Published : Sunday, 4 July, 2021 at 12:00 AM, Update: 04.07.2021 12:48:24 AM
মো. হাবিবুর রহমান, মুরাদনগর ||
মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহার প্রধান আয়োজন কোরবানীর পশুর হাট। এর মধ্যে দেশব্যাপী চলছে কঠোর লকডাউন। এবার কুমিল্লার মুরাদনগরে হাট কতটা জমবে এবং বেচাকেনা কেমন হবে তা নিয়ে দুচিন্তায় পড়েছে উদ্যোক্তারা। তবে খামারীদের ন্যায্যমূল্য পাইয়ে দিতে ‘মুরাদনগর অনলাইন পশুর হাট’ নামে একটি ফেসবুক পেইজ খুলেছেন।
মুরাদনগর সদর ইউনিয়নের আহাম্মদ উল্লাহ বিদেশ থেকে দেশে ফিরে দেড় বছর আগে ৩১ লাখ টাকা দিয়ে ২৮টি গরু কিনে খামার গড়েন। গত কোরবানি ঈদে করোনার প্রকোপ বেশি থাকায় কোরবানির হাটে বিক্রি করতে না পারায় সে গরু গুলোকেই এবার আরো মোটাতাজা করেন।
উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামের উদ্যোক্তা নিজুম আহাম্মদ বলেন, ৬০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে আড়াই লাখ টাকা দামের গরু রয়েছে তার খামারে। বর্তমানে গো-খাদ্যের দাম আকাশ ছোয়া! করোনার প্রকোপ না কমলে কোরবানির হাটে তেমন ব্যাপারি আসবে না। ফলে হাট-বাজারে বেচাকেনা তেমন হবে না। এবার ভালো দাম না পেলে খামারি ব্যবসা ছেড়ে দিতে হবে।
নবীপুর পশ্চিম ইউনিয়নের নগরপাড় গ্রামে ‘আব্দুল্লাহ ডেইরি ফার্ম’। খামারের সবচেয়ে বড় গরুটির নাম শখ করে রেখেছেন রাজা বাবু। ভাল দাম না পাওয়ায় গত ঈদে বিক্রি করেনি রাজা বাবুকে। ৫ বছর বয়সের রাজা বাবুর ওজন এখন প্রায় ৩০ মন। এবার আসন্ন কোরবানীর ঈদে মোটামুটি দাম পেলেও ছেড়ে দেওয়ার মনস্থির করেছে খামারী ফরিদ মিয়া। তিনি মনে করেন, কোরবানির পশুর হাট না বসলে ন্যায্য দাম পাওয়া যাবে না। এতে করে তার অনেক লোকসান গুনতে হবে।
বাঙ্গরা বাজার থানাধীন দৌলতপুর গ্রামে ১০ বছর আগে ৩টি গরু দিয়ে খামার শুরু করেন রোকেয়া বেগম। বর্তমানে তার খামারে বিক্রি যোগ্য গরু রয়েছে ১৬টি। তিনি বলেন, ‘গত দু’বছর বাজারে গরুর ভালো দাম পাইনি। এ বছর যদি ভারতের গরু আমদানি না হয়, তা হলে আমরা লাভবান হবো।
মুরাদনগর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. কামরুল আহমেদ খান দৈনিক কুমিল্লার কাগজকে জানান, চলতি বছরে করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে হাটে গরু বিক্রি ও দাম নিয়ে চিন্তিত খামারিরা। তবে তারা যেন ভালো দাম পায়, সে ক্ষেত্রে আমরা ইউনিয়ন উদ্যোক্তদের নিয়ে ‘মুরাদনগর অনলাইন পশুর হাট’ নামে একটি ফেসবুক পেজ খুলেছি। খামারিদের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত আছে। আগ্রহী খামারি থেকে গবাদি প্রাণীর ছবি সংগ্রহ করা হচ্ছে। তা অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রির জন্য প্রচার করা হবে। এবার গরুর চাহিদা রয়েছে ১৩ হাজার ৫শ’। বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা আছে ১৩ হাজার ৮শ’ ৭১টি গরু।