একজন স্বাস্থ্যকর্মীকে দিয়েই ২৭ জানুয়ারি শুরু হচ্ছে করোনার টিকা প্রয়োগ
Published : Sunday, 24 January, 2021 at 12:00 AM
আগামী
২৭ জানুয়ারি একজন নার্সকে টিকা দেওয়ার মধ্য দিয়ে প্রাথমিক করোনার টিকা
দেওয়ার কাজ শুরু হবে। ভার্চুয়ালি যুক্ত থেকে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার (২৩ জানুয়ারি) রাজধানীর জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়ে স্বাস্থ্য সচিব আব্দুল মান্নান এ তথ্য জানান।
তিনি
জানান, আগামী ২৭ জানুয়ারি রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে একজন
স্বাস্থ্যকর্মীকে দিয়ে দেশে শুরু হতে যাচ্ছে করোনা টিকার প্রয়োগ। পরবর্তীতে
আরও চারটি হাসপাতাল এবং আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে করোনার টিকা প্রয়োগ
শুরু হতে যাচ্ছে। সেদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনলাইনে যুক্ত থেকে এ
কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন।
স্বাস্থ্য সচিব বলেন, ‘আগামী ২৭ জানুয়ারি
কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে স্বাস্থ্যকর্মীর সঙ্গে অন্যান্য পেশার মানুষও
থাকবে। সেখানে আরও ২৪ জনসহ মোট ২৫ জনের একটি প্রতিনিধিত্বশীল গ্রুপ থাকবে।
সেই তালিকায় চিকিৎসক, নার্স, মুক্তিযোদ্ধা, শিক, পুলিশ, সেনাবাহিনী,
সাংবাদিকসহ অন্য পেশার মানুষ যুক্ত থাকবে।’
‘পরদিন ২৮ জানুয়ারি ঢাকা
মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা জেনারেল হাসপাতাল, কুয়েত মৈত্রী জেনারেল
হাসপাতাল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়েও টিকা প্রয়োগ
শুরু হবে। এসব হাসপাতালের ৪০০ থেকে ৫০০ জন স্বাস্থ্যকর্মীদের দিয়েই এ
কার্যক্রম শুরু হবে।’—বলেন স্বাস্থ্য সচিব।
তিনি বলেন, ‘তাদের টিকা দেওবার পর একসপ্তাহ পর্যবেণে রাখা হবে এবং পরে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হবে।’
এর
আগে ২০ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে ভ্যাকসিনবিষয়ক এক সংবাদ সম্মেলনে
আগামী ২৭ অথবা ২৮ জানুয়ারি কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ‘ড্রাই রান’বা
মহড়া শুরুর মাধ্যমে দেশে করোনা টিকাদান কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানিয়েছিলেন
স্বাস্থ্য সচিব আব্দুল মানান।
গত ১১ জানুয়ারি স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছিল, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে দেশে করোনাভাইরাসের টিকা জাতীয়ভাবে শুরু হবে।
তবে
এই পরিকল্পনা পরিবর্তন হতে পারে জানিয়ে আব্দুল মান্নান বলেন, ‘অন্য
হাসপাতালেও উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু করা হতে পারে। কিন্তু যে হাসপাতালেই হোক
সেখানে প্রথম দিনে সিভিল সোসাইটির বিভিন্ন স্তরের ২০ থেকে ২৫ জনকে টিকা
দেওয়া হবে।’
স্বাস্থ্য সচিব বলেন, ‘সেখানে চিকিৎসক, নার্সসহ একজন করে
শিক, মুক্তিযোদ্ধা, পুলিশ বাহিনী, সেনাবাহিনী, সিভিল সংগঠনের প্রতিনিধি,
সাংবাদিকদের নেওয়া হবে। ক্রস সেক্টর থেকে বাছাই করে প্রথম দিন ২০ থেকে ২৫
জনকে এই টিকা দেওয়া হবে। পরবর্তীতে ড্রাই রান বা টেস্ট হিসেবে ঢাকা
মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, কুয়েত বাংলাদেশ
মৈত্রী সরকারি হাসপাতাল ও মুগদা জেনারেল হাসপাতালকে বাছাই করা হয়েছে।
সেখানে ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে টিকা দেওয়া হবে। এরপর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার
প্রটোকল অনুযায়ী তাদের পর্যবেণ করা হবে, তাদের মধ্যে কোনও
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয় কিনা সেটা দেখা হবে।’
ইতোমধ্যেই গত ২০ জানুয়ারি
ভারত সরকারের উপহার দেওয়া অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি কোভিশিল্ড টিকা
দেশে এসে পৌছাঁয়। আর বাংলাদেশের কিনে নেওয়া তিন কোটি ডোজের ভেতরে ৫০ লাখ
আসছে এ মাসের ভেতরে। এই ৭০ লাখ টিকার ভেতরে ৬০ লাখ টিকা দেওয়া হবে প্রথম
মাসে, দ্বিতীয় মাসে দেওয়া হবে ৫০ লাখ, তৃতীয় মাসে দেওয়া হবে আবার ৬০ লাখ।
প্রথম মাসে টিকা পাওয়াদের দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হবে তৃতীয় মাসে। আর এ হিসাবে
ভ্যাকসিন বিতরণ পরিকল্পনা ইতোমধ্যে করা হয়ে গেছে। কিনে নেওয়া টিকা দেশে
আসার পর ঢাকা থেকে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস চুক্তি অনুযায়ী দেশের
বিভিন্ন জেলাতে টিকা পৌঁছে দেবে।
স্বাস্থ্য সচিব জানান, ইতোমধ্যে
ভ্যাকসিনের জন্য সিরিঞ্জসহ সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। টিকাদানকারীদের
প্রশিণ শেষ পর্যায়ে, আগামী ৩০ জানুয়ারি এ প্রশিণ শেষ হবে। তারা ইতোমধ্যেই
প্রশিতি। টিকা নিয়ে বাংলাদেশ অভিজ্ঞ, পুরো বিশ্বেই প্রশংসিত।