দেবীদ্বার’র অটোচালক সুজনের ইচ্ছাপুরণে মোবাইল সেট উপহার দিলেন ডাঃ ফেরদৌস খন্দকারবাউল শিল্পী সুজনের কন্ঠে মায়ের গান; অশ্রুসিক্ত দর্শক শ্রোতা
Published : Sunday, 13 June, 2021 at 12:00 AM
এবিএম আতিকুর রহমান বাশার ঃ
শনিবার সন্ধ্যায় দেবীদ্বার উপজেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে অটোচালক সুজন নামে এক দরিদ্র বাউল শিল্পীর ইচ্ছা পুরনে একটি মোবাইল সেট উপহার দেয়ার সময় তার কন্ঠে মা’য়ের গান শোনে উপস্থিত দর্শক শ্রোতারা আবেগে অশ্রুসিক্ত হয়ে উঠেন।
দেবীদ্বার গ্রামের মৃত; ইদ্রিস মিয়ার পুত্র অটোরিক্সা চালক সুজন মিয়া(২৬) আমেরিকার নিউইয়র্ক প্রবাসী মানবতার ফেরিওয়ালাখ্যাত করোনা যোদ্ধা ডাঃ ফেরদৌস খন্দকারের নিকট একটি মোবাইল সেটের জন্য আবেদন করেন। সে ওই মোবাইল সেটের মাধ্যমে তার গানগুলো ইউটিউব চ্যানালে প্রচারে করবে বলে। সুজনের ইচ্ছা পুরনে ডাঃ ফেরদৌস খন্দকার কর্তৃক প্রেরিত ওই মোবাইল সেটটি তার হাতে তুলে দেয়ার সময় উপস্থিত আয়োজক ও অতিথিদের মনোরঞ্জনে গানের আয়োজন করা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা উত্তর জেলা আ’লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক সাজেদা আক্তার মায়া, সাংবাদিক এবিএম আতিকুর রহমান বাশার, দেবীদ্বার পৌর আ’লীগের সহ-সভাপতি হাজী মোঃ ছিদ্দিকুর রহমান আমিন, পৌর কমিশনার ও পৌর আ’লীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক মোঃ মুজিবুর রহমান, সুবিল ইউনিয়ন আ’লীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক গোলাম সারোয়ার মুকুল ভূঁইয়া, জেলা কৃষক লীগের যুগ্ম-আহবায়ক মোঃ সেলিম ভূঁইয়া, ইটালী প্রবাসী মোঃ মোখলেসুর রহমান, নারী নেত্রী ও মহিলা শ্রমিকলীগ উপজেলা সাধারন সম্পাদক শাহিনুর আক্তার লিপি, নারী উদ্যোক্তা ও মা’ মেয়ের রান্না ঘরের পরিচালক হুরবানু আক্তার পলি, নারী নেত্রী আয়শা আলী মুক্তা, সাংবাদিক শফিউল আলম রাজিব, এ,আর আহাম্মেদ হোসাইন, রাসেল সরকার, মনিরুল ইসলাম শুভ, শাহ সবুর প্রমূখ।
সুজন জানায় তার জীবনের সবচেয়ে বড় আনন্দের দিন আজ। শিশুকাল থেকেই বাউল গান গাওয়ার প্রতি সখ ছিল। তার কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছিলনা, শোনে শোনে গান গাওয়া শিখে। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নিয়ে গান গাওয়ারও সুযোগ হয়নি কখনো। শুধু বাউল গানই নয়, পল্লীগীতি, ভাটিয়ালী, লালন, ভান্ডারী, আধুনিক সহ নানা গানের দক্ষতা এবং মনমুগ্ধকর সূরে মানুষকে আনন্দদানে উজ্জিবিত করে।
মা’ বাবা ও ৪ ভাইয়ের সংসার, ১১বছর বয়সে তার বাবা মারা যান। বড় দুই ভাই আলাদা সংসার করে হকারী ও দিন মজুরের কাজ করে সংসার চালায়, মা ও ছোট ভাইকে নিয়ে সুজনের সংসার। বাবার মৃত্যুর পর সংসারের হাল ধরতে হয় তাকে। দরিদ্র সংসাসের ভরণ পোষনে রিক্সা নিয়ে বের হয় সুজন। মা’ ভক্ত সুজন শিশু বয়স থেকেই উপার্জনে মা’য়ের পা ছুয়ে কখনো কখনো ময়লা পায়ে চুমু খেয়ে মায়ের দোয়া নিয়ে বের হয়। আবার সন্ধ্যার পর ঘরে ঢুকে একই নিয়মে মা’কে শ্রদ্ধা করে। মা’য়ের প্রতি এ ভালোবাসার বহি:প্রকাশে কর্মস্থলেও কখনো গুনগুনিয়ে আবার কখনো দরাজ কন্ঠে মায়ের গান গেয়ে বেড়ান। তার গান শুনে কেউ কেউ আবার অর্থদিয়ে পুরস্কৃত করেন।
সে আরো জানায় তার অটো যাত্রীদের অনেকেই তার গান শোনে গানের শিল্পী বানাতে আগ্রহ প্রকাশ করেন, আবার কেউ কেউ তাকে মোবাইল সেট কিনে দেয়ারও আশ^াস দেন। তবে সেসব আশ্বাসেই থেকে যায়, বাস্তবে কেউ তাকে শিল্পী বানাতে কিংবা মোবাইল সেট দিয়ে সহযোগীতা করেনি। আজ ডাঃ ফেরদৌস খন্দকার তার আশা পুরণ করেছে।