চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচন নাস্তা করতে বেরিয়ে ভোটের সংঘাতে প্রাণ গেল বুড়িচংয়ের আলাউদ্দিনের
Published : Thursday, 28 January, 2021 at 12:00 AM
কাজে
বের হওয়ার আগে সকালে ঘর থেকে বেরিয়েছিলেন নাস্তা করতে। কিন্তু নাস্তা সেরে
আর ঘরে ফেরা হলো না নির্মাণশ্রমিক আলাউদ্দিনের। নির্বাচনী সহিংসতা প্রাণ
কেড়ে নিল তার। বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ১৩ নম্বর পাহাড়তলি ওয়ার্ডের
ফোরাপাস রোডে রেললাইনের পাশে ইউসেফ আমবাগান টেকনিক্যাল স্কুল কেন্দ্রের
সামনে গুলিতে মারা যান আলাউদ্দিন ওরফে আলম (২৩)। আলা উদ্দিন কুমিল্লার
বুড়িচং এলাকার মৃত সুলতান আহমেদের সন্তান। নগরের আমবাগান এলাকায় ভাড়া বাসায়
থাকতেন তিনি।
চট্টগ্রাম নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) বিজয় বসাক
বলেন, “দুই পরে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে।
বর্তমানে সার্বিকভাবে পরিস্থিতি ভালো। কিছু কিছু উত্তেজনা আছে আপনারাও
দেখছেন।”
রেললাইনের যে পাশে ভোটকেন্দ্র তার উল্টো দিকে আমবাগান ছিন্নমূল
কলোনির বাসিন্দা তিনি। তার স্ত্রী ও এক বছর বয়সী মেয়েটি থাকে গ্রামের
বাড়িতে।
ওই কলোনিতে মা, ভাই, বড় বোন আর বোনের তিন মেয়ে ও এক ছেলের সঙ্গে থাকতেন আলাউদ্দিন।
দুপুরে
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, আলাউদ্দিনের মা আসিয়া খাতুন ছেলের শোকে বারবার
মুর্ছা যাচ্ছেন রেল লাইনের পাশেই। জ্ঞান ফিরলে তিনি নির্বাক দৃষ্টিতে
তাকিয়ে থাকেন।
আলাউদ্দিনের বোন জাহানারা বেগম বলেন, “সকালে নাস্তা খেতে
বের হয় আলাউদ্দিন। নাস্তা করে সে কাজে যাবার কথা ছিল। মোড়ে পৌঁছাতেই লাটিম
মার্কার (আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরীর
মার্কা) লোকজন এসে গুলি করে।”
নিহত আলাউদ্দিনের ভাই জসিম জানান, নাস্তা
করে তার ভাইয়ের কাজে যাওয়ার কথা ছিল। কেন্দ্রের সামনে যেতেই উত্তর পাশ থেকে
গুলি ও পাথর মারা শুরু হয়। হামলাকারী পুরুষদের সাথে মহিলারাও ছিল।
ইউসেফ
স্কুলের ওই কেন্দ্রে মোট ভোটার ৩৫৫৪জন। ওই কেন্দ্রে নয়টি বুথ আছে।
কেন্দ্রের বাইরে গুলিতে একজন নিহত হলেও ভোটগ্রহণ বন্ধ হয়নি বলে জানান
কেন্দ্রটির প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম।
১৩ নম্বর পাহাড়তলি
ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী
(লাটিম) এবং দলীয় নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহমুদুর রহমান (রেডিও)।
আলাউদ্দিন কোনো প্রার্থীর সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন না বলে পরিবার জানালেও তাকে নিজের সমর্থক দাবি করেছেন মাহমুদুর রহমান।
নগর
পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ) এস এম মোস্তাক আহমেদ বলেন, “বিচ্ছিন্ন
কয়েকটি ঘটনা ছাড়া আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। খুলশীর ঘটনাটি (আলাউদ্দিন
খুন) আমরা দেখছি। আমাদের নলেজে আছে। কোনো অপরাধীকে ছাড় দেওয়া হবে না।”