মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সু চির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে নতুন আরও কয়েকটি মামলা করেছে দেশটির সামরিক জান্তা। বৃহস্পতিবার রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, রাজধানী নে-পি-দোর একটি পুলিশ স্টেশনে বুধবার এসব মামলা দায়ের করা হয়।
দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত দৈনিক গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমারের বরাত দিয়ে বলা হয়, তার সরকারের আরও কয়েকজন সাবেক কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ আনা হয়েছে।
১ ফেব্রুয়ারি সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসির (এনএলডি) নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে মিয়ানমারের নিয়ন্ত্রণ নেয় সামরিক বাহিনী। সু চি ও এনএলডির অন্যান্য শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তার করে কারাবন্দি করে সামরিক জান্তা।
দেশটির ‘দুর্নীতি দমন কমিশনের’ উদ্ধৃতি দিয়ে পত্রিকাটি জানায়, দাতব্য প্রতিষ্ঠান ‘দাও খিন চি ফাউন্ডেশনের’ জমির অপব্যবহার এবং অর্থ ও সোনা গ্রহণের অভিযোগ আনা হয়েছে। সু চি এই প্রতিষ্ঠানের প্রধান।
রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত পত্রিকাটিতে বলা হয়, দায়িত্তশীল পতে থাকায় দুর্নীতির দায়ে তিনি দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। যে কারণে দুর্নীতি দমন আইনের ৫৫ ধারায় তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
অপরাধ প্রমাণ হলে সু চির ১৫ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। তার আইনজীবীর সঙ্গে এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
এর আগে বেআইনিভাবে ওয়াকিটকি রাখার অভিযোগে ঔপনিবেশিক আমলের ‘অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট’ লঙ্ঘনের দায়ে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। তার সমর্থকরা বলছেন এই মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
এছাড়া সু চির বিরুদ্ধে দুটি আদালতে আরও কয়েকটি মামলা করা হয়েছে, যেগুলোর বেশিরভাগই ছোটখাট অভিযোগে।
গত নভেম্বরের নির্বাচনে ‘প্রতারণার মাধ্যমে’ সু চির দল এনএলডি বড় ধরনের জয় পেয়েছে অভিযোগ করে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করে সামরিক বাহিনী। সাবেক নির্বাচন কমিশন এবং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা এই অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন।
অভ্যুত্থানের পর নোবেলজয়ী ৭৫ বছর বয়সী সু চি ছাড়াও প্রায় চার হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর থেকে মিয়ানমারজুড়ে জান্তাবিরোধী গণবিক্ষোভে অচল হয়ে পড়েছে দেশটির অর্থনীতি।
এসব বিক্ষোভ দমনে বলপ্রয়োগ করছে সেনাবাহিনী। মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনী দিবসে ১১৪ জন বিক্ষোভকারীকে হত্যা করা হয়। সীমান্ত এলাকায় প্রায় নিয়মিতই বোমা হামলা ও গুপ্তহত্যাসহ নানা ধরনের সহিংস তৎপরতা অব্যাহত আছে।