাস্টমস
এক্সাইজ ও ভ্যাট কুমিল্লা কমিশনারেট (সিইভিসি) টিমের। জাতীয় রাজস্ব
বোর্ডের অধীন অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধন ও রিটার্ন দাখিল অন্যতম ডিজিটাল
কর্মকান্ড।
গত আগস্ট ২০২০ মাসে রাজস্ব পর্যালোচনা সভায় জাতীয়
রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা মোঃ রহমাতুর মুনিম মুজিববর্ষে রাজস্ব
আদায়ে সকল সূচকে সর্বোচ্চ কৃতিত্ব অর্জনের জন্য সকল কমিশনারেটকে নির্দেশ
দেন। সরকারের ডিজিটাল অঙ্গীকার বাস্তবায়নে বিশেষ এজেন্ডা নিয়ে জাতীয় রাজস্ব
বোর্ড কাজ করছে।
জানা যায়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আওতাধীন ১২টি
ভ্যাট কমিশনারেটের মধ্যে গত আগস্ট থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত টানা পঞ্চমবার
প্রথম স্থান ধরে রেখেছে সিইভিসি। ডিসেম্বর মাসে এই কমিশনারেটে অনলাইনে
রিটার্ন জমা হয়েছে ৯৪.৪১%।
অফিস সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লা
সিইভিসি'র রিটার্ন দাখিলযোগ্য প্রতিষ্ঠান (সংখ্যায়) ৯৬১২টি, ম্যানুয়াল
৩৫টি, অনলাইনে ৯০৭৫টি, সর্বমোট রিটার্ন দাখিল ৯১১০টি, নিবন্ধনের তুলনায়
দাখিলপত্র দাখিলের শতকরা হার ৯৪.৭৮%টি, মোট দাখিল পত্র তুলনায় অনলাইনে
দাখিলের শতকরা হার ৯৯.৬২%টি।
কুমিল্লা কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট
কমিশনার মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরী গত ১৫ জুলাই যোগদানের এক মাসের মাথায়
কুমিল্লা কমিশনারেট অনলাইন রিটার্ন জমায় পঞ্চম স্থান থেকে প্রথম স্থানে
উঠে আসে। পরবর্তীকালে এ কমিশনারেটের অনলাইন রিটার্ন দাখিলের চিত্র পাল্টে
যায়।
গত জুলাইয়ে রিটার্ন দাখিলের হার ছিল ৫১ শতাংশ। বর্তমান
কমিশনার গত বছরের ১৫ জুলাই কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রথম জুম সভা করে রিটার্ন
জমাকে অগ্রাধিকার ঘোষনা দেন। সভার পরপরই কমিশনার তদারকি শুরু করলেন। এ
কমিশনারেটের ছয়টি জেলায় করদাতাদের ফোন, প্রতিষ্ঠানের তদারকি বাড়ানো হয়।
‘রিটার্ন ওয়ানস্টপ কাউন্টার’ গঠন করা হয়। কুমিল্লা ভ্যাট টিম নিরন্তর ও
ক্লান্তিহীন কাজ শুরু করেন।
সিইভিসির সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ
ছালাউদ্দিন রিপন বলেন, অনলাইন ভ্যাট রিটার্ন দাখিলে কুমিল্লা ভ্যাট
কমিশনারেট টানা পঞ্চমবার ‘প্রথম’। রিটার্ন দাখিলের প্রথম স্থান অর্জনের পথ
কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না। একটা ভালো ‘টিমওয়ার্ক’ এর মাধ্যমে এ অর্জন। স্বীকৃতি
কাজের প্রণোদনা বৃদ্ধি করে। কর্মকর্তারা পরিশ্রম করেছেন। আমরা প্রকৃত
কর্মীদের স্বীকৃতি দানের চেষ্টা করছি। গত পাঁচ মাসের মতো ভবিষ্যতেও রিটার্ন
দাখিলের ধারা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এ বিষয়ে
কুমিল্লা কমিশনারেটের অতিরিক্ত কমিশনার মোঃ আবদুল হাকিম বলেন, করোনার
প্রাদুর্ভাবের মধ্যেও সাহস ও উদ্যম নিয়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ রাজস্ব
আদায় ও রিটার্ন অনলাইন দাখিলের কাজ করে যাচ্ছেন। কুমিল্লা টিম এ
চ্যালেঞ্জকে সফলভাবে মোকাবেলা করতে পেরেছে।
এ বিষয়ে কমিশনার
মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরী বলেন, সাফল্য অর্জনের চেয়ে ধরে রাখা কঠিন।
“কুমিল্লার কর্মপ্রবণ এনবিআরের সম্মানও উচ্চকিত করেছে। করোনাকালে কুমিল্লা
টিমের জন্য বিষয়টি খুবই চ্যালেঞ্জের ছিল। আগেও বলেছে দলবদ্ধ প্রচেষ্টা
প্রতিযোগিতা এ অভূতপূর্ব সাফল্যের মূল নিয়ামক এবং দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ
কর্মকর্তাদের পরিশ্রম ও সাফল্যের পিপাসা কুমিল্লা কমিশনারেটকে রাজস্ব
প্রবৃদ্ধি ও রিটার্ন দাখিলে উপর্যুপরি সাফল্য এনে দিয়েছে।
তিনি আরো
বলেন, সক্ষম কর্মকর্তাদের বাছাই করে জটিলতর কাজে নিয়োগ, মনিটরিং
উদ্বুদ্ধকরণ এক্ষেত্রে গতি বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়েছে। সর্বোপরি কর্মস্থলে
দেশাত্মবোধ ও সেবার মনোভাব থাকা জরুরি। সারা বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের এরকম
কাজের ধারা অব্যাহত থাকা উচিত। দক্ষ, সক্ষম, উপযুক্ত ও রাজস্ব বৃদ্ধিতে সকল
কর্মকর্তাদের আমরা পুরস্কৃত করি। ভবিষ্যতেও তাঁদের পুরস্কৃত করা হবে।
চলমান শীতকাল করোনার দ্বিতীয় ধাপ ও জনবলের সীমাবদ্ধতার চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ
করে গেছে সিইভিসি টিম। ধরে রেখেছে ধারাবাহিক সাফল্য।
‘আলোকিত
কাস্টমস, আলোকিত দেশ’ ও ‘অতিক্রম নয় ব্যতিক্রম’ শ্লোগানে উদ্বুদ্ধ হয়ে
অর্থবছরের প্রথম থেকে কাজ করছে কুমিল্লা টিম। আলোকিত কাস্টমসের মাধ্যমে গড়ে
উঠবে আলোকিত বাংলাদেশ। বাংলাদেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাবে দুর্বার গতিতে।
সুখী-সমৃদ্ধ স্বপ্নের উন্নত বাংলাদেশ গঠনে অহর্নিশ কাজ করছে বাংলাদেশ
কাস্টমস। আর সে স্বপ্ন পূরণের পথে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে জাতীয় রাজস্ব
বোর্ড।