বর এলেন হাতির পিঠে
Published : Tuesday, 18 May, 2021 at 12:00 AM
কলেজে প্রথম পরিচয়েই বন্ধুত্ব, ভালো লাগা, এরপর প্রেম নিবেদন। তারপর থেকে শুরু প্রেমের জীবন। নাটোরের শহীদ শামসুজ্জোহা অনার্স কলেজে পড়া অবস্থায় সাগর ও বীথির জীবনের গল্প ঠিক এমনই। কলেজ জীবনের প্রেম স্মরণীয় করে রাখতেই প্রেমিক-প্রেমিকা সিদ্ধান্ত নেন হাতিতে চড়ে বিয়ে করার।
রোববার (১৬ মে) আট কিলোমিটার হাতিতে চড়ে বিয়ে করতে বর আসেন সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার মাকড়শোন গ্রামে। এলাকার উৎসুক জনতা একনজর বর-কনেকে দেখতে বিয়ে বাড়িতে ভিড় জমায়।
বর সাগর ম-ল (২৪) তাড়াশ উপজেলার ধামাইচ গ্রামের জুব্বার ম-লের ছেলে ও কনে তালজিলা আকতার বীথি (২৪) মাকড়শোন গ্রামের তোজাম্মেল প্রামাণিকের মেয়ে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পার্শ্ববর্তী নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার শহীদ শামসুজ্জোহা অনার্স কলেজের ইসলামের ইতিহাসের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন সাগর ও বীথি। কলেজে পড়া অবস্থায় তাদের প্রথম পরিচয়েই বন্ধুত্ব। এরপর দুজনের মধ্যে ভাব বিনিময়ের মধ্যদিয়ে প্রেম নিবেদন। এরপরই তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। আর তাদের দীর্ঘদিনের প্রেমকে স্মরণীয় করে রাখতে তারা সিদ্ধান্ত নেন হাতিতে চড়ে বিয়ে করার। পারিবারিকভাবেই সিদ্ধান্ত হয় তাদের বিয়ের তারিখ। বিয়ের দিন রোববার বর সাগর ম-ল দুপুর ২টায় তাড়াশ উপজেলার ধামাইচ এলাকা থেকে হাতিতে চড়ে বিয়ে করতে আসেন আট কিলোমিটার দূরে মাকড়শোন গ্রামে। দুই লাখ টাকার দেনমোহরে সম্পন্ন হয় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। এদিকে হাতিতে বিয়ে হচ্ছে জেনে এক নজর বর-কনেকে দেখতে বিয়ে বাড়িতে ভিড় জমায় হাজারো মানুষ।
বিয়ে প্রসঙ্গে বর সাগর ম-ল বলেন, ‘কলেজে পড়া অবস্থায় বীথির সঙ্গে প্রথম পরিচয় হয়। এরপর বন্ধুত্ব থেকে ভালোলাগা, তারপর প্রেম। কলেজ জীবনের প্রেমকে স্মরণীয় করে রাখতেই পারিবারিকভাবেই সিদ্ধান্ত নেয়া হয় হাতিতে চড়ে বিয়ে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরাতো সবাই জানি প্রেমকে স্মরণীয় করতে সম্রাট শাহজাহান তাজমহল গড়েছেন। দিনটি স্মরণীয় করে রাখতে একেকজন একেকভাবে বিয়ে সম্পন্ন করে। কেউ হেলিকপ্টারে, কেউ মাইক্রো-কারে; সেখানে তো আমাদের এটি একটি ক্ষুদ্র প্রয়াস।’
বরযাত্রী রেজাউল করিম রঞ্জু বলেন, ‘আট কিলোমিটার হাতিতে চরে বিয়ে এটাই মনে হয় প্রথম। সত্যি এটা একটি ব্যতিক্রমী বিয়ে। এ ধরনের একটি বিয়েতে বরযাত্রী হতে পেরে আমিও ভীষণ আনন্দিত।’
তিনি বলেন, ‘বরকে দেখতে হাজার হাজার মানুষ বিয়ের আসরে ভিড় করায়। তাদের সামলাতে কনেপক্ষকে হিমশিম খেতে হয়েছে। সর্বোপরি সুন্দর পরিবেশে বিয়েটি সম্পন্ন হয়েছে।’
স্থানীয় সগুনা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহেল বাকী জানান, হাতিতে চড়ে বিয়ের আয়োজনে সত্যিই ব্যতিক্রমী। এই ধরনের বিয়ে আজকাল চোখেই পড়ে না। সাগর-বীথির বিয়ে নিয়ে গ্রামবাসীর মধ্যে আনন্দ-উচ্ছ্বাস দেখা গেছে।