ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
 দেবীদ্বারে চুরির অভিযোগে এক কিশোরকে পিটিয়ে আহত করল সালিসে
Published : Sunday, 9 May, 2021 at 12:00 AM
এ,বি,এম আতিকুর রহমান বাশার ঃ
দেবীদ্বারে চুরির অভিযোগে ঘুমন্ত কিশোরকে বাড়ি থেকে তুলে এনে মধ্যযোগীয় কায়দায় নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ঘটনাটি ঘটে উপজেলার সুরতানপুর ইউনিয়নের বক্রিকান্দি গ্রামের সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন জমির উদ্দিন মূন্সী বাড়িতে। ওই বাড়ির মো. ইউনুছ মিয়ার পুত্র হাফেজিয়া মাদ্রাসার ছাত্র মো. ইসমাইল হোসেন(১৭) চুরি অভিযোগে শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় ঘুম থেকে তুলে এনে বেধরক পিটিয়ে মারাত্মক আহত করে সালিসদারগন। পরে তাকে চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তিকরা হয়।
স্থানীয়রা জানান, গ্রামে সীদকাটা চুরি মোবাইল চুরি বেড়ে গেছে। কিন্তু যারা এসব করছে তারা সব সময়ই আড়ালে থেকে গেছে। মাছ চাষি মফিজুল ইসলাম’র ৩টি মাছের ক্যারট চুরির ঘটনায় পুলিশ সদস্য (অবঃ) কবির আহমেদ’র পুত্র হৃদয় হাসান(১৬)কে শুক্রবার এক সালিসে ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদে সে ক্যারট চুরির কথা স্বীকার করায় তাকে মারধর করার এক পর্যায়ে সে আল-আমিনের নাম বেেল। সালিসের ১৪/১৫জন কিশোর-যুবক আল-আমিনকে ধরে এনে অমানবিক নির্যাতনে সে অচেতন হয়ে পড়ে।   
এব্যাপারে বিশিষ্ট সালিসদার মো. আবু কাউছার বলেন, এলাকায় মোবাইল চুরি ও সিদেল চুরি বেড়ে গেছে। এসব চুরির ঘটনায় একটি কিশোরগ্যাংকে জড়িত সন্দেহ করলেও হাতেনাতে ধরা সম্ভব হয়নি। তবে আল আমিনের উপর যে নির্যাতন হয়েছে, তা খুবই দুঃখজনক। তার মা এবং বোন সালিসদারদের পায়ে ধরেও অমানবিক নির্যাতনের হাত থেকে আল আমিনকে রক্ষা করতে পারেনি।
আল-আমিনের মা’ রুবী বেগম বলেন, আমার ছেলে অপরাধ করলে তার বিচার হবে, থানা পুলিশের নিকট সোপার্দ করবে, তা না করে আমার ছেলেকে যেভাবে পিটিয়ে আধমরা করেছে তা কোন মানুষ করতে পারে না।
আল-আমিনের বোন আমেনা বলেন, আমি এবং আমার মা’ তাদের হাতে পায়ে ধরেও কারোর মন গলাতে পারিনি। একটি ছেলে আল- আমিনের নাম বলে দৌড়ে পালিয়ে গেল, কোন প্রমান ছাড়াই সে অপরাধী হয়ে গেল ? আর ওই কথায় পলাশ, জুয়েল, শরীফ, এনামুর,  ফারুক, শরীফ, কাউছার সহ ১৪/১৫ জন এসে আমার ছেলেকে ঘুম থেকে তুলে এনে মারধর করবে এটা কেমন বিচার ? আমার ভাই এখন হাসপাতালে মৃত্যুযন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা নিয়ে যেতে বলছেন।
গ্রাম্য চিকিৎসক নূরে আলম বলেন, চুরির অপরাধে হৃদয়(১৬) ও আল-আমিন(১৭) কে মারধর করা হয়েছে। এ ঘটনাটি আর যাতে না বাড়ে তার জন্য আমরা সালিসে সমাধানের চেষ্টা করছি।
স্থানীয় ইউপি মেম্বার সামসুল হক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এলাকায় চুরি বেড়ে গেছে। সে কারনে ক্ষব্ধ লোকজন বিষয়টা তদন্ত না করেই ছেলেটিকে মারধর করেছে। এ বিষয়ে আমরা সালিসে সমাধানের চেষ্টা করব।