গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে বিশ্বের সবচেয়ে প্রিম্যাচিউর হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া শিশুটি নিজের প্রথম জন্মদিন উদযাপন করেছে। সবচেয়ে কম সময় মায়ের গর্ভে থাকা এই শিশুটির বেঁচে থাকার সম্ভাবনা শূন্য শতাংশ বলে জানিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা। তবে সবাইকে অবাক করে দিয়ে রিচার্ড নামের শিশুটি নিজের প্রথম জন্মদিন উদযাপন করে ফেলেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের মিনিয়াপোলিসের বাসিন্দা বেথ হাচিনসনের সন্তান জন্মদানের নির্ধারিত তারিখ ছিলো ২০২০ সালের ১৩ অক্টোবর। তবে তারও কয়েকমাস আগেই মেডিক্যাল জটিলতা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। চিকিৎসকেরা তার স্বামী রিক হাচিনসনের সঙ্গে আলাপচারিতার পর শিশুটিকে ডেলিভারি করানোর সিদ্ধান্ত নেন। শিশুটিকে বাঁচাতে সম্ভাব্য সব পদক্ষেপ গ্রহণ করেন তারা।
মায়ের গর্ভে ২১ সপ্তাহ ২ দিন অবস্থানের পর গত বছরের ৫ জুন জন্ম হয় রিচার্ড স্কট উইলিয়াম হাচিনসনের। গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের বিবৃতিতে বলা হয়, এই শিশুটি ১৩১দিনের প্রিম্যাচিউর। সাধারণত শিশুদের মায়েদের গর্ভে থাকার সময় ৪০ সপ্তাহ।
জন্মের সময় রিচার্ডের ওজন ছিলো মাত্র ৩৪০ গ্রাম। সাধারণ নবজাতকের তুলনায় যা দশ ভাগের মাত্র এক ভাগ। জন্মের সময় রিচার্ড এতোটাই ছোট ছিলো যে তাকে এক হাতের তালুতে নেওয়া যেত।
এতো ছোট শিশুর জন্ম হওয়ায় তার বেঁচে থাকার আশা ছেড়েই দিয়ে ছিলেন চিকিৎসকেরা। সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির জন্য বাবা-মাকে প্রস্তুত করানোর সিদ্ধান্ত নেন তারা। মিনিয়াপোলিসের চিলড্রেন’স মিনেসোটা হাসপাতালেন নিওন্যাটালোজিস্ট ডা. স্টাকি কার্ন জানান, বেথ এবং রিক হাচিনসনকে পরিস্থিতি জানানো হয়।
ডা. স্টাকি কার্ন বলেন, ডাক্তাররা জানতেন রিচার্ডের জীবনের প্রথম কয়েকটা সপ্তাহ হবে কঠিন। এই সময়টা পার করে ফেলতে পারলে টিকে যাওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে তার।
এই বছর যখন রিচার্ডের প্রথম জন্মদিন উদযাপন করা হয় তখন গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ড তাকে বেঁচে যাওয়া সবচেয়ে প্রিম্যাচিউর শিশুর স্বীকৃতি দেয়। তার মা বেথ রিচার্ডসন বলেন, এটা আসলে আমার সত্যিই মনে হয় না। নতুন এই রেকর্ড তৈরি করতে পেরে ভীষণ আপ্লুত তারা।
উল্লেখ্য, এর আগে সবচেয়ে প্রিম্যাচিউর শিশুর রেকর্ডটি ছিলো কানাডার জেমস এলগিন জিলের। ২১ সপ্তাহ ৫ দিন গর্ভে থেকে ১২৮ দিনের প্রিম্যাচিউর শিশু হিসেবে ১৯৮৭ সালের ২০ মে ব্রেন্ডায় জন্ম হয় জেমসের।