অনলাইনে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে ২০১৩ সালের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৬৮ ধারার আলোকে ঢাকায় স্থাপন করা হয়েছিল একটি সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনাল। এরপর থেকে একই আইনের আলোকে দেশের অন্যান্য সাত বিভাগেও সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনাল স্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু করে সরকার। কিন্তু বেশ কয়েকবছর পেরিয়ে গেলেও ঢাকা ছাড়া অন্য কোনো বিভাগীয় শহরে আলোর মুখ দেখেনি এই প্রকল্প।
এদিকে চট্টগ্রামেও দীর্ঘদিন ধরে এই ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠায় আন্দোলন করে আসছিলেন জেলার আইনজীবীসহ এই অপরাধের শিকার বিচারপ্রার্থীরা। ২০২০ সাল থেকে জেলা আইনজীবী সমিতি আইন মন্ত্রণালয়ে জোর তদবির শুরু করে সাইবার ট্রাইব্যুনাল স্থাপনে।
অবশেষে মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় জারিকৃত এক প্রজ্ঞাপনে দেখা যায়, ঝালকাঠির অতিরিক্ত জেলা জজ এস. কে. এম. তোফায়েল হাসানকে চট্টগ্রাম সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালের বিচারক হিসেবে পদায়ন করা হয়। এর মাধ্যমে চট্টগ্রাম বিভাগের বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত সাইবার ট্রাইব্যুনাল গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানা যায়।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ. এইচ. এম জিয়াউদ্দিন বলেন, ‘ইতোপূর্বে চট্টগ্রামে কোনো সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনাল ছিল না। সাইবার ক্রাইম সংক্রান্ত মামলা দায়ের করতে ঢাকায় যেতে হতো। যা বিচারপ্রার্থী জনগণের জন্য সময় ও ব্যয় সাপেক্ষ এবং হয়রানিমূলক ছিল। এজন্য আমরা চট্টগ্রামে দীর্ঘদিন ধরে সাইবার ট্রাইব্যুনাল স্থাপনের দাবি জানিয়ে আসছিলাম। আমাদের দাবির প্রেক্ষিতে আজ (মঙ্গলবার) চট্টগ্রামে সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনাল বিচারক পদায়নের মাধ্যমে ট্রাইব্যুনাল স্থাপনের কার্যক্রম শুরু হলো। এজন্য আমরা প্রধান বিচারপতি, আইনমন্ত্রী এবং সংশ্লিষ্টদের প্রতি আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।’
চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য ও অ্যাডভোকেট এস. এম. দিদার উদ্দিন বলেন, ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের অধীনে কোনো অপরাধে আসামিরা প্রভাবশালী হলে থানায় অনেকসময় মামলা নিতে চায় না। ফলে ভুক্তভোগীদের বাধ্য হয়ে ঢাকায় গিয়ে মামলা করতে হতো। কিন্তু এবার চট্টগ্রামে এই ট্রাইব্যুনাল স্থাপনের মাধ্যমে বিচারপ্রার্থীদের হয়রানি অনেকাংশে কমবে। একইসঙ্গে এসব অপরাধের বিচার দ্রুত সম্পন্ন হবে।’