সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকেই মিয়ানমারে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। নিয়মিতভাবেই জান্তাবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর চড়াও হচ্ছে সরকারি বাহিনী। বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা। গত রবিবার একদিনেই বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভে সরকারি বাহিনী গুলি চালালে ৫০ জনের মতো নিহত হয়। সোমবার নিহত হয় আরও ২০ জন। মঙ্গলবার অ্যাডভোকেসি গ্রুপ অ্যাসিসট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স (এএপিপি) জানিয়েছে, ১ ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশটিতে অন্তত ১৮৩ নিহত হয়েছে।
এএপিপি-র হিসাব অনুযায়ী, ১৫ মার্চ পর্যন্ত দেশটিতে ধরপাকড়ের শিকার হয়েছেন দুই হাজার ১৭৫ জন। তাদের কাউকে গ্রেফতার করা হয়েছে, কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে কিংবা কাউকে সাজা দেওয়া হয়েছে।
হতাহতদের বেশিরভাগই অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভকারী। তবে বিক্ষোভের সঙ্গে যুক্ত নয় এমন ব্যক্তিদেরও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে এখন পর্যন্ত সীমান্ত অতিক্রম করে প্রতিবেশী ভারতে পৌঁছেছে চার শতাধিক মানুষ। সোমবার ভারতের একজন পুলিশ কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন। আশ্রয়প্রার্থীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পুলিশ সদস্য ও দমকলকর্মীও রয়েছেন বলে জানা গেছে। ভারতে পালিয়ে যাওয়া পুলিশ সদস্যরা জানিয়েছেন, জান্তা সরকার প্রতিবাদকারীদের ওপর গুলি চালানোর যে আদেশ দিয়েছে, সেটি মানতে অস্বীকার করায় তারা নির্যাতনের স্বীকার হওয়ার আশঙ্কা করছেন। আর এমন আশঙ্কা থেকে তারা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।
ভারতের মিজোরাম রাজ্যের একজন পুলিশ কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, শুধু গত শুক্রবারই মিয়ানমার থেকে ১১৬ জনের মতো সীমান্ত অতিক্রম করেছেন। তবে বিষয়টির সংবেদনশীলতা বিবেচনায় ওই কর্মকর্তা নাম প্রকাশে রাজি হননি। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে এসব অনুপ্রবেশ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। তবে পাহাড়ি এলাকায় অনুপ্রবেশ বন্ধে নজরদারি খুব সহজ নয়। এছাড়া প্রত্যন্ত সীমান্তের উভয় পাশে মানুষের মধ্যে ঘনিষ্ঠ জাতিগত ও সাংস্কৃতিকভাবেও সম্পর্ক রয়েছে। সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি, রয়টার্স।