ছুটিতে দেশে এসেছিলেন সিঙ্গাপুর প্রবাসী হেদায়েত উল্লাহ নাহিদ। তারপর
আটকে গেলেন লকডাউনে। দেশে বসে কি করবেন তা ভেবে পাচ্ছিলেন না। শেষে ইউটিউব
তার পথ খুলে দিলো। ইউটিউব দেখে দেখে নাহিদ দেশের মাটিতেই ফলিয়ে ফেললেন
বিদেশি সবজি ক্যাপসিক্যাম। খেতভরা মিষ্টি এই মরিচ দেখে অবাক এলাকার মানুষ।
নাহিদের বাড়ি রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার মোহনপুর গ্রামে। এলাকার কলেজ থেকে
উচ্চ মাধ্যমিক পেরিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিন্তু
পড়াশোনা শেষ না করেই পাড়ি জমান সিঙ্গাপুর। চার বছর সিঙ্গাপুরে থাকার পর
গেলো বছর ছুটিতে তিনি দেশে আসেন। করোনা পরিস্থিতিতে তার আর ফেরা হয়নি। এখন
তিনি গ্রামের এক আদর্শ চাষি, অন্যদের অনুপ্রেরণার উৎস।
ইউটিউবের ভিডিও দেখে নাহিদ ক্যাপসিক্যাম চাষে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। কিন্তু
কিছুতেই বীজ পাচ্ছিলেন না। কিন্তু নাহিদ থেমে যাননি। এক ব্যক্তির মাধ্যমে
ভারত থেকে ‘ইন্দ্রা’ জাতের ৫০ গ্রাম বীজ সংগ্রহ করেন ভারত থেকে। বাড়ির
সামনে বীজতলা তৈরি করেন গত সেপ্টেম্বরে।
এরই মধ্যে বাড়ির পাশে চাচার কাছ থেকে ইজারা নেন ৩৬ শতক জমি। বীজতলায় বীজ
বপনের ৪২ দিন পর চারা তুলে জমিতে লাগান। গত ২ জানুয়ারি নাহিদ প্রথমবারের
মতো জমি থেকে ক্যাপসিক্যাম সংগ্রহ করেন।
মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) পড়ন্ত বিকেলে নাহিদের ক্যাপসিক্যাম খেতে গিয়ে
দেখা যায়, গাছে গাছে প্রচুর ক্যাপসিক্যাম ধরেছে। মিষ্টি স্বাদের
ক্যাপসিক্যাম থেকে খেত থেকেই পাওয়া গেল কাঁচামরিচের ঘ্রাণ। জমির বেশিরভাগ
অংশেই মালচিং পলিথিন ব্যবহারের মাধ্যমে ক্যাপসিক্যাম গাছ লাগানো হয়েছে।
কিছুটা অংশে গাছ লাগানো হয়েছে মালচিং পলিথিন ছাড়া সাধারণভাবেই।
মালচিং পদ্ধতিতে বিশেষ এক ধরনের পলিথিন গাছের নিচে বেডে লম্বাভাবে
বিছিয়ে রাখা হয়। চারা রোপণের আগেই এই পলিথিন বেডে বিছিয়ে দিতে হয়। যে
স্থানটিতে চারা রোপণ করা হবে সেই স্থানটি পলিথিন বিছানোর সময়ই ছিদ্র করে
দেয়া হয়। এরপর সেখানে ক্যাপসিক্যাম গাছের চারাগুলো রোপণ করা হয়।