১০০০ মণের বেশি কাঁচাপাট এক মাসের বেশি মজুত করা যাবে না
Published : Thursday, 21 January, 2021 at 12:00 AM
বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বলেছেন, ‘অভ্যন্তরীণ বাজারে প্রয়োজনীয় কাঁচাপাট সরবরাহ নিশ্চিতকরণ এবং পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানির ধারা বেগবান করার লক্ষ্যে ডিলার/আড়তদারগণ এক হাজার মণের বেশি কাঁচাপাট এক মাসের বেশি সময় ধরে মজুত করতে পারবে না। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে পাট অধিদফতরকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।’
বুধবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিজেএমএ) ও বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনাকালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। এ সময় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সাবিনা ইয়াসমিন, বাংলাদেশ জুট মিলস্ অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুর রহমান পাটোয়ারী, বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মো. জাহিদ মিয়াসহ অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘সম্প্রতি দেশে কাঁচাপাটের সংকট তৈরির কারণে পাটকলসমূহ উৎপাদন ঝুঁকিতে পড়েছে। এ অবস্থায় পাট ও পাটজাত পণ্যের রফতানি আয়ের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য কাঁচাপাটের সরবরাহ নিশ্চিত করতে সরকার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এজন্য লাইসেন্সবিহীন অসাধু ব্যবসায়ীদের কাঁচাপাট ক্রয়-বিক্রয় ও মজুত হতে বিরত রাখা, ভেজাপাট ক্রয়-বিক্রয় রোধ করাসহ বাজারে কাঁচাপাটের সরবরাহ নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পাট অধিদফতরকে নির্দেশ দেয়া করা হয়েছে।’
‘এ ছাড়াও চলতি পাট মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী পাট চাষ নিশ্চিতকরণে বীজ সরবরাহ সঠিক রাখতে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। মানসম্মত পাটবীজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে পাঁচবছরের জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় যৌথ উদ্যোগে একটি রোডম্যাপ তৈরি করেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত পাটবীজ উৎপাদনে স্বনির্ভর হবে। প্রয়োজনীয় পাটবীজ সংগ্রহে আমদানি নির্ভরতা আর থাকবে না। এ পাটমৌসুম থেকে রোডম্যাপ বাস্তবায়ন শুরু হবে। ধাপে ধাপে তা আগামী পাঁচবছরে শতভাগ বাস্তবায়ন করা হবে।’
মন্ত্রী আরো বলেন, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় উচ্চ ফলনশীল পাটবীজ উৎপাদনে স্বনির্ভরতা অর্জন এবং মানসম্মত পাট উৎপাদনে কৃষকদের উদ্ধুদ্ধকরণ ও সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় ‘উন্নত প্রযুক্তিনির্ভর পাট ও পাটবীজ উৎপাদন এবং সম্প্রসারণ’ শীর্ষক প্রকল্প চলমান রয়েছে। প্রকল্পটি দেশের ৪৬টি জেলার ২৩০টি উপজেলায় বাস্তবায়িত হচ্ছে। এ প্রকল্পের আওতায় প্রতি বছর প্রত্যক্ষভাবে এক লাখ ৫৩ হাজার পাটচাষি ও পরোক্ষভাবে ছয় লাখ ১২ হাজার কৃষক ও পরিবারের সদস্যরা উপকৃত হচ্ছেন।’
উল্লেখ্য, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম চারমাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানি করে বাংলাদেশ ৬৬৮ দশমিক ১১ কোটি ডলার আয় করেছে। এই অঙ্ক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩০ দশমিক ৫৬ শতাংশ বেশি। আর তা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ১৯ দশমিক ২৯ শতাংশ বেশি।