করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিপর্যস্ত ভারতে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৬৩ দিন পর লাখের নিচের নেমেছে, মোট মৃত্যুর সংখ্যা ছাড়িয়েছে সাড়ে তিন লাখ। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যে দেখা গেছে, মঙ্গলবার সকালের আগের ২৪ ঘণ্টায় নতুন ৮৬ হাজার ৪৯৮ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে আর একই সময় মৃত্যু হয়েছে ২১২৩ জনের।
একদিনে শনাক্ত এ রোগীর সংখ্যা গত ৬৬ দিনের মধ্যে সর্বনিম্ন বলে সরকারি তথ্যের বরাতে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
নতুন আক্রান্তদের নিয়ে ভারতের শনাক্ত মোট রোগীর সংখ্যা দুই কোটি ৮৯ লাখ ৯৬ হাজার ৪৭৩ জনে দাঁড়িয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যায় শীর্ষে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের পর দ্বিতীয় স্থানে আছে দেশটি।
ভারতে চলতি মহামারীতে মোট মৃতের সংখ্যা সাড়ে তিন লাখ ছাড়িয়ে তিন লাখ ৫১ হাজার ৩০৯ জন হয়েছে। দুই আমেরিকা মহাদেশের দুই শীর্ষ জনবহুল দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিলের পর মৃতের সংখ্যায় তৃতীয় স্থানে আছে বিশ্বের দ্বিতীয় জনবহুল দেশ ভারত।
ভারতে প্রতি ১০০ জনে শনাক্তের হারও কমে চার দশমিক ৬২ শতাংশে নেমে এসেছে। টানা ১৫ দিন ধরেই শনাক্তের হার ১০ শতাংশের নিচে অবস্থান করছে।
ভারতের রাজ্যগুলোর মধ্যে শনাক্ত রোগীর সংখ্যায় মহারাষ্ট্র শীর্ষে আছে, এরপর আছে দক্ষিণাঞ্চলীয় চারটি রাজ্য: কর্নাটক, কেরালা, তামিলনাডু ও অন্ধ্র প্রদেশ।
দেশটির টিকা কর্মসূচীতে এ পর্যন্ত ২৩ কোটি ৬১ লাখ ডোজ টিকা দেওয়া সম্পন্ন হলেও ভ্যাকসিনের ঘাটতির কারণে কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটছে। গত সপ্তাহে দেশটির সর্বোচ্চ আদালত মোদী সরকারের টিকা নীতিকে ‘যুক্তিহীন, খামখেয়ালিপূর্ণ’ অভিহিত করে এর সমালোচনা করেছে।
সোমবার জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তার সরকার রাজ্যগুলোর কাছ থেকে টিকা কর্মসূচীর নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে নেবে এবং ২১ জুন থেকে ১৮ বছর ঊর্ধ্ব সবাইকে বিনামূল্যে টিকা দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করেছেন।
এপ্রিল ও মে মাসে করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে মৃত্যুর সংখ্যা সর্বোচ্চ পর্যায়ে ওঠার পর দেশটির অনেকগুলো রাজ্য কঠোর লকডাউনের পদক্ষেপ গ্রহণ করে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ধারাবাহিকভাবে কমে আসার পর অনেকগুলো রাজ্যই লকডাউন শিথিল করা শুরু করেছে।