Published : Friday, 21 May, 2021 at 12:00 AM, Update: 21.05.2021 1:49:17 AM
ইসমাইল নয়ন ॥ কুমিল্লা-৫ (বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া) সংসদীয় আসনের উপনির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ থেকে প্রার্থীতা ঘোষণা করেছেন এ আসনের সদ্য প্রয়াত সংসদ সদস্য ও সাবেক আইনমন্ত্রী এডভোকেট আবদুল মতিন খসরুর ছোট ভাই কুমিল্লা আইন কলেজের ছাত্রলীগ থেকে সাবেক ভিপি এডভোকেট আবদুল মমিন ফেরদৌস। বড় ভাইয়ের মৃত্যুর পর শোক কাটিয়ে ওঠে একমাস পর পারিবারিক সিদ্ধান্তে উপ-নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য ইতিমধ্যে তৃণমূল নেতাকর্মীদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা ও দলীয় মনোনয়ন পেতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
আবদুল মমিন ফেরদৌস পেশায় একজন আইনজীবী। তিনি, বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ থেকে কুমিল্লা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সদ্য সাবেক দুই বারের সভাপতি। তাছাড়া, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) কুমিল্লা ইউনিটের বর্তমান সভাপতি। কুমিল্লার আইনজীবীদের বৃহৎ একটি এলাকাভিত্তিক সংগঠন বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া আইনজীবী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে টানা সাত বছর দায়িত্ব পালন করছেন। তাছাড়া, কুমিল্লা নগরীর অভিজাত শপিংমল ইস্টার্ন ইয়াকুব প্লাজা দোকান মালিক সমিতির প্রধান উপদেষ্টা ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে দায়িত্ব পালন করছেন। আন্তর্জাতিক সেবামূলক সংগঠন লায়ন'স ক্লাব কুমিল্লা, বাংলাদেশ-৩১৫ বি৩ এর সাবেক সভাপতি ও বর্তমান কেবিনেট মেম্বার। তিনি আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলাম ও বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির আজীবন সদস্য সহ তিনি এলাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও মসজিদ, মাদ্রসা এবং বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের জড়িত রয়েছেন। বড় ভাই সাবেক আইনমন্ত্রী আবদুল মতিন খসরুর বিশ্বস্থ সহযোগী হিসেবে দুই উপজেলার উন্নয়নে রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
এডভোকেট আবদুল মমিন ফেরদৌস ১৯৬১ সালে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মিরপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। চার ভাই তিন বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। তিনি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজে পড়াকালীন সময়ে রাজনৈতিক হাতেখড়ি হয়। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে বিকম ও কুমিল্লা আইন কলেজ থেকে এলএলবি শেষ করেন। কুমিল্লা আইন কলেজে পড়াকালীন সময়ে তিনি ভিপি নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে কুমিল্লা জেলা আইনজীবী সমিতিতে যোগদান করেন। তাঁর বড় ভাই সদ্য প্রয়াত সাবেক আইনমন্ত্রী মরহুম আবদুল মতিন খসরু সুপ্রিম কোর্ট বারে যোগদান করার পর তিনি কুমিল্লার চেম্বারের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। এরপর থেকে তিনি অত্যন্ত সুনামের সাথে কুমিল্লা জেলা আইনজীবী সমিতিতে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। কুমিল্লা বঙ্গবন্ধু আ্ওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সাবেক ট্রেজারার, সম্মিলিত আইনজীবী পরিষদের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক সহ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। তাছাড়া, তিনি ১৯৮৬, ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বড় ভাই আবদুল মতিন খসরুর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির দুই উপজেলার প্রধান সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করে বিজয় অর্জনে নেপথ্যে ব্যাপক ভূমিকা রাখেন।
তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, আমরা শোকাহত। বড় ভাই এত দ্রুত আমাদের ছেড়ে চলে যাবেন কখনো ভাবিনি। আমরা চার ভাই তিন বোন ছিলাম। বড় ভাই মারা যাওয়ার পর দেশের বাহিরে থাকা আমার অপর দুই ভাই ও বোন ও আমার ভাই সাবেক আইনমন্ত্রী এডভোকেট আবদুল মতিন খসরুর ছেলে ও মেয়ে আমার ভাতিজা, ভাতিজির সাথে আলোচনা শেষে পারিবারিকভাবে নির্বাচন করার জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি দলের কাছে মনোনয়ন চাইবো। আমাকে মনোনয়ন দিলে আমার বড় ভাইয়ের আদর্শকে ধারণ করে এ আসনের মানুষের পাশে দাড়াতে চাই। আমার বিশ্বাস বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়ার মানুষ আমাকে ভালো জানে এবং ভালোবাসেন। বড় ভাই এমপি মন্ত্রী থাকাকালীন কেউ কোনদিন বলতে পারবেনা ক্ষমতার অপব্যাবহার করেছি। দুর্নীতি করেছি। আমার পেশাগত জীবনে দুই উপজেলার অসহায় নিরিহ মানুষের জন্য বিনা পয়সায় কাজ করেছি, আইনী সেবা দিয়েছি। বিএনপি জোট সরকারের আমলে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের উপর যে জুলুম নির্যাতন চালানো হয়েছিল তখন আমি তাদের পাশে দাড়িয়েছিলাম। তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা বিনা খরচে লড়েছি। নির্বাচিত হতে পারলে এলাকার অসমাপ্ত উন্নয়ন কাজগুলো তড়িৎগতিতে সম্পন্ন করা হবে। মনোনয়ন না পেলে বিদ্রোহী প্রার্থী হবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, মনোনয়ন না পেলে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার প্রশ্নই আসেনা।