তানভীর দিপু:
করোনার
উচ্চ সংক্রমণ প্রতিরোধে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনকে অন্যান্য উপজেলা গুলো
থেকে বিচ্ছিন্ন করার পরিকল্পনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কুমিল্লা সিভিল সার্জন
মীর মোবারক হোসাইন। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সিভিল সার্জন জানান, কুমিল্লায়
যে হারে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে তা খুবই আশংকার বিষয়। এখনো পরিস্থিতি
নিয়ন্ত্রনের বাইরে না গেলেও- সংক্রমণের উর্দ্ধগতি এখন দুশ্চিন্তার বিষয়।
কুমিল্লা নগরীতে সংক্রমণের যে উচ্চহার সে কারণে সংক্রমণ যেন ছড়িয়ে না পরে
নগরীকে পার্শ্ববর্তী উপজেলা থেকে বিচ্ছিন্ন করে কঠোর প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে
তোলা হবে।
তথ্য বলছে, গত ৩ দিনেই কুমিল্লা সিটিতে করোনা আক্রান্ত
শনাক্ত হয়েছেন ২৭৩ জন। এই তিন দিনে করোনার নমুনা পরীক্ষা করেছেন ১ হাজার
৪৯৬ জন। এর মধ্যে করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়েছে ৪৩৪ জন। অর্থাৎ গড়ে সংক্রমনের
হার ২৯ শতাংশ। অন্যদিকে গত তিন দিনে মোট শনাক্তের ৬২ শতাংশই কুমিল্লা সিটি
এলাকার।
এদিকে গতকাল মঙ্গলবার কুমিল্লায় একদিনে আরো ১৫৫ জন রোগী
শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে পরপর দুইদিন এ জেলায় দেড় শতাধিক রোগী শনাক্ত হলো। তার
আগের দিন সোমবার কুমিল্লায় রেকর্ড সর্বোচ্চ ১৭৫ জন করোনা রোগী শনাক্ত
হয়েছিলো। এছাড়াও জেলায় গত ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন দুই
ব্যক্তি। তাদের বাড়ি দেবীদ্বার ও লালমাই উপজেলায়। মঙ্গলবার জেলা সিভিল
সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে এ তথ্য।
এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা রোগীর
সংখ্যা দাঁড়ালো ১৪ হাজার ১৮০ জনে। এর মধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ৪৭৫জন। এছাড়াও
কুমিল্লায় এ পর্যন্ত মোট ১১ হাজার ৭শ জন করোনা রোগী সুস্থ হয়েছেন বলে
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে।
গতকালের তথ্য অনুসারে,
কুমিল্লা সিটিতে ৬৬ জন ছাড়াও আদর্শ সদরে ১২ জন, সদর দক্ষিণে ১ জন, বুড়িচং ৩
জন, চান্দিনা ৭ জন, চৌদ্দগ্রাম ৪ জন, দেবিদ্বার ৮ জন, দাউদকান্দি ৮ জন,
লাকসাম ৬ জন, লালমাই ৩ জন, নাঙ্গলকোট ১৬ জন, বরুড়া ৭ জন, মনোহর গঞ্জে ৬ জন,
মুরাদনগরে ৭জন তিতাস ১ জন করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন।
এছাড়া বিদেশগামী ৮ জন করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন।
জেলা
স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, কুমিল্লায় করোনার সংক্রমণ ক্রমাগত উর্দ্ধমুখী।
শতভাগ লকডাউন নিশ্চিত করা না গেলে সংক্রমণ ঠেকানো যাবে না।
দ্বিতীয়
দিনেও কুমিল্লায় ঢিলেঢালা লকডাউনের চিত্র দেখা গেছে। কুমিল্লা নগরী ও
বিভিন্ন উপজেলা সদরে সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক চলাফেরা লক্ষ্য করা গেছে।
নগরীতে দোকানপাট বন্ধ থাকলেও বাড়ির বাইরে বের হয়েছেন অনেকেই। সংক্রমণ হার
উর্দ্ধে থাকলেও মানুষের এমন উদাসীনতা নিয়ে শংকা প্রকাশ করেছেন করোনা
প্রতিরোধ সংশ্লিষ্টরা। এদিকে লকডাউন নির্দেশনা মানাতে মোবাইল কোর্ট
পরিচালনা করেছে জেলা প্রশাসন। ৯ জন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্বে
নগরীর বিভিন্ন এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ২০ মামলায় ৭ হাজার ৭শ টাকা
জরিমানা আদায় করা হয়। এদিকে লকডাউনে সরকারি বিধি ভঙ্গ করায় নগরীর বিভিন্ন
স্ট্যান্ড থেকে শতাধিক সিএনজি অটোরিকশাকে আটক করে টাউন হল মাঠে প্রায় ৪
ঘন্টা আটকে রাখে জেলা পুলিশ। তাদেরকে লকডাউন আইন মানতে সতর্ক করে ছেড়ে দেয়া
হয়।