তালেবানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার আগ্রহ থেকে অস্ত্র হাতে নেওয়া আফগানদের বিষয়ে সরকারের নীতিতে হঠাৎ করে বদল আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির আইনপ্রণেতা ও রাজনৈতিক নেতারা। দেশে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে তালেবানের সংঘর্ষ তীব্র হওয়ার মধ্যে সরকার নীতিতে বদল আনল।
যদিও গণপ্রতিরোধ বাহিনীর প্রতি সরকারের সমর্থন রয়েছে বলে এক বিবৃতিতে জানানো হয়। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি বিবৃতিতে। আফগানিস্তানভিত্তিক গণমাধ্যম টোলো নিউজ এ তথ্য জানায়।
দেশটির আইনপ্রণেতা ও রাজনৈতিক নেতাদের বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়, গণপ্রতিরোধ বাহিনীর সদস্যদের অর্থ এবং সামরিক সহযোগিতা করার পরিকল্পনা থেকে সরে আসছে সরকার। তাদের কোনো ধরনের সামরিক সহায়তা অথবা আর্থিক প্রণোদনা দেওয়া হবে না।
আফগানিস্তানের বহু প্রদেশে গণপ্রতিরোধ বাহিনী গড়ে উঠেছে। অধিকাংশই দেশটির উত্তর অংশে। যেখানে বহু এলাকা তালেবানের দখলে চলে গেছে।
গণপ্রতিরোধ বাহিনীর চাওয়া, সরকার যেন তাদের অর্থ এবং অস্ত্র দিয়ে সহায়তা দেয়।
মুজাহিদিনের সাবেক কমান্ডার মোহাম্মদ ইসমাইল খান বলেন, আফগানিস্তানের মানুষ প্রায় ৪০ বছর ধরে যুদ্ধে লিপ্ত। এখন তারা তাদের মর্যাদা রক্ষায় আবার অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছেন। অনেকেই অস্ত্র কিনেও নিচ্ছেন।
আইনপ্রণেতা ফাতিমা কোহিস্তানি বলেন, যেখানে গণপ্রতিরোধ বাহিনীর সদস্য সংখ্যা বেশি সেখানে তারা শক্তিশালী। তবে তাদের অস্ত্রের অভাব রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকার তালেবানের হুমকি থাকা সত্ত্বেও গণপ্রতিরোধ বাহিনীকে সহায়তা করা বন্ধ করে দিয়েছে।
বাদাখশানের আইনপ্রণেতা ওয়াকিফ হাকিমি বলেন, সরকার শান্তির জন্য দরকারি সুযোগগুলো হারিয়েছে। আমার মনে হয় সরকার তাদের অস্ত্র ও সরঞ্জাম দেয়নি।
এদিকে এক বিবৃতিতে গণপ্রতিরোধ বাহিনীর প্রতি সমর্থন রয়েছে বলে জানিয়েছে সরকার। তবে বিস্তারিত কিছুই জানানো হয়নি সেখানে।
সোমবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা ওয়াহিদ ওমর বলেন, গণপ্রতিরোধ বাহিনী প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করেছে। আমার কাছে এর বেশি কিছু জানতে চাইবেন না। কিছু বিষয় থাকে যেসব বিষয় নিয়ে আসলে কথা বলা যায় না।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহার প্রক্রিয়ার মধ্যে তালেবানকে ঠেকাতে সাধারণ মানুষের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়ার কথা জানিয়েছিল সরকার। একই সঙ্গে তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করার কথাও জানানো হয়েছিল। গণপ্রতিরোধ বাহিনীর সদস্যরা দেশের বিভিন্ন স্থানে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়ছেনও। এমন সময়ে সরকারের এ পদক্ষেপ গণপ্রতিরোধ বাহিনীকে যে বেকায়দায় ফেলবে এটি বলার অপেক্ষা রাখে না।