গত
মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী মাদক সেবনের পর নিজের গলা কেটে
আত্মহত্যার ঘটনায় আলোচনায় আসে এলএসডি বা লাইসার্জিক এসিড ডাইইথালামাইড
নামের মাদকটি। ক্ষতিকর এই মাদক সেবনের ফলে দৃষ্টিবিভ্রম বা হ্যালুসিনেশন
হয়ে থাকে। গত মাসেই এলএসডি মাদক বিক্রি ও সেবনের অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের
আট শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কিন্তু তাতে মাদকের কারবার থেমে নেই।
পত্রিকান্তরে প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়েছে, এলএসডির মতোই অপ্রচলিত ও ভয়ংকর
আরেকটি মাদক ডিএমটি অনলাইনে বিক্রি করে দেশে বাজার তৈরির চেষ্টা করছে
কারবারিরা। দেশে প্রথমবারের মতো ডিএমটি মাদকসহ চারজনকে গ্রেপ্তারের পর
র্যাব জানিয়েছে, বিদেশে লেখাপড়া করতে গিয়ে এলএসডি ও ডিএমটির মতো নতুন
মাদকে আসক্ত হয়ে পড়ছে ধনাঢ্য পরিবারের সন্তানরা। র্যাবের দেওয়া তথ্য মতে,
এদের কেউ থাইল্যান্ডে গিয়ে নতুন মাদক ডিএমটিতে আসক্ত হচ্ছে, কেউ আবার
লন্ডনে গিয়ে এলএসডি সেবনে আসক্ত হচ্ছে। পড়াশোনা শেষে দেশে ফিরলেও আসক্তি
থেকে পোস্টাল সার্ভিসের মাধ্যমে দেশে আমদানি করছে এলএসডি ও ডিএমটি। কেউ কেউ
কারবারও শুরু করেছে। বিশেষ অভিযান ও করোনা মহামারির কারণে মাদক কারবারিরা
এখন ইয়াবা, আইস, ফেনসিডিল, এলএসডিসহ বিভিন্ন মাদক বিক্রি করছে অনলাইনে।
ডার্কনেটে ও গোপন অ্যাপে যোগাযোগে দেওয়া হচ্ছে মাদকের বিজ্ঞাপন।
মাদকের
আগ্রাসন প্রতিরোধে দেশে বিশেষ অভিযানেও কমেনি কারবার। প্রচলিত মাদকের সঙ্গে
বাড়ছে অপ্রচলিত মাদকের কারবার। ২০১৮ সালে বিমানবন্দরে প্রথম এনপিএস বা খাত
ধরা পড়ে। একই বছর জিগাতলায় ধরা পড়ে আইস। ২০১৯ সালে লাইসার্জিক এসিড
ডাইইথালামাইড বা এলএসডির একটি চালান ধরা পড়লেও সম্প্রতি ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার পর এই মাদকের ভয়াবহতা সামনে আসে।
কালের কণ্ঠে প্রকাশিত আরেক খবরে বলা হয়েছে, দেশের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ
আইনে নিষিদ্ধ করা হলেও কৌশলে সিসার লাউঞ্জ চালাচ্ছেন রেস্টুরেন্ট ও হোটেল
ব্যবসায়ীরা। রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় করোনাকালেও চালু আছে অর্ধশতাধিক সিসা
লাউঞ্জ। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, সিসার
ফ্লেভারে অ্যালকোহল, ইয়াবা, গাঁজাসহ বিভিন্ন মাদক মিশিয়ে তরুণ সেবীদের
আসক্ত করে তোলার চেষ্টা করছে অসাধু কারবারিরা।
আওয়ামী লীগ সরকারের ২০১৮
সালের নির্বাচনী ইশতেহারে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের সুস্পষ্ট লক্ষ্য ও
পরিকল্পনার কথা থাকলেও মাদকের কারবার বন্ধ করা যায়নি। মাদক প্রতিরোধে
সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।