ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
কুমিল্লায় লকডাউন বাস্তবায়নে সড়কে ব্যারিকেড 
ঘুরতে হচ্ছে এম্বুলেন্সসহ সেবামূলক যান
Published : Thursday, 29 July, 2021 at 12:00 AM, Update: 29.07.2021 12:44:37 AM
কুমিল্লায় লকডাউন বাস্তবায়নে সড়কে ব্যারিকেড  মাসুদ আলম / বশিরুল ইসলাম ||
কুমিল্লা নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে ব্যারিকেড দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। এতে এম্বুলেন্স ছাড়াও সেবামূলক কাজে নিয়োজিত যানবাহনগুলোকে সড়কে পারাপার হতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। গন্তব্যে পৌঁছতে ঘুরতে হচ্ছে লম্বা পথ। গত ২৩ জুলাই থেকে সারাদেশে ১৪ দিনের কঠোর লকডাউন চলছে। করোনাভাইরাস বিস্তাররোধে সরকার ঘোষিত এই নির্দেশনা অমান্য করে অপ্রয়োজনে মানুষ ঘর থেকে বের হয়ে সড়কে চলাচল করছেন। ১৪ দিনের লকডাউনের ৬ষ্ঠ দিন অতিবাহিত না হতেই সড়কে বেড়েছে যানবাহন ও মানুষের উপস্থিতি। যার কারণে বুধবার (২৮ জুলাই) সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে জেলা পুলিশ ও জেলা প্রশাসন কুমিল্লা নগরীর কান্দিপাড় থেকে রাণীর বাজার সড়কের নজরুল এভিনিউ, টমছম ব্রিজ, চকবাজারের তেলিকোনা ও শাসনগাছাসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। এতে করে সড়কে স্বাভাবিকের তুলনায় কমেছে যান চলাচল। বেড়েছে পুলিশ, বিজিবিসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীদের উপস্থিতি। সড়কের মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিয়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা। মোটরসাইকেলে একজনের বেশি আরোহী থাকলেই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীদের কাছে জবাবদিহি করতে হয়। জবাবদিহি গুরুত্বপূর্ণ মনে না হলে ভ্রাম্যমান আদালত জরিমানা করে ছেড়ে দিচ্ছেন।
সরেজমিনে সড়ক ঘুরে দেখা যায়, করোনাভাইরাসের বিপর্যয় ঠেকাতে সারাদেশে কঠোর লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধ অমান্য করে প্রশাসনের চোক ফাঁকি দিয়ে সড়কে যানবাহন ও মানুষ চলাচল করছে। রিকশায় চার-পাঁচজন এবং অটোরিকশায় আট-দশজন যাত্রী নিয়ে ঠাঁসাঠাসি করে বসিয়ে গন্তব্যে রওনা ও মোটরসাইকেলে দুই-তিনজন উঠে সড়কে অপ্রয়োজনে ঘুরে বেড়াচ্ছে। যার কারণে কুমিল্লায় করোনাভাইরাসের ভয়াবহ বিস্তার রোধে পুলিশ কুমিল্লা নগরীর কান্দিপাড় থেকে রাণীর বাজার সড়কের নজরুল এভিনিউ, টমছম ব্রিজ, চকবাজার ও শাসনগাছাসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেন। এ সময় শুধু মাত্র এম্বুলেন্সসহ সেবামূলক কাজে নিয়োজিত যানবাহনগুলোকে সড়কে পারাপার হতে দেখা যায়।
এদিকে বুধবার কুমিল্লার প্রাণকেন্দ্র কান্দিরপাড় থেকে রাণীর বাজার, পুলিশ লাইনস, টমছম ব্রিজ, রাজগঞ্জ, প্রেসক্লাব ও ভিক্টোরিয়া কলেজ উচ্চমাধ্যমিক শাখার মূল সড়কে নিরবিচ্ছন্নভাবে অবস্থান নিয়েছে পুলিশ, বিজিবিসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।         
কুমিল্লা নগরীর চকবাজার তেলিকোনা গিয়ে দেয়া যায়, যান চলাচল বন্ধে সড়কটিতে ব্যারিকেড দিয়েছে পুলিশ। তেলিকোনা থেকে কাটাবিল যাওয়ার সড়কটিতেও কাঠের বাক্স ফেলে রাখা হয়।  রাজগঞ্জ থেকে দারোগাবাড়ী মাজার সড়কে বাঁশ ও রশি দিয়ে ব্যাড়িকেড দেওয়া হয়েছে। একটু সামনে এগুলে আমির দিঘির সড়কটিতে বাঁশ বেধে দেওয়া হয়। একটু পেছনে গেলে গোবিন্দপুকুর সড়কটিতেও বাঁশ দিয়ে আটকে দেয়া হয়। রাস্তায় ফেলে রাখা হয় ল্যাম্পপোষ্ট। হঠাৎ করে এ ব্যারিকেড দেওয়াতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। বিঘœ ঘটে অসুস্থ রোগীদের। অনেকে কষ্ট করে গন্তব্যস্থলে পৌঁছেছেন। কিন্তু তেলিকোনা ব্যারিকেডের অপরপ্রান্তে রয়েছে সিএনজি ও অটোবাইকের জট। বিকল্প হিসেবে তৈয়ব আলী মুন্সি বাড়ির পাশের সড়কটি দিয়ে যানবাহন চলাচল করে। এতে যানজটও লেগে যায়।
ডাক্তার দেখাতে যাওয়া একজন রোগীর সাথে কথা হলে  তিনি বলেন, এখন জরুরি ভিত্তিতে ডাক্তারের কাছে যাওয়ার পথ থাকল না। অন্য সড়ক দিয়ে গেলে অনেকটা পথ ঘুরতে হয়। দেখা গেছে একটি সড়ক দিয়ে অনেকগুলো যানবাহন চলাচল করছে। এতে লেগে যায় যানজট-আমাদের ভোগান্তিটা বেড়ে যায়। এ সড়ক খুলে না দিলে মুমূর্ষু রোগীর ক্ষেত্রে ঝুঁঁকির মাত্রা আরও বেড়ে যাবে।
সড়কে ব্যারিকেডের বিষয়ে কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানার তদন্ত পরিদর্শক অমল কৃষ্ণ ধর জানান, কুমিল্লায় প্রতিদিনই করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ভয়াবহতা তৈরি হয়েছে। করোনাভাইরাস বিপর্যয় ঠেকাতে সড়কে ব্যারিকেড দিয়েছে পুলিশ। এতে করে সড়কে যান চলাচল কমবে এবং মানুষ চলাচলে নিরুৎসাহিত হবে।
এদিকে বুধবার বিকেলে সরকারের ঘোষিত বিধিনিষেধ পর্যবেক্ষণে কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন সড়কে মহড়ায় নেমেছে জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশ। পুলিশের মহড়ায় কিছুটা জনমানব শূণ্য হয়ে পড়ে সবগুলো সড়ক। মহড়া শেষে আবারও সড়কে যান চলাচলা শুরু করে রিকশা, অটোরিকশাসহ প্রয়োজনীয় ও অপ্রয়োজনীয় যানবাহন।  
কুমিল্লা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো: আশিক উন নবী তালুকদার জানিয়েছেন, কুমিল্লা কান্দিরপাড়সহ বিভিন্ন স্থানে স্বাস্থ্য বিধি ভঙ্গ করার অপরাধে শুধুমাত্র বুধবারে ১১জনকে জরিমানা করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, মাস্ক ব্যবহারের জন্য সাধারণ মানুষকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।  প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে।