ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
শনাক্তে নতুন রেকর্ড, মৃত্যু ১১৫
Published : Thursday, 1 July, 2021 at 12:00 AM, Update: 01.07.2021 1:15:54 AM
শনাক্তে নতুন রেকর্ড, মৃত্যু ১১৫দেশে গত এক দিনে আরও ৮ হাজার ৮২২ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে, যা এযাবৎকালের সর্বোচ্চ।
আক্রান্তদের মধ্যে ২৪ ঘণ্টায় আরও ১১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে এ ভাইরাসে। এ নিয়ে টানা চতুর্থ দিন একশর বেশি মৃত্যু দেখতে হল বাংলাদেশকে।
এপ্রিলের রেকর্ড ভেঙে ৮ হাজার ৩৬৪ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছিল গত সোমবার। সেই রেকর্ড দুই দিনও থাকল না।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, বুধবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় কেবল ঢাকা বিভাগেই ৪৩৬২ জন জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে, যা দিনের মোট শনাক্তের প্রায় অর্ধেক।
নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত মোট ৯ লাখ ১৩ হাজার ২৫৮ জনের আক্রান্ত হওয়ার তথ্য এসেছে সরকারের খাতায়। আগের দিন মঙ্গলবার এই সংখ্যা নয় লাখের ঘর অতিক্রম করে।
গত এক দিনে সারা দেশে যে ১১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে ৩০ জনই ছিলেন খুলনা বিভাগের বাসিন্দা। চট্টগ্রাম আর রাজশাহী বিভাগে মারা গেছেন ২৩ জন করে।
সব মিলিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মারা যাওয়া মানুষের সংখ্যা বেড়ে ১৪ হাজার ৫০৩ জন হয়েছে।
গত এক দিনে নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ২৫ শতাংশ পেরিয়ে গেছে, আগের দিন যা ২৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ ছিল।
সরকারি হিসাবে গত এক দিনে আরও ৪ হাজার ৫৫০ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৮ লাখ ১৬ হাজার ২৫০ জন।
করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ডেল্টার সামাজিক বিস্তার বা কমিউনিটি ট্রান্সমিশন ঘটায় জুনের শুরু থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়ছে। পরিস্থিতি উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়ায় আবার সারা দেশে লকডাউনের কঠোর বিধিনিষেধ জারি করেছে সরকার।
বৃহস্পতিবার থেকে সাত দিনের এই লকডাউন বাস্তবায়নে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সেনাবাহিনী নামানো হচ্ছে মাঠে।
ঢাকা নগরীসহ জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বাধিক ৩২৫৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এছাড়া ফরিদপুরে ২১৩ জন, রাজবাড়ীতে ১৬৬ জন, টাঙ্গাইল জেলায় ৩২০ জন, ময়মনসিংহে ১০৭ জন, রাজশাহী জেলায় ২৫০ জন, নওগাঁয় ১৪০ জন, পাবনায় ১৭৭ জন, বগুড়ায় ১২৭ জন, দিনাজপুরে জেলায় ১৩৬ জন, চট্টগ্রাম জেলায় ৩৯৯ জন, কক্সবাজারে ১৩৬ জন,কুমিল্লা জেলায় ১৫৫ জন,নোয়াখালী জেলায় ১২৩ জন, খুলনা জেলায় ৩৭৭,যশোরে ২৮১ জন, ঝিনাইদহে ১১৫ জন এবং কুষ্টিয়ায় ১৮৯ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে গত এক দিনে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৫৬৫টি ল্যাবে ৩৫ হাজার ১০৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৬৬ লাখ ৮ হাজার ৯২৭টি নমুনা।
২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ২৫ দশমিক ১৫ শতাংশ যা আগেরদিন ২৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ ছিল।
দেশে এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৮২ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৯ শতাংশ।
গত এক দিনে ঢাকা বিভাগে যে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের ১১ জনই ছিলেন ঢাকা জেলার। খুলনায় মারা যাওয়া ৩০ জনের মধ্যে ১০ জনই ছিলেন কুষ্টিয়া জেলার বাসিন্দা।
এছাড়া চট্গ্রাম বিভাগে ২৩ জন, রাজশাহী বিভাগে ২৩ জন, বরিশাল বিভাগে ২ জন, সিলেট বিভাগে ৩ জন, রংপুর বিভাগে ১১ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায়।
এই ১১৫ জনের মধ্যে ৫৭ জনেরই বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। ২৫ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ১৭ জনের বয়স ছিল ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ১২ জনের বয়স ছিল ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে এবং ৫ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিল।
তাদের ৭২ জন ছিলেন পুরুষ, ৪৩ জন ছিলেন নারী। ৮৭ জন সরকারি হাসপাতালে, ১৯ জন বেসরকারি হাসপাতালে এবং ৯ জন বাসায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গতবছর ৮ মার্চ; তা আট লাখ পেরিয়ে যায় গত ৩১ মে। সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে গত ৭ এপ্রিল রেকর্ড ৭ হাজার ৬২৬ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ বছর ১১ জুন তা ১৩ হাজার ছাড়িয়ে যায়। রোববার রেকর্ড ১১৯ জনের মৃত্যুর খবর দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
বিশ্বে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১৮ কোটি ১৮ লাখ ছাড়িয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৩৯ লাখ ৩৯ হাজার মানুষের।