মাসুদ আলম।।কঠোর
বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ার প্রথম দিনেই কুমিল্লার বিভিন্ন সড়কে যানজট দেখা
গেছে। রাস্তায় মানুষের আনাগোনা বেড়েছে। খুলেছে দোকানপাট, বাজার ও শপিং মল।
চলছে পরিবহন। কিন্তু শিথিলের প্রথম দিন বৃহস্পতিবার কুমিল্লায় সর্বত্র
স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ না করার প্রবণতা লক্ষ করা গেছে। সামাজিক দূরতটুকুও
পালন করতে দেখা যায়নি। দেখা গেছে কুমিল্লা নগরীর কান্দিরপাড়, রাণীরবাজার,
রাজগঞ্জ, চকবাজার ও টমছম ব্রিজসহ বেশ কিছু এলাকায় যানজট।
এছাড়াও ঈদুল
আজহাকে সামনে রেখে দোকানপাট, বিপণিবিতান, শপিংমল ও সড়কের পাশ দখল করে
ফুটপাতে চলছে বেচাকেনা। বিভিন্ন জায়গায় বেচাকেনার সময় স্বাস্থ্যবিধি মানতে
দেখা যায়নি।
করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকার ১ জুলাই কঠোর বিধিনিষেধ
জারি করে। দুই সপ্তাহের কঠোর বিধিনিষেধ গতকাল বুধবার মধ্যরাতে শেষ হয়।
পবিত্র ঈদুল আজহা সামনে রেখে কঠোর বিধিনিষেধ আট দিনের জন্য শিথিল করেছে
সরকার। ফলে সারাদেশে অফিস-আদালত, দোকানপাট ও বিপণিবিতান খুলছে। ২৩ জুলাই
সকাল ৬টা থেকে আবারও ১৪ দিনের জন্য বিধিনিষেধ শুরু হবে।
এদিকে রাস্তায়
মানুষ বেড়ে গেলেও বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কুমিল্লার বিভিন্ন বিপণিবিতানে
গিয়ে তেমন ভিড় চোখে পড়েনি। অধিকাংশ ক্ষেত্রে মাস্ক ছাড়া ক্রেতাদের মার্কেটে
ঢুকতে দেয়নি কর্তৃপক্ষ। তবে মার্কেটের ভেতরে কিছু লোকজনকে মাস্ক ছাড়াই
ঘোরাঘুরি করতে দেখা গেছে। তাঁদের কারও মাস্ক ছিল হাতে, আবার কারও থুতনিতে।
এদিকে
কঠোর বিধিনিষেধ শিথিলের প্রথমদিন কুমিল্লার শাসনগাছা, জাঙ্গালিয়া ও
চকবাজার টার্মিনাল থেকে জেলা ও আন্তঃজেলার সকল রোডে যাত্রীবাহী বাস ছেড়ে
গেছে। বিধিনিষেধ অনুযায়ী প্রথমদিন বাসে স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রবণতা দেখা
গেছে। তবে স্বাভাবিকের তুলনায় যাত্রীর সংখ্যা খুবই কম ছিলো।
কুমিল্লা
জেলা বাস-মালিক সমিতির মহাসচিব মো. তাজুল ইসলাম জানান, সরকারের বিধিনিষেধ
মোতাবেক ১৪দিন বন্ধ থাকার পর কঠোর লকডাউন শিথিলের প্রথমদিন কুমিল্লার তিন
বাস টার্মিনাল থেকে জেলা ও আন্তঃজেলা সকল রোডে যাত্রী পরিবহনে বাস চলাচল
করেছে। মাস্ক পরিধান ছাড়া কোন যাত্রীকে বাসে উঠতে দেওয়া হয়নি। অর্ধেকের
বেশি যাত্রী পরিবহন করা হয়নি। কোন যাত্রী ভুলে মাস্ক রেখে আসলে ওই যাত্রীকে
পরিবহন কর্তৃপক্ষ মাস্ক দিয়ে সহযোগিতা করেছে। স্বাস্থ্যবিধি মানার
ক্ষেত্রে এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকবে।
শিথিলে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক
দূরত্ব মানার বিষয়ে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ
শাহাদাত হোসাইন বলেন, সরকার ১৪ দিন শেষে কঠোর লকডাউন শিথিল করেছে। শিথিলের
খবরে কুমিল্লায় সড়কে সড়কে মানুষের আনাগোনা বেড়েছে। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত
করতে প্রতিদিনই জেলা প্রশাসন মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে যাচ্ছেন। দোকানপাট,
বাজার, শপিংমল ও পরিবহন নেতাদের সঙ্গে বসা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন,
কুমিল্লায় প্রতিদিনই করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। তৈরি হচ্ছে
ভয়াবহ পরিস্থিতি। তারপরও স্বাস্থ্যবিধি না মানলে জেলা প্রশাসন মানুষের ঘরে
ঘরে যাওয়া সম্ভব হবে না।