মিয়ানমারে জান্তাবাহিনীর অভ্যুত্থানের পর থেকে আনুমানিক ২ লাখ ৩০ হাজার লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। শুধু সেনা অভ্যুত্থানেই নয়, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর বিদ্রোহী সশস্ত্র গ্রুপগুলোর সঙ্গে সরকারের লেগে থাকা সংঘাতেও বহু মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
বাস্তুচ্যুত এসব মানুষের জন্য জরুরি ভিত্তিতে মানবিক সহায়তার প্রয়োজন। বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে জাতিসংঘ। খবর রয়টার্সের।
জাতিসংঘের অফিস ফর দ্য কোঅর্ডিনেশন অব হিউম্যান অ্যাফেয়ার্স (ওসিএইচএ) জানিয়েছে, থাইল্যান্ডের সঙ্গে সীমান্তঘেঁষা মিয়ানমারের কারেন রাজ্যের স্থানীয় স্বাধীনতাকামী সংগঠনগুলোর সঙ্গে মিয়ানমার সরকারের বিরোধ ছিল আগে থেকেই। সেনা অভ্যুত্থানের পরে তা রক্তক্ষয়ী সংঘাতে রূপ নিয়েছে।
এ রাজ্যে জান্তা সেনা-পুলিশের ওপর হামলা, প্রতিহামলার খবর হরহামেশাই পাওয়া যায়। এসব সংঘাতের জের ধরে কারেন রাজ্য থেকে ১ লাখ ৭৭ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। গত মাসে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এ রাজ্যের ১ লাখ ৩ হাজার মানুষ।
একইভাবে ভারতের সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের রাজ্য শিন থেকেও বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ২০ হাজারের বেশি মানুষ। সেনাবাহিনীর সঙ্গে স্থানীয় সংখ্যালঘু নৃগোষ্ঠীর সশস্ত্র সংগঠনগুলোর উত্তরাঞ্চলীয় কাচিন ও শান রাজ্যের হাজারো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
কারেন রাজ্যের বিদ্রোহী গোষ্ঠী কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে সাধারণ নিরস্ত্র জনগণের পক্ষে তারা জান্তাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রাখবে। এ অবস্থায় দেশটির চলমান সশস্ত্র সংঘর্ষ ও সহিংসতায় সৃষ্ট নিরাপত্তাহীনতা ত্রাণ কার্যক্রমে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বৃহস্পতিবারও কাচিন, দাওয়েই, সাগাইং এবং ইয়াঙ্গুনে জান্তাবিরোধী আন্দোলন অব্যাহত ছিল। এ সময় চারজন মিলিশিয়া সদস্যকে ‘সন্ত্রাসী’ হিসাবে গ্রেফতার করা হয় বলে মিয়ানমারের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনের খবরে দাবি করা হয়।
অভ্যুত্থানের পর থেকে জান্তাদের হাতে এ যাবত মিয়ানমারের ৮৭৭ নাগরিক নিহত হয়েছেন এবং ৬ হাজার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স (এএপিপি)।