ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ নিয়ে গেলেও থানা পুলিশ তাকে সহায়তা করেনি বলে অভিযোগ করেছেন জনপ্রিয় নায়িকা পরীমনি।
রোববার রাতে বনানীর বাসায় সাংবাদিকদের তিনি এ অভিযোগ করেন।
এদিন গণমাধ্যমের সঙ্গে দফায় দফায় কথা বলেন পরীমনি।
যে জায়গায় পরীমনি নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করছেন সেই ঢাকা বোটক্লাব রূপনগর থানার মধ্যে পড়েছে।
তবে শুরুতে অভিনেত্রী বনানী থানায় গিয়েছিলেন। কিন্তু পরীমনি ও তার স্বজনেরা পুলিশের সঙ্গে কথা বলার সময় বারবারই ঘটনার রাতে বনানী থানায় গিয়ে সহায়তা না পাওয়ার কথা বলেছেন।
এরপর মধ্যরাতে তার বাসায় আসেন রূপনগর থানার ওসি আরিফুর রহমান সরদারের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল।
তারা পরীমনির কাছে ঘটনার বিবরণ শোনেন। ওসি পরীমনিকে বলছিলেন, তারা ঘটনা সাজিয়ে লেখে পরীমনিকে দেখিয়ে তার স্বাক্ষর নেবেন।
বনানী থানায় যাওয়ার পর থেকে পুলিশের সঙ্গে কথোপকথন তারা রেকর্ড করেছেন বলে জানান। কর্তব্যরত কর্মকর্তা তাকে পরদিন সকাল ১০টায় ‘ওসি স্যার’ আসার পর থানায় আসতে বলেন।
‘এরপর কতো ১০টা চলে গেছে’ কথাটির কয়েকবার পুনরাবৃত্তি করেন পরীমনি। কথা বলতে বলতে মাঝে মধ্যেই কেঁদে ফেলছিলেন বাংলা চলচ্চিত্রের এই অভিনেত্রী।
তবে রোববার রাতে বনানী থানার ওসি নুরে আজম মিয়া বলেন, ‘গত কয়েকদিনে এই নামে থানায় কেউ আসেনি। কেউ কোনো অভিযোগও করেনি।
পরীমনি বলেন, ‘তুমি মেয়ে, তুমি সিনেমার নায়িকা, তুমি এসব অভিযোগ করলে উল্টো তোমার দিকে আঙুল উঠবে- এসব কথা বলে বলেই তো আমাকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু আমি তো দমবো না।’
এই সবাই কারা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সবাই, থানার পুলিশ থেকে শুরু করে সবাই। আমাকে বারবারই বোঝানো হয়েছে, আরে লোকে কী বলবে, তোমার ইজ্জত থাকবে? আরে ভাই যে আমার ইজ্জত নেওয়ার চেষ্টা করছে তার নাম আমি বলব না? তার নাম বললে আমার ইজ্জত চলে যাবে?’
প্রকাশ্যে অভিযোগ করতে চারদিন সময় কেন লাগল তার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে পরীমনি বলেন, ‘আমাকে সবাই আশার আলো দেখিয়েছে। সবাই মাথায় হাত বুলিয়ি বলেছে ‘আচ্ছা দেখতিছি দেখতিছি’। কিন্তু কেউ কিছু করেনি।’
‘এই চারদিন ধরে আমি ঘুমাতে পারছি না, খেতে পারছি না। সবার নীরবতার কারণে নিজেই সব প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নিই। আমি ভিক্টিম, আমার ওপর অন্যায় হয়েছে। আমি বিচার চাই।’
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গত বুধবার রাতে কস্টিউম ডিজাইনার জিমি ও জিমির বন্ধু আমিরসহ তারা উত্তরায় বোট ক্লাবে গিয়েছিলেন। ক্লাবটা তখন বন্ধ হয় হয়।
দুজন বয়স্ক ব্যক্তি এসে তাদের মদপানের আমন্ত্রণ জানায়, যাদের একজন নাসির মাহমুদ বলে পরীমনির ভাষ্য। তবে শরীর খারাপ বলে তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন পরীমনি।
তিনি বলেন, জোরাজুরির এক পর্যায়ে তাকে মারধর করে কিছু লোক। এক পর্যায়ে নাসির মাহমুদ তার মুখে মদের বোতল ঠেসে ধরে গিলতে বাধ্য করেন। তখন তাকে ধর্ষণের চেষ্টা চেষ্টা চালান।
প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর ছাড়া পেয়ে বনানী থানায় গিয়েছিলেন জানিয়ে পরীমনি বলেন, ‘তার মুখে মদের গন্ধ থাকায়’ পুলিশ কর্মকর্তারা তার কথা শুনতে চায়নি। এক পর্যায়ে পুলিশ তাকে ওয়াশ করার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। সেখান থেকে তিনি বাসায় চলে আসেন।