ম্যাচ শেষের প্রতিক্রিয়ায় কেন উইলিয়ামসনের প্রথম কথা, “অবিশ্বাস্য কঠিন লড়াইয়ের সিরিজ ছিলৃ।” শেষ ম্যাচের আগে চিত্র অনেকটা সেরকমই ছিল। সিরিজে ছিল ২-২ সমতা। কিন্তু নিউ জিল্যান্ড অধিনায়ক যেমনই বলুন, সিরিজ নিধার্রণী ম্যাচে জমল না লড়াই। কিউই বোলারদের দারুণ পারফরম্যান্সের পর মার্টিন গাপটিলের দুর্দান্ত ইনিংসে পাত্তাই পেল না অস্ট্রেলিয়া।
ওয়েলিংটনে দর্শকবিহীন দুটি ম্যাচের পর এই ম্যাচে আবার মাঠে ফেরে দর্শক। মাঠের পারফরম্যান্সেও টানা দুই হারের হতাশা ভুলে ঘুরে দাঁড়ায় নিউ জিল্যান্ড। টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচে কিউইদের জয় ৭ উইকেটে। ৫ ম্যাচের সিরিজ তারা জিতে নিল ৩-২ ব্যবধানে।
ইশ সোধি, ট্রেন্ট বোল্টদের দুর্দান্ত বোলিং অস্ট্রেলিয়াকে আটকে রাখে ১৪২ রানে। রান তাড়ায় নিউ জিল্যান্ড জিতে যায় ২৭ বল বাকি রেখেই।
৪৬ বলে ৭১ রানের ইনিংসে রান তাড়ায় কিউইদের নায়ক অভিজ্ঞ গাপটিল।
স্কাই স্টেডিয়ামের ড্রপ ইন উইকেটে এটি ছিল টানা তৃতীয় ম্যাচ। শুষ্ক উইকেট বেশ মন্থর হবে বলে ধারনা করা হচ্ছিল। ম্যাচ শুরুর পর অবশ্য দেখা যায়, ব্যাটিংয়ের জন্য উইকেট যথেষ্টই ভালো।
তবে নতুন বলে বাঁহাতি স্পিনার মিচেল স্যান্টনার নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে উড়ন্ত সূচনা পেতে দেননি অস্ট্রেলিয়াকে। প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন ট্রেন্ট বোল্ট, তৃতীয় ওভারে ফিরিয়ে দেন জশ ফিলিপিকে।
দ্বিতীয় জুটিতে অবশ্য অস্ট্রেলিয়াকে বেশ ভালো ভিত গড়ে দেন অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ ও ম্যাথু ওয়েড। আগের চার ম্যাচে ওপেনিংয়ে ব্যর্থ ওয়েড এ দিন তিনে নেমে কিছুটা ফিরে পান নিজেকে। তবে দুজনের কেউই খেলতে পারেননি বড় ইনিংস।
৩২ বলে ৩৬ করে ফিঞ্চের বিদায়ে ভাঙে ৬৬ রানের জুটি। ২৯ বলে ৪৪ রান করা ওয়েডকে ফেরান বোল্ট। লেগ স্পিনার সোধির দারুণ বোলিং থমকে দেয় অস্ট্রেলিয়ান মিডল অর্ডারকে।
অনিয়মিত স্পিনার মার্ক চাপম্যান পেয়ে যান গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের (১) গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। শেষ ৭ ওভারে অস্ট্রেলিয়া তুলতে পারে মাত্র ৪৩ রান।
প্রত্যাশার কম পুঁজি নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার লড়াইয়ের আশা যতটুকু ছিল, সব গুঁড়িয়ে দেয় নিউ জিল্যান্ডের উদ্বোধনী জুটি। মার্টিন গাপটিল ও ডেভন কনওয়ে মিলেই ম্যাচ একরকম শেষ করে দেন। ১১.৫ ওভারেই ১০৬ রানের জুটি গড়েন দুজন।
প্রথমবার ওপেন করতে নেমে বাঁহাতি কনওয়ে ২৮ বলে করেন ৩৬। তাকে ফেরানোর পর উইলিয়ামসনকেও প্রথম বলে বিদায় করে দেন ফাস্ট বোলার রাইলি মেরেডিথ। তবে ম্যাচে উত্তেজনা ফেরেনি।
গাপটিল ফিফটি স্পর্শ করেন ৩৩ বলে। ৭ চার ও ৪ ছক্কায় ৭১ করে তিনি আউট হন দলকে জয়ের কাছে নিয়ে গিয়ে। অ্যাডাম জ্যাম্পাকে দুটি ছক্কায় গ্লেন ফিলিপস ম্যাচ শেষ করে দেন দ্রুতই। দারুণ এক ক্যামিও খেলে তিনি অপরাজিত থাকেন ১৬ বলে ৩৪ রান করে।
ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলে ম্যাচের সেরা গাপটিল। সিরিজে সর্বোচ্চ ১৩ উইকেট নিয়ে ম্যান অব দা সিরিজ লেগ স্পিনার সোধি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
অস্ট্রেলিয়া : ২০ ওভারে ১৪২/৮ (ফিলিপি ২, ফিঞ্চ ৩৬, ওয়েড ৪৪, ম্যাক্সওয়েল ১, স্টয়নিস ২৬, অ্যাগার ৬, মার্শ ১০, জাই রিচার্ডসন ৪, কেন রিচার্ডসন ২*; সাউদি ৪-০-৩৮-২, স্যান্টনার ৪-০-২১-০, বোল্ট ৪-০-২৬-২, চাপম্যান ২-০-৯-১, সোধি ৪-০-২৪-৩, ফিলিপস ২-০-২১-০)।
নিউ জিল্যান্ড : ১৫.৩ ওভারে ১৪৩/৩ (কনওয়ে ৩৬, গাপটিল ৭১, উইলিয়ামসন ০, ফিলিপস ৩৪*, চাপম্যান ১*; অ্যাগার ৪-০-২৬-০, মেরেডিথ ৪-০-৩৯-২, জাই রিচার্ডসন ৩-০-১৯-১, কেন রিচার্ডসন ২-০-১৬-০, জ্যাম্পা ২.৩-০-৪৩-০)।
ফল : নিউ জিল্যান্ড ৭ উইকেটে জয়ী।
সিরিজ : ৫ ম্যাচ সিরিজে নিউ জিল্যান্ড ৩-২ ব্যবধানে জয়ী।
ম্যান অব দা ম্যাচ : মার্টিন গাপটিল।
ম্যান অব দা সিরিজ : ইশ সোধি।