দেশে
করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত একদিনে আরও ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে,
সংক্রমণ ধরা পড়েছে আরও ১ হাজার ৬০৮ জনের মধ্যে। ঈদের ছুটির পর নমুনা
পরীক্ষা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নতুন রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যাও ফের বাড়তে শুরু
করেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, বুধবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায়
নতুন আক্রান্তদের নিয়ে দেশে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে ৭ লাখ ৮৩ হাজার
৭৩৭ জন হয়েছে। আর করোনাভাইরাসে মৃতের মোট সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১২ হাজার ২৪৮
জন।
সরকারি হিসাবে, আক্রান্তদের মধ্যে একদিনে আরও ১ হাজার ৯২৩ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। তাদের নিয়ে মোট সুস্থ হয়েছেন ৭ লাখ ২৬ হাজার ১৩২ জন।
ঈদের
ছুটির প্রথম দুই দিনে নমুনা পরীক্ষা এক চতুর্থাংশে নেমে আসায় শনিবার
শনাক্ত রোগীর সংখ্যা এক ধাক্কায় নেমে এসেছিল ১৩ মাসের মধ্যে সর্বনি¤œ
পর্যায়ে। ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৩ হাজার ৭৫৮টি নমুনা পরীক্ষা করে ২৬১ জনের
দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ার কথা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছিল
সেদিন।
পরদিন ৫ হাজার ৫০৮টি নমুনা পরীক্ষায় ৩৬৩ জন এবং সোমবার ১০ হাজার
৩৪৭টি নমুনা পরীক্ষা করে ৬৯৮ জন এবং মঙ্গলবার ১৬ হাজার ৮৫৫টি নমুনা পরীক্ষা
করে ১ হাজার ২৭২ জন রোগী শনাক্তের কথা জানানো হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
বুধবার জানিয়েছে আগের দিন ২০ হাজারের বেশি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। আর
তাতে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ফের দেড় হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
বাংলাদেশে
করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গতবছর ৮ মার্চ; তা সাড়ে সাত লাখ
পেরিয়ে যায় গত ২৭ এপ্রিল। সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে গত ৭ এপ্রিল
রেকর্ড ৭ হাজার ৬২৬ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন
পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য
অধিদপ্তর। এ বছর ১১ মে তা সাড়ে ১২ হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে ১৯ এপ্রিল
রেকর্ড ১১২ জনের মৃত্যুর খবর দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
বিশ্বে শনাক্ত
কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে ১৬ কোটি ৪২ ছাড়িয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৩৪
লাখের বেশি মানুষের। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে
৪৭৮টি ল্যাবে ২০ হাজার ৫২৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা
হয়েছে ৫৭ লাখ ৫৫ হাজার ৪৪৬টি নমুনা।
বুধবার নমুনা পরীক্ষা অনুযায়ী
শনাক্তের হার ৭ দশমিক ৮৩ শতাংশ। এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৬২
শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯২ দশমিক ৬৫ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১
দশমিক ৫৬ শতাংশ।
সরকারি ব্যবস্থাপনায় এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৪২ লাখ ১২ হাজার ৬৫৮টি; বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ লাখ ৪২ হাজার ৭৮৮টি।
গত
এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের ২৪ জন পুরুষ আর নারী ১৩ জন। তাদের ২৬ জন
সরকারি হাসপাতালে, ১০ জন বেসরকারি হাসপাতালে এবং ১ জন বাড়িতে মারা যান।
তাদের
মধ্যে ২৪ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ৭ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে,
২ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর, ৩ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছর এবং ১ জনের বয়স ২১
থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিল।
মৃতদের মধ্যে ১৬ জন ঢাকা বিভাগের, ১৫ জন
চট্টগ্রাম বিভাগের,২ জন খুলনা বিভাগের, ২ জন সিলেট বিভাগের, ১ জন রংপুর
বিভাগের এবং ১ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।
এ পর্যন্ত মৃত ১২ হাজার ২৪৮ জনের মধ্যে ৮ হাজার ৮৫৮ জন পুরুষ এবং ৩ হাজার ৩৯০ জন নারী।