বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৫ শতাংশ হারে আয়কর আপাতত না নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। তবে দুটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ পর্যন্ত যত টাকা (আয়কর) আদায় করেছে তা ফেরত দিতে হাইকোর্টের আদেশের ওপর স্থগিতাদেশ দেয়া হয়েছে।
একইসঙ্গে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরকারের ১৫ শতাংশ হারে আয়কর আদায়ের দুই প্রজ্ঞাপন অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিল আবেদনের অনুমতি (লিভ টু আপিল) দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এ আপিল নিষ্পত্তি না পর্যন্ত এ আয়কর আদায় থেকে বিরত থাকতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে এনবিআরের করা লিভ টু আপিল আবেদনের ওপর শুনানি শেষে মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারি) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষে (এনবিআর) ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এএফ হাসান আরিফ ও ব্যারিস্টার ফিদা এম কামাল, ব্যারিস্টার মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন ও ব্যারিস্টার ওমর সাদাত।
অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, বিষয়টি উচ্চ আদালতে গড়ানোর পর থেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়কর নিচ্ছিল না এনবিআর।
ব্যারিস্টার মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ৪৬টি রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৬ সালের ৫ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট রায় দেন। রায়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরকারের ১৫ শতাংশ হারে আয়কর আদায়ের দুই প্রজ্ঞাপন অবৈধ ঘোষণা করেন। একইসঙ্গে ওই দুই প্রজ্ঞাপন অনুসারে যে অর্থ আদায় করা হয়েছে, তা ফেরত দিতে এনবিআরকে নির্দেশ দিয়েছিলেন।
তিনি আরও বলেন, ওই রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। শুনানি শেষে আজ লিভ মঞ্জুর করেছেন। একইসঙ্গে অর্থ ফেরতে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেছেন। তবে এ আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ১৫ শতাংশ আয়কর নেয়া থেকে এনবিআরকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
এর আগে ২০০৭ সালের ২৮ জুন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল। এতে বলা হয়েছিল, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) কর্তৃক অনুমোদিত প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় এবং অপরাপর বিশ্ববিদ্যালয় যারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় নয়, তাদের উদ্ভূত আয়ের ওপর ১৫ শতাংশ হারে আয়কর পুনর্র্নিধারণ করা হলো। ১ জুলাই থেকে এটা কার্যকর হবে।
২০১০ সালের ১ জুলাই এনবিআরের আরেক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছিল, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ব্যতীত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি মেডিকেল কলেজ, বেসরকারি ডেন্টাল কলেজ, বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ বা কেবলমাত্র তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে শিক্ষাদানে নিয়োজিত বেসরকারি কলেজ ও উদ্ভূত আয়ের ওপর প্রদেয় আয়করের হার হ্রাস করে ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হলো। এরপর বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ৪৬টি রিট করা হয়েছিল।