তানভীর দিপু:
বাংলাদেশ
ও বাঙালি জাতির স্বাধীনতার ও মুক্তির বার্তা ছিলো বঙ্গবন্ধুর সেই ভাষণে।
শুধু স্বাধীনতা যুদ্ধ নয়, বাংলাদেশকে জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার
সাহস সঞ্চিত হয়েছে এই কালজয়ী ভাষণ থেকে। বঙ্গবন্ধুর সামনে দাঁড়িয়ে অথবা পরে
যারা এই ভাষণ শুনেছে এবং মননে ধারণ করেছে তারা এবং তাদের প্রজন্মই আজ
বাঙালি জাতি গঠনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব্ েসোনার বাংলাদেশ গঠনে
কাজ করে যাচ্ছেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক
যুগান্তÍকারী ভাষণের স্মারক হিসেবে ৭ মার্চ দিনটি অবিস্মরণীয় হয়ে আছে। ১৯৭১
সালের ৭ মার্চে তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান)
বিশাল সমাবেশে দেয়া ওই ভাষণে বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতা যুদ্ধের
চুড়ান্ত প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানান। বিশাল জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু
বলেছিলেন-‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম
স্বাধীনতার সংগ্রাম’।
ঐতিহাসিক ৭ মার্চ দিবস উদযাপন উপলক্ষে গতকাল
সন্ধ্যায় কুমিল্লা টাউন হল মুক্তমঞ্চে জেলা প্রশাসন আয়োজিত আলোচনা সভায়
বক্তারা ‘বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ’ নিয়ে আলোচনায় এসব কথা বলেন।
কুমিল্লায়
নবাগত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায়
প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আ ক ম
বাহাউদ্দিন বাহার। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার মোঃ ফারুক
আহমেদ, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর আমির আলী চৌধুরী।
আলোচনা করেন নারীনেত্রী পাঁপড়ি বোস, জেলা পিপি জহিরুল হক সেলিম, লেখক ও
গবেষক শান্তিরঞ্জন ভৌমিক। স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার বিভাগ
কুমিল্লার উপ পরিচালক মোঃ শওকত ওসমান। আলোচনা সভা শেষে দিবসটি উপলক্ষে
বঙ্গবন্ধুর ভাষণ পরিবেশনা, রচনা ও অংকন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিক্ষার্থীদের
মাঝে পুরষ্কার বিতরণ করেন অতিথিরা। পরে এ উপলক্ষে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক
অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।
এর আগে গতকাল সকালে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে
মহান এই দিনটি উপলক্ষে নগর উদ্যানে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুলেল
শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদান করেন কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আ ক ম
বাহাউদ্দিন বাহার, সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য আঞ্জুম সুলতানা সীমা,
কুমিল্লার নবাগত জেলা প্রশাসক মোঃ কামরুল হাসান, বিদায়ী জেলা প্রশাসক মোঃ
আবুল ফজল মীর, জেলা পুলিশ সুপার মোঃ ফারুক আহমেদ, স্থানীয় সরকার
বিভাগ-কুমিল্লার উপ পরিচালক মোঃ শওকত ওসমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ
মাঈন উদ্দিন, উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম টুটুলসহ জেলা প্রশাসন ও
আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর উর্দ্ধতণ কর্মকর্তাগণ।
এছাড়া বিকেলে কুমিল্লা
টাউন হল বীরচন্দ্রনগর মিলনায়তনে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ ও বাংলাদেশ এলডিসি থেকে
উন্নয়ণশীল দেশে উত্তরণে জাতিসংঘের চূড়ান্ত সুপারিশ প্রাপ্তিতে আনন্দ উদযাপন
অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকায় উদযাপিত অনুষ্ঠানটি কুমিল্লায় সরাসরি উপভোগ করেন
উপস্থিত অতিথিরা। অনুষ্ঠানে প্রচারিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য
শুনেন অতিথি ও সাধারণ মানুষ। পরে অনুষ্ঠানটি উপলক্ষ্যে কেক কাটেন প্রধান
অতিথি কুমিল্লা সদর আসনের এমপি আলহাজ্ব আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার, আমন্ত্রিত
বিশেষ অতিথি অতিরিক্ত আইজিপি এসএম রুহুল আমিন, কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার
মোঃ ফারুক আহমেদসহ অন্যান্যরা।
এছাড়া কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের
পক্ষে সভাপতি এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার, সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক
রিফাতসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদান করেন। মহানগর যুবলীগের
আহ্বায় আবদুল্লাহ আল মাহমুদ সহিদ ও যুগ্ম আহ্বায়ক হাবিবুর আল আমিন সাদীর
নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা শ্রদ্ধাঞ্জলি দেন।
শ্রদ্ধাঞ্জলি শেষে জাতির পিতা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মার মাগফেরাত এবং দেশ ও জাতির মঙ্গল
কামনা করে দুআ ও মোনাজাত করা হয়।
এছাড়া কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগ
কার্যালয়ের সামনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুলের শ্রদ্ধা জানান সাধারণ
সম্পাদক আফানুল হক রিফাতের নেতৃত্বে মহানগর আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা।
মহানগর যুবলীগের আহ্বায় আবদুল্লাহ আল মাহমুদ সহিদের নেতৃত্বে যুবলীগ
নেতাকর্মীরা। পরে সম্মিলিত জাতীয় সঙ্গীত এবং আলোচনা সভায় অংশ নেন
আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, ছাত্রলীগসহ সহ অন্যান্য অংগসংঠনের
নেতা-কর্মীরা।
দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের ৭ মার্চ পালন: ঐতিহাসিক ৭
মার্চ দিবস উপলক্ষে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের উদ্যোগে গতকাল সকালে
নগরীর রামঘাটে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে
ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান সংগঠনের নেতা কর্মীরা। এসময় জেলা যুবলীগ, স্বেচ্ছা
সেবক লীগ, জেলা ছাত্রলীগ নেতা কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। দিবসটিকে সামনে রেখে
জেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন
সহ-সভাপতি জসিম উদ্দিন চৌধুরী, ইলিয়াছ মিয়া, যুগ্ম সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন,
সংাংগঠনিক সম্পাদক পার্থ সারথী দত্ত, আবদুল মমিন মজুমদার,এমএ করিম
মজুমদার, শ্রম সম্পাদক মানিক খন্দকার, আইন বিষয়ক সম্পাদক এড আবু তাহের,
কৃষকলীগ সভাপতি নির্মল পাল, স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি সাইফুদ্দিন পাপ্পু,
শ্রমিক লীগ আহ্বায়ক জাকির মৈশান, ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক লোকমান হোসেন
রুবেলসহ অন্যান্যরা।