করোনাভাইরাস
সংক্রমণের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে চলমান বিধিনিষেধের মেয়াদ আরও এক সপ্তাহ
বাড়ানো হয়েছে। রোববার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে,
‘সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায়’ পূর্বের সকল বিধিনিষেধের মেয়াদ ১৬
মে মধ্যরাত থেকে ২৩ মে মধ্যরাত পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে।
ট্রেন ও লঞ্চ
এবং আন্তঃজেলা বাস আগের মতই বন্ধ থাকছে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্ধেক
যাত্রী নিয়ে জেলার ভেতরে গণপরিবহন চলাচল করতে পারবে।
করোনাভাইরাস
সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি রোধে কঠোর বিধিনিষেধের দ্বিতীয় ধাপে ১৪ এপ্রিল থেকে
দেশে জরুরি কাজ ছাড়া ঘরের বাইরে বের হওয়ার েেত্র বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়, যা
‘সর্বাত্মক’ লকডাউন নামে পরিচিতি পায়।
এই বিধিনিষেধের মধ্যে উৎপাদনমুখী
শিল্প কারখানাকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ চালানোর অনুমতি দেওয়া হলেও জরুরি
সেবা দেওয়া প্রতিষ্ঠান ছাড়া সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ আছে।
সরকারের রাজস্ব আদায়ের সাথে সম্পৃক্ত সকল দপ্তর ও সংস্থাও ‘জরুরি পরিষেবার’ আওতাভুক্ত হবে বলে রোববারের প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।
শুরুতে
লকডাউনে শপিংমলসহ অন্যান্য দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশনা থাকলেও
‘জীবন-জীবিকার কথা বিবেচনা করে’ গত ২৫ এপ্রিল থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে
দোকান ও শপিংমল খোলার অনুমতি দেওয়া হয়।
রোববারের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, খাবারের দোকান ও হোটেল-রেস্তোরাঁ কেবল খাদ্য বিক্রি বা সরবরাহ (টেকওয়ে বা অনলাইন) করতে পারবে।
এর আগে গত ৫ মে লকডাউনের বিধিনিষেধের মেয়াদ ১৬ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিল। ঈদের পর তা আরও এক সপ্তাহ বাড়নো হল।
এর
কারণ ব্যাখ্যা করে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন শনিবার বিডিনিউজ
টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “লোকজন ঢাকা ছেড়ে বিভিন্ন গন্তব্যে গেছে
তাদের বাড়ি থেকেও ফিরতে অন্তত ১০ দিন লাগবে। সংক্রমণের কী অবস্থা দাঁড়ায়
বোঝা যাচ্ছে না। এ জন্য মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
ঈদযাত্রার
সঙ্গে যেন ভাইরাস যেন আরও ছড়িয়ে না পড়ে, সেজন্য ১৩ থেকে ১৫ মে ঈদের ছুটিতে
সবাইকে কর্মস্থলের এলাকায় থাকতে বলেছিল সরকার। কিন্তু ঈদের কয়েক দিন আগে
থেকেই লাখো মানুষ যে যেভাবে পারেন সেভাবে গ্রামের বাড়ি গেছেন।
ঘরমুখো
মানুষ ছোট ছোট যানবাহনে গাদাগাদি করে সে সময় বাড়িতে গেছে। ফেরিতেও ছিল উপচে
পড়া ভিড়। স্বাস্থ্যবিধির কোনো বালাই ছিল না কোথাও। ভিড়ের চাপে
শিমুলিয়া-বাংলাবাজার ফেরিতে প্রাণহানিও ঘটেছে।
স্বাস্থ্যবিধি না মেনে
এভাবে ভ্রমণ, বিভিন্ন বিপণিবিতানে মানুষের ভিড়ের কারণে নতুন করে সংক্রমণ
বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা।
ঝুঁকি নিয়ে সেই ঈদযাত্রা
ঠেকানো না গেলেও এখন মানুষের ফিরতি যাত্রা বিলম্বিত করা যায় কীভাবে, সেই পথ
খোঁজার পরামর্শ দিয়েছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা.
এবিএম খুরশীদ আলম।