Published : Friday, 16 April, 2021 at 12:00 AM, Update: 16.04.2021 12:58:26 AM

তানভীর দিপু:
সর্বাত্মক লকডাউনের প্রথম দিনে ১৪২৮ বঙ্গাব্দের পহেলা বৈশাখ এবং রমজানের প্রথম দিন। তাই কুমিল্লাবাসীর মধ্যে দেখা গেছে লকডাউন অমান্য করে বাজারে গিয়ে নববর্ষ আর রমজানের বাজার করার উচ্ছাস। বুধবার পহেলা বৈশাখের মাছ কিনতে নগরীর রাজগঞ্জ বাজারে মাছ কিনতে গেছেন হাজার হাজার মানুষ। তাদের কেউই মানছেন না করোনা স্বাস্থ্যবিধি। কারো মুখে নেই মাস্ক, আর সামাজিক নিরাপত্তার যে ৩ফুট দূরত্ব মানার কথা তা দেখা যায়নি একেবারেই। বুধবার রাজগঞ্জ মাছ বাজারে গিয়ে দেখা যায় সড়কের দুই পাশে মাছের পসরা সাজিয়ে বসেছেন শতাধিক ব্যবসায়ি। প্রতিটি দোকানে ভিড় করে মাছ কিনছেন সাধারণ মানুষ। রাজগঞ্জ থানা রোডের মাথা থেকে শুরু করে রাজগঞ্জ মুরগিবাজার বাজার গেইট পর্যন্ত প্রায় আধা কিলো রাস্তায় গা ঘেষাঘেষি করে মাছ কিনছেন হাজারো মানুষ। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে যে লকডাউন চলছে তা বুঝার কোন উপায় নেই বাজারের চিত্র দেখে।
কথা হয় মুরাদপুর এলাকার রুহুল আমিনের সাথে। বাজার বসেছে খবর শুনে তিনি এসেছেন নববর্ষের মাছ কিনতে। রুহুল আমিন জানান, জানি করোনা ভাইরাস আছে। তারপরও নববর্ষের দিনে বড় মাছ কেনা বছরের পর বছরের ঐতিহ্য, তাই চলে আসছি।
রাজগঞ্জ বাজারে মাছ নিয়ে আসা পদুয়ার বাজার এলাকার মাছ ব্যবসায়ি জানান, করোনায় ভয়ে বসে থাকলে কি হবে। মানুষ তো বাজারে আসছে, আমরা বিক্রি করতে আসলেই দোষ।
নগরীর মোগলটুলী এলাকার বাসিন্দা ফয়সাল আহমেদ জানান, বাইরে থেকে দেখে মনে হচ্ছে সিটির বেশির ভাগ মানুষই লকডাউন মানছে। অথচ ফেসবুকে পহেলা বৈশাখে রাজগঞ্জে মাছ বাজারের চিত্র দেখেই অবাক।এই লোকগুলোই তো ভাইরাস বহন করে এখানে সেখানে নিয়ে যাবে।
একই প্রতিক্রিয়া সুজানগরের দেলোয়ার হোসেনের। তিনি জানান, অনেককেই পুলিশ-ম্যাজিষ্ট্রেট আটকাচ্ছে। কিন্তু মানুষ যদি সচেতন না হয় প্রশাসন কি করবে। তবে যেখানে প্রশাসন কঠোর, সেখানে অনেকইে মানছে লকডাউন।
সর্বাত্মক লকডাউনের প্রথম দুই দিনে কুমিল্লায় দেখা গেছে ভিন্ন ভিন্ন চিত্র। বেশির ভাগ মানুষই করোনা স্বাস্থ্যবিধি ও সরকারি আইন মেনে ঘরে থাকলেও বাংলা বছরের প্রথম দিনর পহেলা বৈশাখ হওয়ায় অনেকেই স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করে গিয়েছেন মাছ ও সবজির বাজারে। ভিড় করে নববর্ষের বাজার ও কেনাকাটা করেছেন লকডাউন না মেনেই। বাজার এলাকা বাদে প্রথম দিনে বুধবার সকাল থেকে কুমিল্লা নগরীর বেশির ভাগ বিপনী বিতান ও দোকানপাট ছিলো বন্ধ। রাস্তায় যানচলাচল ছিলো খুবই সীমিত। জরুরী কাজে যারা বাইরে বের হয়েছেন তাদেরকেই শুধু রিকশা-মোটরসাইকেল ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছে প্রশাসন। তবে দ্বিতীয় দিন বৃহষ্পতিবার থেকেই লকডাউন মানার হারে অবনতি দেখা দেয়। অনেককেই দেখা যায় অবাধে রাস্তায় ঘুরোঘুরি করতে।
কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নগরীর প্রবেশ মুখ গুলোতে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্বে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। কুমিল্লা শহরে প্রবেশ এবং বের হতে জরুরী কারণ জানিয়ে অনুমতি নেয়া লাগছে প্রশাসনের। নতুবা অনেকেই দিয়েছেন লকডাউন না মানার জরিমানা। এছাড়া নগরীর ভেতরে রাজগঞ্জ, পুলিশ লাইন্স, চকবাজার, শাসনগাছা, চকবাজার এলাকায় অভিযানে ছিলো ৭টি ভ্রাম্যমান আদালত। জেলা পুলিশের টহল দলও লকডাউন মানাতে কাজ করছেন কুমিল্লার শহরের ২১টি পয়েন্টে। যারাই লকডাউন অমান্য করে বাইরে বের হচ্ছেন তাদেরকে আনা হচ্ছে শাস্তির আওতায়।