দেশে
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধির ধারায় ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যায় নতুন
রেকর্ড হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, রোববার সকাল পর্যন্ত ২৪
ঘণ্টায় দেশে ৭ হাজার ৮৭ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে;
মৃত্যু হয়েছে আরও ৫৩ জনের।
নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত
রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৬ লাখ ৩৭ হাজার ৩৬৪ জনে। আর তাদের মধ্যে মোট ৯ হাজার
২৬৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এক দিনে শনাক্ত রোগীর এই সংখ্যা দেশে মহামারী
শুরুর পর থেকে সর্বোচ্চ। বাংলাদেশে গত বছর ৮ মার্চ করোনাভাইরাসের প্রথম
সংক্রমণ ধরা পড়ার এক বছর পর গত সপ্তাহে প্রথমবারের মত এক দিনে পাঁচ হাজারের
বেশি নতুন রোগী শনাক্তের খবর আসে। তার মধ্য দিয়ে দেশে মোট শনাক্ত রোগীর
সংখ্যা ২৯ মার্চ ছয় লাখ ছাড়িয়ে যায়।
তিন দিনের মাথায় গত বৃহস্পতিবার
দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৬ হাজার ছাড়িয়ে যায়। মাঝে শনিবার দৈনিক শনক্তি
রোগী ৬ হাজারের নিচে থাকলেও রোববার তা নতুন রেকর্ডে পৌঁছাল।
প্রথম রোগী
শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে করোনাভাইরাসে প্রথম মৃত্যুর
খবর নিশ্চিত করেছিল সরকার। এ বছর ৩১ মার্চ তা নয় হাজার ছাড়িয়ে যায়। গতবছর
৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ
মৃত্যু।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ২
হাজার ৭০৭ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন গত এক দিনে। তাতে এ পর্যন্ত সুস্থ
রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে ৫ লাখ ৫২ হাজার ৪৮২ জন হয়েছে।
বিশ্বে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে ১৩ কোটি ৮ লাখ পেরিয়েছে, মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২৮ লাখ ৪৭ হাজার।
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে ৩৪তম স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ৪০তম অবস্থানে।
স্বাস্থ্য
অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে মোট ২২৭টি ল্যাবে ৩০ হাজার
৭২৪টি নমুনা পরীা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীা হয়েছে ৪৭ লাখ ৮৩ হাজার ৩৮৫টি
নমুনা।
২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীার বিবেচনায় শনাক্তের হার ২৩ দশমিক ০৭ শতাংশ,
এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৩২ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার
হার ৮৬ দশমিক ৬৮ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
সরকারি ব্যবস্থাপনায় এ পর্যন্ত নমুনা পরীা করা হয়েছে ৩৬ লাখ ৪ হাজার ৫২০টি। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হয়েছে ১১ লাখ ৭৮ হাজার ৮৬৫টি।
গত
এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ৪৫ জন পুরুষ আর নারী ৮ জন। তাদের
মধ্যে ১ জন বাড়িতে মারা গেছেন, বাকীদের মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে।
তাদের
মধ্যে ৩৪ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ১১ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছর, ৫ জনের
বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ২ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছর এবং ১ জনের বয়স ১১
থেকে ২০ বছরের মধ্যে ছিলো।
মৃতদের মধ্যে ৩৭ জন ঢাকা বিভাগের, ৯ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ১ জন রাজশাহী বিভাগের, ৩ জন করে রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।
দেশে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ৯ হাজার ২১৩ জনের মধ্যে ৬ হাজার ৯৭০ জনই পুরুষ এবং ২ হাজার ২৯৬ জন নারী।
তাদের
মধ্যে ৫ হাজার ১৫৬ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এছাড়াও ২ হাজার ২৮৬ জনের
বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ১ হাজার ৪৩ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে,
৪৬১ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ১৮০ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের
মধ্যে, ৬৮ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং ৩৮ জনের বয়স ছিল ১০ বছরের
কম।
এর মধ্যে ৫ হাজার ৩০৪ জন ঢাকা বিভাগের, ১ হাজার ৬৭৩ জন
চট্টগ্রাম বিভাগের, ৫০৯ জন রাজশাহী বিভাগের, ৫৯২ জন খুলনা বিভাগের, ২৭৬ জন
বরিশাল বিভাগের, ৩২৭ জন সিলেট বিভাগের, ৩৮০ জন রংপুর বিভাগের এবং ২০৫ জন
ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।