ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
করোনাকালের ভিন্নরকম ঈদ
Published : Wednesday, 12 May, 2021 at 12:00 AM, Update: 12.05.2021 1:22:06 AM
করোনাকালের ভিন্নরকম ঈদনিজস্ব প্রতিবেদক:
ঈদ মানে আনন্দ। ঈদ মানে খুশি। ঈদ মানে স্বজন আর বন্ধুদের মিলনমেলা, হৈ-হুল্লোড়, ঘুরে বেড়ানো। ঈদ মানে কোলাকুলি, করমর্দন। ঈদ মানে প্রতিবেশীদের নিয়ে খাওয়াদাওয়া, আড্ডা দেওয়া। নাড়ির টানে গ্রামে গিয়ে মা-বাবা, ভাই-বোনদের সঙ্গে একত্র হওয়া। নতুন জামাকাপড় পরা। কিন্তু বৈশ্বিক মহামারী করোনার কারণে গেলোবারের মতো এবারও সেই অনাবিল আনন্দের আবহ নেই। এমন অবস্থায় দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদুল ফিতর। আজ বুধবার জাতীয় কমিটির সভা থেকে চাঁদ দেখার সংবাদ ঘোষণা হলে আগামীকাল বৃহস্পতিবার পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। আজ চাঁদ দেখা না গেলে ঈদ হবে পরদিন শুক্রবার। এবারের মতো গত বছরও বিধিনিষিধের মধ্য দিয়েই উদযাপিত হয়েছে পবিত্র ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আযহা। তবে গত বছরের চেয়ে এ বছর জীবনযাত্রা অনেকটাই স্বাভাবিক। লকডাউন চললেও স্বাস্থ্য বিধি মেনে খোলা রাখা হয়েছে দোকানপাট, শপিং মল। যার যার সামর্থ অনুযায়ী কেনাকাটা করছেন মানুষছেন।  
ঈদের নামাজ আমাদের দেশে একটি বড় উৎসব। ছেলে, বুড়ো, পাড়া-প্রতিবেশী সবাই দল বেঁধে ঈদের নামাজ পড়তে ঈদগাহে যায়। নামাজ শেষে একে অপরের সঙ্গে কুশল বিনিময়, করমর্দন, কোলাকুলি করে। কিন্তু করোনার স্বাস্থ্যবিধি এবারও সেটা হতে দিচ্ছে না। উন্মুক্ত স্থানে জনসমাগম করা যাবে না। ঈদের নামাজ পড়তে হবে মসজিদে। মসজিদে মসজিদে সময় ভাগ করে একাধিক ঈদের জামাত অনুষ্ঠানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই নামাজ আদায় করতে হবে।
ঈদের দিনে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু, প্রতিবেশীর বাড়িতে যাতায়াত ও খাওয়াদাওয়ার সেই রেওয়াজও পালিত হবে না এবার। নতুন জামাকাপড় কেনেনি অনেকেই। ঈদের মেলা নেই কোথাও। প্রতিবছর শাড়ি মেলা, পাঞ্জাবি মেলাসহ বিভিন্ন প্রকার মেলা বসে ঈদ ঘিরে। ছেলে-মেয়ে নিয়ে অনেকেই যায় বিনোদনকেন্দ্রে। গত বছরের মতোও এবার সেটা বন্ধ। প্রকৃতির সৌন্দর্যের সঙ্গে নিজেকে মেলে ধরতে অনেকে ছুটে যায় পর্যটনকেন্দ্রে। কিন্তু এবার দেশের পর্যটনকেন্দ্রগুলোও বন্ধ রয়েছে। সেখানে যাওয়ারও উপায় নেই।
দীর্ঘ মাসজুড়ে সিয়াম সাধনা ও কঠোর ইবাদত-আরাধনার পর বহুল প্রতীতি ঈদুল ফিতর দোরগোড়ায়। রোজার মাস সাঙ্গ হলো। এলো ঈদুল ফিতর তথা সর্বজনীন ঈদোৎসব। আলোয় ভেসে যাওয়া এই দিনগুলোতেও যেন বিষণœতার মেঘ ঘিরে আছে আমাদের। ভয়ংকর কালো এই করুণ করোনা কাল। বাতাসে ভেসে আসা অ্যাম্বুলেন্সের শব্দ যেন বয়ে নিয়ে আসে আগরবাতির গন্ধ। সারা পৃথিবী যখন মানুষের জন্য মৃত্যু অববাহিকা, সেই সময়েই এলো ঈদ। মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। হাসি, আনন্দ আর উদযাপনের বার্তা নিয়ে আসে ঈদ। কিন্তু এবার? রোগশোক আর মৃত্যুর রঙে ধূসর এই পৃথিবীতে খুশির ঈদের যেন কোন রঙ নেই। বর্তমানে সারাবিশ্বসহ আমাদের দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি জনিত কারণে মুসল্লিদের জীবন ঝুঁকি বিবেচনা করে এ বছর ঈদগাহ বা খোলা জায়গার পরিবর্তে ঈদের নামাজের জামাত নিকটস্থ মসজিদে আদায় করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। তাছাড়া সর্বসাধারণের সুরা নিশ্চিতকল্পে, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্থানীয় প্রশাসন এবং আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনীর নির্দেশনা অবশ্যই প্রতিপালন করতে হবে।