করোনাভাইরাস মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ে বেসামাল ভারতে ফের দৈনিক শনাক্ত ও মৃত্যুর রেকর্ড হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগের ২৪ ঘণ্টায় চার লাখ ১২ হাজার ২৬২ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে, একই সময় ৩৯৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ভারতে দৈনিক আক্রান্ত ও মৃত্যুর হিসাবে এ পর্যন্ত এ দুটি সংখ্যাই সর্বোচ্চ। এর আগে ১ মে প্রথমবারের মতো দেশটিতে দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা চার লাখ ছাড়িয়েছিল। আর একদিন আগে বুধবার ৩৭৮০ জনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে নতুন রেকর্ড হয়েছিল, কিন্তু পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায়ই ওই সংখ্যা ছাপিয়ে দৈনিক মৃত্যু নতুন উচ্চতায় পৌঁছল।
নতুন আক্রান্তদের নিয়ে ভারতের মোট করোনাভাইরাস রোগীর সংখ্যা দুই কোটি ১০ লাখ ছাড়িয়েছে আর কোভিড-১৯ এ মোট মৃতের সংখ্যা দুই লাখ ৩০ হাজার ১৬৮ জনে দাঁড়িয়েছে বলে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যে দেখা গেছে।
সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে মহা সংকটে ফেলে দিয়ে দেশটির প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়েছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।
বুধবার এক পর্যালোচনা বৈঠকের পর ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, আসাম, পশ্চিমবঙ্গ, উড়িষ্যা, বিহার ও ঝাড়খণ্ডে দৈনিক শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, এতে মহামারীর ‘পূর্ব দিকে বিস্তৃত’ হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
এদিন সবচেয়ে বেশি রোগী পাওয়া গেছে মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, কেরালা ও উত্তর প্রদেশে।
গত সপ্তাহে বিশ্বব্যাপী সংক্রমণের ৪৬ শতাংশ ও মৃত্যুর ২৫ শতাংশ ভারতে ঘটেছে বলে বুধবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে।
চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ভারতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা সরকারি হিসাবের পাঁচ থেকে ১০ গুণ বেশি।
দেশটির অন্যান্য শহরের তুলনায় রাজধানী দিল্লির কোভিড-১৯ সংকট এখন সবচেয়ে মারাত্মক রূপ নিয়েছে। প্রয়োজনীয় শয্যা সংকটের কারণে হাসপাতালগুলো চাপ অনুযায়ী নতুন রোগী ভর্তি নিতে পারছে না, তারমধ্যে তীব্র অক্সিজেন সংকটে ইতোমধ্যেই ভর্তি থাকা বহু রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জনবহুল দেশটির প্রায় ৭০ শতাংশ লোক গ্রামে বাস করে। মহামারী এখন সেখানেও বিস্তৃত হচ্ছে। গ্রামাঞ্চলে জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা অপ্রতুল হওয়ায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বিশ্বে মহামারীতে আক্রান্তের সংখ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের পর দ্বিতীয় স্থানে আর মৃত্যুতে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিলের পর তৃতীয় স্থানে আছে ভারত।