ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
ভারতীয় ধরন প্রবেশ রোধে চলাচল বন্ধ রাখার বিকল্প নেই
Published : Wednesday, 28 April, 2021 at 12:00 AM
করোনা মহামারিতে প্রতিবেশী দেশ ভারতে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এক দিনে আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে তিন লাখ ছাড়িয়েছে এবং মৃত্যু হচ্ছে প্রায় তিন হাজার মানুষের। আইসিইউ তো দূরের কথা, হাসপাতালে একটি সাধারণ শয্যাও পাচ্ছে না বহু রোগী। অক্সিজেনের ঘাটতি চরমে উঠেছে। বিজ্ঞানীরা দেশটিতে সংক্রমণের এমন তীব্রতার জন্য দায়ী করছেন ডাবল ও ট্রিপল মিউট্যান্ট করোনাভাইরাসকে। ভারতে তৈরি হওয়া এই বিশেষ ভেরিয়েন্ট বা ধরনের সংক্রমণমতা অনেক বেশি এবং রোগী খুব দ্রুত মারা যায়। বাংলাদেশে এখনো এই ধরনটির সন্ধান পাওয়া যায়নি। কিন্তু ভারতীয় এই ধরনটি যাতে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে সে জন্য ভারতের সঙ্গে থাকা সব স্থলবন্দর দিয়ে মানুষের যাতায়াত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকেও জীবাণুমুক্ত করে প্রবেশ করানোর কথা বলা হয়েছে। আকাশপথে চলাচল ১৪ এপ্রিল থেকেই বন্ধ রয়েছে।
বাংলাদেশেও মহামারি গত ফেব্রুয়ারির তুলনায় অনেক বেড়েছে। প্রথম দফা করোনা সংক্রমণে দৈনিক মৃত্যুর সর্বোচ্চ সংখ্যা ছিল ৬৪, আর দ্বিতীয় দফায় এই সংখ্যা হয়েছে ১১২। হাসপাতালগুলোতে রোগীর ঠাঁই হচ্ছিল না। আইসিইউ বেড পাওয়াই যাচ্ছিল না। লকডাউন ও কঠোর বিধি-নিষেধের কারণে অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। দৈনিক শনাক্তের হার ২৩ থেকে কমে ১৩ হয়েছে। কিন্তু আবার যে ঢিলেঢালা অবস্থা দেখা যাচ্ছে, তাতে আশঙ্কা করা হচ্ছে আবারও শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যেতে পারে। লকডাউন বাস্তবে নেই বললেই চলে। দোকানপাট, শপিং মল, মার্কেট সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা রাখা হচ্ছে। বাস ছাড়া রাস্তায় সব ধরনের যানবাহনই প্রচুর পরিমাণে চলছে। লকডাউনের আগে আগে লাখ লাখ মানুষ ঢাকা ছেড়েছিল, তারা আবার দলে দলে ফিরে আসছে। বেশির ভাগ মানুষই স্বাস্থ্যবিধি মানে না। এমনকি মাস্কও পরে না। এ অবস্থায় সংক্রমণ আবার ছড়িয়ে পড়ার যথেষ্ট আশঙ্কা রয়েছে। তার ওপর যদি ট্রিপল মিউট্যান্ট ভারতীয় ধরনটি ব্যাপকভাবে প্রবেশ করে, তাহলে পরিণতি কী হবে, ভাবতেও কষ্ট হয়। তাই যেকোনো মূল্যেই হোক, ভারতীয় ধরনের প্রবেশ আটকানোর চেষ্টা করতেই হবে।
এমন পরিস্থিতিতে সবচেয়ে জরুরি ছিল ব্যাপক হারে টিকা প্রদান। কিন্তু টিকার অভাবে প্রথম ডোজ টিকা প্রদান সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে। এরই মধ্যে প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন প্রায় সাড়ে ৫৮ লাখ মানুষ। দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেওয়ার জন্য টিকার ঘাটতি রয়েছে প্রায় ১৪ লাখ ডোজের। অথচ ১২ সপ্তাহের মধ্যে একই টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেওয়াটা জরুরি। ভারতের কাছ থেকে অন্তত দ্বিতীয় ডোজের অবশিষ্ট টিকাগুলো আনা অত্যন্ত জরুরি। পাশাপাশি অন্যান্য উৎস থেকে টিকা সংগ্রহের প্রচেষ্টা আরো দ্রুততর করতে হবে। মনে রাখতে হবে, মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাব যে পর্যায়ে তাতে টিকাই এখন পর্যন্ত করোনা থেকে রা পাওয়ার সবচেয়ে কার্যকর উপায়।