দ্রুত মুটিয়ে যাওয়া বর্তমান সময়ের একটি কমন সমস্যা। খাবারের গুণাগুণ সম্পর্কে ধারণা না দিয়ে যারা জীবনযাপন করেন, তাদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা দেখা দেয়। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার বিভিন্ন পন্থা রয়েছে। খাবার খেয়েও ওজন কমানো যায়। তাই যখন শরীরের মেদ ঝেড়ে ফেলতে চাইবেন, তখন বিশেষ কিছু খাদ্য উপাদান বেছে নিতে হবে।
কোনো নির্দিষ্ট খাবার ওজন কমাতে সাহায্য করে এটি অনেকটাই ভুল ধারণা। মজার তথ্য হচ্ছে— প্রায় সব খাবারেই ওজন কমানোর জন্য উপকারী উপাদান থাকে। একাধিক খাবারের মিশ্রণে দ্রুত ওজন কমতে পারে। কিছু খাবারের মিশ্রণ বাড়াতে পারে খাবারের তৃপ্তি ও দ্রুত বার্ন করতে পারে ক্যালোরি।
১. ভাত ও মসুর ডাল
আমরা সবাই বাড়িতে ডাল-ভাত খেয়ে থাকি। কিন্তু এটি আমাদের অনেকেরই জানা নেই যে অতিপরিচিত এ খাদ্য মিশ্রণটি ওজন কমাতেও সহায়তা করে। যদিও মসুর ডাল প্রোটিনসমৃদ্ধ এবং এটি তৃপ্তি অর্জনে সহায়তা করে। কিন্তু এর সঙ্গে চাল যোগ করা হলে তা একটি ভালো শক্তি-সরবরাহকারী কার্ব উৎস তৈরি করতে পারে। প্রতিদিন এটি খেলে তা ওজন কমাতে সাহায্য করে।
২. ওটসের সঙ্গে বাদাম ও বীজের মিশ্রণ
ওটস মিল হচ্ছে— ওজন হ্রাসকারী খাবারগুলোর মাঝে সর্বোত্তম। তবে ওটস মিলটি সঠিক উপায়ে ও মানসম্পন্ন উপাদানের খাওয়া ও চিনি ছাড়া গ্রহণ করলে তা আরও বেশি কার্যকরী। এর সঙ্গে আপনি ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ বাদাম ও বীজ যেমন, বাদাম, আখরোট, চিয়া বীজ যুক্ত করা যেতে পারে।
৩. গ্রিন টি ও লেবু
গ্রিন টি হচ্ছে ক্যাটচিন এবং অন্যান্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর এক পানীয়। এটি আপনাকে উৎসাহিত করার জন্য একটি ভালো ডিটক্সাইফায়ার এবং কম ক্যালোরিযুক্ত পানীয় হতে পারে। দিনে ৩-৪ কাপ গ্রিন টি আপনার রক্তচাপকে স্থিতিশীল করতে ও ওজন কমাতে আশ্চর্যভাবে কাজ করতে পারে। সঙ্গে লেবুর রস যোগ করে নিলে এর পুষ্টিগুলো আরও বাড়াতে এবং আরও স্বাদ তৈরি করতে সহায়তা করে।
৪. পনির ও মুরগি মাংসের সঙ্গে শাকসবজি
প্রতিদিনের খাবারে স্বাস্থ্যকর শাকসবজি রাখা কেবল গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং এটি ওজন কমানোর জন্যও দুর্দান্ত। তবে শাকসবজির সঙ্গে কোনো পুষ্টি সমৃদ্ধ প্রোটিনযুক্ত খাবার যেমন, পনির, মুরগি রাখতে হবে। এটি হবে একটি পুষ্টিকর খাবারের পাশাপাশি একটি ওজন হ্রাসকারী দুর্দান্ত খাবারের মিশ্রণ।
৫. কফির সঙ্গে দারুচিনি
কফি হচ্ছে লো-ক্যালোরি যুক্ত অন্যতম জনপ্রিয় একটি পানীয়। তবে এ পানীয়টি চিনি ছাড়া খেলে উপকার পাওয়া যায় বেশি। চিনির বিকল্প হিসেবে এর সঙ্গে দারুচিনির টুকরো মিশিয়ে খেলে তা অনেক ভালো কাজে দেয়। এটির মিশ্রণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হয় এবং এতে প্রদাহ-হ্রাসকারী বৈশিষ্ট্য থাকে, যা ওজন কমাতে অনেক কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
৬. আলুর সঙ্গে গোলমরিচ
আলু একটি শর্করাযুক্ত খাবার হওয়ায় তা মোটা হতে সাহায্য করে এ কথাটি সম্পূর্ণ ঠিক নয়। আপনি জেনে অবাক হবেন যে, ওটস মিল বা বাদামি চালের চেয়েও আলু বেশি ফাইবার সমৃদ্ধ। গোলমরিচের সিজনিংয়ের সঙ্গে আলু আপনার ওজন হ্রাস মিশনেও গতি বাড়াতে পারে। গোলমরিচে একটি অপরিহার্য এক্সট্রাক্ট, পাইপেরিন থাকায় তা কোলেস্টেরল কমায় এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে।
৭. নারিকেল তেলের সঙ্গে ডিম
ডিম হচ্ছে অন্যতম ওজন হ্রাসকারী খাবার এবং একই সঙ্গে এতে থাকে প্রোটিন, ওমেগা এবং বিভিন্ন মাল্টিভিটামিন। শরীরের অতিরিক্ত চর্বি নিয়ে চিন্তিত থাকলে আপনি নারিকেল তেলে ডিম প্রস্তুত করে খেতে পারেন। নারিকেল তেলে এমসিটি থাকে (মাঝারি চেইন ট্রাইগ্লিসারাইডস), যা কোলেস্টেরল বৃদ্ধি রোধ করে এবং আপনার সামগ্রিক স্বাস্থ্য কমাতে সাহায্য করে।