বৃহস্পতিবার বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়, সোমবার থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। বছরের শেষ পর্যন্ত তা বহাল থাকবে।
প্রধানমন্ত্রী ম্যানুয়েল মারেরো ক্রুজ বুধবার এক বৈঠকে এই ঘোষণা দিয়ে বলেন, এটা অনেকেরই দাবি ছিল এবং এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার দরকার ছিল।
৩১ ডিসেম্বরের পর সরকার ‘বিষয়টি নতুন করে পর্যালোচনা করবে’ বলেও জানান তিনি।
এখন ১০ কেজির বেশি ওষুধ কিউবায় নিতে কর দিতে হয়।
এছাড়া নির্ধারিত পরিমাণ খাদ্য এবং ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী নেওয়ার অনুমোদন থাকলেও তার জন্য রাজস্ব শুল্ক দিতে হয়।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, বিদেশ থেকে এসব পণ্য কিউবায় নেওয়ার ক্ষেত্রে ভ্রমণকারীরদের জন্য পরিমাণেরও কোনো বাধ্যবাধকতা থাকবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে সরকার।
খাদ্য এবং ওষুধের ঘাটতি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, নাগরিক স্বাধীনতা কমে আসা এবং মহামারী মোকাবিলায় সরকারের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষের মাঝে গত রোববার রাস্তায় নেমে আসে কিউবার লাখো মানুষ।
এসময় তারা স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও করোনাভাইরাস মহামারী মোকাবেলায় টিকার দাবি জানিয়ে শ্লোগান দেয়।
বিক্ষোভকারীদের প্রধান দাবিগুলোর মধ্যে বাইরেরর দেশ থেকে কিউবায় আসা লোকজনকে রাজস্ব শুল্ক ছাড়া প্রয়োজনীয় পণ্য আনার অনুমোদন দেওয়ার কথাও বলা হয়।
কিউবাজুড়ে নজিরবিহীন এ সরকারবিরোধী বিক্ষোভে ইতোমধ্যে কয়েক ডজন মানুষ গ্রেপ্তার হয়েছেন। সোমবার রাজধানী হাভানার শহরতলীতে এক ব্যক্তির মৃত্যুর খবরও নিশ্চিত করেছে দ্বীপ রাষ্ট্রটির রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম।
হাভানার দক্ষিণ পশ্চিমে সান আন্তোনিও দে লোস বানোস শহরে রোববার সরকারবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর দ্রুত তা দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু কিউবায় এ ধরনের অনুমতিবিহীন জনসমাবেশ বেআইনি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা যায়, ক্ষুব্ধ লোকজন পুলিশের গাড়ি উল্টে ফেলেছে এবং রাষ্ট্রায়ত্ত দোকানগুলোতে লুটপাট চালাচ্ছে। পরে অশ্য কিউবাজুড়ে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়ার খবর পাওয়া যায়।
বার্তাসংস্থা এএফপির সাংবাদিকদের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, তিন দিন বন্ধ রাখার পর বুধবার ইন্টারনেট চালু করে দিয়েছে সরকার। ফেইসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ ও টুইটারসহ সহ কিছু ‘মেসেজিং’ ও সোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম থ্রিজি এবং ফোরজি নেটওয়ার্কে বন্ধ ছিল।
২০১৮ সালের ডিসেম্বরে দেশটিতে মোবাইল ইন্টারনেট চালু করা হলেও তা নিয়ন্ত্রণে রাখে সরকার। আড়াই বছর আগে মোবাইল ইন্টারনেট চালু হওয়ার পর থেকে সোশাল মিডিয়া সেখানে খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
সাবেক মিত্র সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর থেকে সম্প্রতি সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে কিউবা, এর মধ্যেই করোনাভাইরাস সংক্রমণের রেকর্ড বৃদ্ধি ঘটেছে।
যুক্তরাষ্ট্র কয়েক দশক ধরে কিউবার বিরুদ্ধে বাণিজ্যিক অবরোধ আরোপ করে রেখেছে আর সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তা আরও কঠোর করেছে।