
গত
এক দিনে ৯৪ জনের মৃত্যু হল করোনাভাইরাসে, যা নিয়ে দেশে মোট মৃতের সংখ্যা
১০ হাজারের বিষাদময় মাইলফলক ছাড়াল। বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গত ২৪
ঘণ্টায় যে ৯৪ জন কোভিড-১৯ রোগীর মৃত্যুর খবর দেয়, তাদের নিয়ে মৃতের সংখ্যা
দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৮১ জন। সংক্রমণের বিস্তার রোধে কঠোর লকডাউনের মধ্যে
দিনে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কমেছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় ৪ হাজার ১৯২ রোগী শনাক্তের খবর দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তাতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৭ হাজার ৩৬২ জন।
একদিনে
৫ হাজার ৯১৫ জনের সেরে ওঠার তথ্যও জানানো হয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের
বিজ্ঞপ্তিতে। সব মিলিয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৫ লাখ ৯৭ হাজার ২১৪ জন।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর খবর আসে।
বছরের শেষ দিকে মৃত্যুর সংখ্যা কমে এলেও সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর পর এখন মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে অনেক।
গত ৩১ মার্চ ৫২ জনের মৃত্যুর পর থেকে দৈনিক মৃত্যু কখনোই ৫০ এর নিচে নামেনি। এর মধ্যে বুধবার একদিনে সর্বাধিক ৯৬ জনের মৃত্যু ঘটে।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর পর গত ১৫ দিনেই ১ হাজার কোভিড-১৯ রোগীর মৃত্যু ঘটেছে।
প্রথম
মৃত্যুর আড়াই মাস পর গত বছরের ১০ জুন মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ছাড়িয়েছিল।
এরপর ৫ জুলাই ২ হাজার, ২৮ জুলাই ৩ হাজার, ২৫ অগাস্ট ৪ হাজার, ২২ সেপ্টেম্বর
৫ হাজার ছাড়ায় মৃতের সংখ্যা।
এরপর কমে আসে মৃত্যুর বাড়ার গতি। ৪
নভেম্বর ৬ হাজার, ১২ ডিসেম্বর ৭ হাজারের ঘর ছাড়ায় মৃত্যুর সংখ্যা। এ বছরের
২৩ জানুয়ারি ৮ হাজার এবং ৩১ মার্চ মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৯ হাজার ছাড়িয়েছিল।
সংক্রমণের
দ্বিতীয় ঢেউয়ে গত কয়েক দিন ধরেই দিনে ৬ হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হয়ে
আসছিল। এর মধ্যে গত ৭ এপ্রিল রেকর্ড ৭ হাজার ৬২৬ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়।
জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে ৩৩তম স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ৩৮তম অবস্থানে।
গত
২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীা বিবেচনায় শনাক্ত রোগীর হার ২০ দশমিক ৮৯ শতাংশ। এই
পর্যন্ত শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৮৩। আর শনাক্ত রোগীদের মৃত্যুর
হার দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৪৩ শতাংশে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪
ঘণ্টায় সারা দেশে ২৫৭টি ল্যাবে ১৯ হাজার ৯৫৯টি নমুনা পরীা করা হয়েছে। এ
পর্যন্ত পরীা হয়েছে ৫১ লাখ ১৫ হাজার ৫৭২টি নমুনা।
গত এক দিনে যারা মারা
গেছেন, তাদের মধ্যে ৬৪ জন পুরুষ আর নারী ৩০ জন। তাদের মধ্যে ৪ জন বাড়িতে
মারা গেছেন, বাকিদের মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে।
মৃতদের মধ্যে ৫২ জনের বয়স
ছিল ৬০ বছরের বেশি, ২৫ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছর, ১৪ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০
বছর এবং ৩ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ছিল।
মৃতদের মধ্যে ৬৯ জন
ঢাকা বিভাগের, ১২ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৬ জন রাজশাহী বিভাগের, ৩ খুলনা
বিভাগের, ২ জন বরিশাল বিভাগের, ১ জন করে সিলেট ও রংপুর বিভাগের বাসিন্দা
ছিলেন।
দেশে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ১০ হাজার ৮১ জনের মধ্যে ৭ হাজার ৪৯৯ জনই পুরুষ এবং ২ হাজার ৫৮২ জন নারী।