১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ডাকাতিয়া নদীতে বীর প্রতীক মমিনুল্লা পাটোয়ারীর নেতৃত্বে মাইন বিস্ফোরণে ডুবিয়ে দেয়া হয় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অস্ত্রবাহী জাহাজ এমভি আকরাম (লোরাম)। জাহাজটি পুনরুদ্ধারের পর নারায়ণগঞ্জের একটি ডকইয়ার্ডে সংরক্ষণ করা হয়।
সেই জাহাজটি পুনরায় চাঁদপুরে ফিরিয়ে আনতে দীর্ঘদিন যাবত দাবি জানিয়ে আসছিল চাঁদপুরের সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। আর সেই দাবির প্রেক্ষিতে অবশেষে চাঁদপুরেই সংরক্ষণ হচ্ছে এমভি আকরাম (লোরাম)।
গত বৃহস্পতিবার সেই লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবের নেতৃত্বে একটি দল স্থান নির্ধারণ করার জন্য সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন বলে নিশিত করেছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান।
সরেজমিনে স্থান পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিস, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান, জেলা মুক্তিযোদ্ধা ডেপুটি কমান্ডার রঞ্জিত কুমার দে চাকি, সহকারী কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা মহসিন পাঠান, চাঁদপুর প্রেসক্লাব সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী, সাধারণ সম্পাদক রহিম বাদশা, নৌ বাহিনীর প্রতিনিধি, সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি, ভূমি কর্মকর্তাসহ আরো অনেকে।
জানা যায়, মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম স্মৃতি বিজড়িত এমভি আকরাম (লোরাম) জাহাজটি মুক্তিযুদ্ধের সময় চাঁদপুরের ডাকাতিয়া নদীতে মাইন বিস্ফোরণে ডুবিয়ে দেয় মুক্তিযোদ্ধারা। অস্ত্রবাহী যুদ্ধজাহাজ এমভি আকরাম (ছদ্মনাম লোরাম) চাঁদপুর শহরের ডাকাতিয়া নদীর পাড় সংলগ্ন স্থানে সংরক্ষণ ও একটি মিউজিয়াম নির্মাণের জন্য দীর্ঘদিন দাবি জানিয়ে আসছিল চাঁদপুরবাসী।
আর এটি চাঁদপুরে সংরক্ষণের দাবিতে গত ২৩ নভেম্বর চাঁদপুরের তৎকালীন জেলা প্রশাসক মাজেদুর রহমান খানকে একটি স্মারকলিপি দেন ঢাকাস্থ চাঁদপুর মুক্তিযোদ্ধা পরিষদের শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা। সেইসঙ্গে দেশের নৌ-জাদুঘরটিও চাঁদপুরে করার দাবি জানান তারা।
২০০৮ সালের ৯ অক্টোরব ডাকাতিয়া নদীর তলদেশ থেকে জাহাজটি তুলে নিয়ে নারায়ণগঞ্জে একটি ডকইয়ার্ডে ফেলে রাখে সংশ্লিষ্টরা। পরে চাঁদপুরের মুক্তিযোদ্ধা ও সচেতন মহল বিষয়টি নিয়ে আন্দোলন শুরু করে।
মুক্তিযোদ্ধারা চান যেখানে জাহাজটি ডুবিয়েছিলেন সেখানেই যেন সরকার সংরক্ষণ করে। যাতে পরবর্তী প্রজন্ম গর্ব করে বলতে পারে এবং দেখাতে পারে তাদের পূর্বপুরুষের বীরত্বের কথা।
এ বিষয়ে চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান বলেন, জাহাজটি চাঁদপুরেই সংরক্ষণ করা হচ্ছে। স্থান নির্ধারণ করা হলেই সংরক্ষণের কাজ শুরু হবে।