Published : Monday, 14 June, 2021 at 12:00 AM, Update: 14.06.2021 1:27:45 AM
ইসমাইল নয়ন ॥ কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় আউশ ধান রোপনে ব্যাপক সাড়া পড়ে কৃষকদের মাঝে। ইরি, বোরো ধান কাটার পর একই জমিতে ত্রিফলা হিসেবে আউশ ধান চাষাবাদে ঝুকে পড়ছেন এই উপজেলার কৃষক কৃষানীরা। অতিরিক্ত ফসল পাওয়ার আশায় উপজেলার সর্বত্রই এখন আউশ ধানের চারা রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষীরা।
উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে ইতোমধ্যে ইরি, বোরো ধান কর্তন ও মাড়াই কাজ শেষ হওয়ায় কৃষকরা আউশ ধান রোপন শুরু করেছেন। অনেক তার জমিতে সেচের মাধ্যমে বোরো ধানের মতই আউশ চাষাবাদ করছেন। অথচ কয়েক বছর আগেও ব্রাহ্মণপাড়ায় আউশ ধানের চাষাবাদ তেমন একটা হয়নি। আর বর্তমানে এর আউশ ধানের চাহিদা বেড়েই ছলছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এর ফলনও ভাল পাওয়া যায়। অল্প জমিতে অধিক ফলনের আশায় কৃষকরা আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করে জমিতে দুইয়ের অধিক ফসল চাষাবাদ করছেন।
উপজেলার দুলালপুর গ্রামের কৃষক শানু মিয়া জানান, তিনি ৩৬ শতক জমিতে আউশ ধান লাগিয়েছেন। তার বিশ্বাস, কোন প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে তার জমি থেকে ১৫ মন ধান পাওয়া যাবে। গেল বছর তিনি একই পরিমান ধান পেয়েছিলেন বলে দাবি তার। তিনি আরও বলেন, আউশ ধানে সার ও বালাই নাশক ওষুধ কম প্রয়োগ করা লাগে। যার ফলে এই ফসলে খরচ কম হয় এবং ফলন ভালো হলে আমরা কৃষকরা লাভবান হই। একই এলাকার কৃষক সফিকুল ইসলাম জানান, এ বছর আউশ মৌসুমে বৃষ্টি না হওয়ায় আমরা সেচপাম্পের মাধ্যমে ইরি, বোরো ধানের মতই আউশ ধান আবাদ করেছি। জমিতে পনি ব্যবস্থা ও ধানের চারা পরিচর্যায়ও ইরি বোরো ধানের মতই করছি। আশা করছি ফলন ভালো হবে এবং অনেটাই ইরি ধানের মত ফলন পাওয়া যাবে।
উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ৪ হাজার ৭শ ৯০ হেক্টর জমিতে আউশ ধানের চাষাবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গেল বছর এর পরিমাণ ছিল ৪ হাজার ৬শ ১০ হেক্টর। দিন দিন এর পরিমাণ বেড়েই চলছে। সাধারণত ব্রি-২৮, ব্রি-৪৮, ব্রি-৮৫ জাতের ধান আউশ মৌসুমে বেশি চাষাবাদ করা হয়। এছাড়াও কৃষকরা স্থানীয় কিছু জাতের বীজ এবং বিভিন্ন কোম্পানীর বাজারজাত করা বিভিন্ন বীজ আউশ মৌসুমে চাষ করছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মাহবুবুল হাসান জানান, মননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ নির্দেশনায় উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় আউশ ধানের চাষাবাদ প্রতি বছর বেড়েই চলছে। অল্প খরচে অতিরিক্ত ফসল হিসাবে ইরি ও বোরো ধান কাটার পর আউশ ধান রোপন করা হয়। ১২০-১৩০ দিনের মধ্যে এর ফলন পাওয়া যায়। তিনি বলেন, আমন মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই আউশ ধান কেটে ঘরে তোলা যায়। বর্তমান সরকারের আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃষক পর্যায়ে উন্নত মানের ধান, গম ও পাঠ বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিতরণ প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়িত উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ৭শ জন কৃষকের মাঝে চলিত মৌসুমে উপজেলা কৃষি দপ্তরের মাধ্যমে বিনামূল্যে বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কৃষকরা যেন তাদের পরিশ্রমের ফসল সঠিক ভাবে যথা সময়ে ঘরে তুলতে পারে সে বেপারেও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা এবং উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ সার্বক্ষণিক মাঠে আছেন কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।