সরকারের নির্ধারিত করোনা ভ্যাকসিন রেজিস্ট্রেশন অ্যাপ ‘সুরক্ষা’তে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের নিবন্ধন করার জন্য সুযোগ রাখার নির্দেশনা চেয়ে সরকার সংশ্লিষ্টদের প্রতি একটি আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক এবং আইইডিসিআর এর পরিচালককে এ নোটিশ প্রেরণ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) ই-মেইলের মাধ্যমে মানবাধিকার সংঠন ল অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশনের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব এবং ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাউছার এ নোটিশ পাঠান।
নোটিশে বলা হয়েছে, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ প্রতিবছর প্রায় ৩৫ লাখ নারী অন্তঃসত্ত্বা হয়। অর্থাৎ, ৩৫ লাখ অন্তঃসত্ত্বা নারী আরও ৩৫ লাখ মানুষের অস্তিত্ব বহন করে। কিন্তু করোনা মহামারিতে আক্রান্ত হয়ে হাজার হাজার অন্তঃসত্ত্বা নারী ও শিশু মারা যাচ্ছে। তাই সঠিকভাবে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের করোনার টিকার ব্যবস্থা করা গেলে অনেক মৃত্যু কমিয়ে আনা সম্ভব।’
‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, অন্তঃসত্ত্বাদের করোনা ভ্যাকসিন দেওয়া যাবে। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ অন্তঃসত্ত্বাদের ফাইজার ও মডার্না উৎপাদিত কোভিড ভ্যাকসিন দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ওই সব দেশের অন্তঃসত্ত্বা নারীরা করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে আসছেন। কিন্তু তাদের ক্ষেত্রে তেমন কোনও পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। গবেষণা অনুযায়ী অন্তঃসত্ত্বা নারীরা করোনায় আক্রান্ত হওয়ার অধিক ঝুঁকিতে থাকেন এবং কোনও কারণে আক্রান্ত হলে তাদের ও শিশুর জীবন বিপদাপন্ন হয়ে পড়ে’ বলা হয় নোটিশে।
এতে আরও বলা হয় ‘অথচ অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, সরকারের নির্ধারিত করোনা ভ্যাকসিন রেজিস্ট্রেশনের অ্যাপ ‘সুরক্ষা’তে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিবন্ধন করার জন্য অন্তঃসত্ত্বা নারীদের জন্য কোনও সুযোগ রাখা হয়নি। অথচ তাদের চেয়েও কম ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকাদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অন্তঃসত্ত্বাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করোনা টিকা পাওয়ার অধিকার রয়েছে। এই অধিকার গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান স্বীকৃত একটি মৌলিক অধিকার। তাদের অগ্রাধিকার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না করা একটি নিপীড়নমূলক, বৈষম্যমূলক এবং তাদের জীবনধারণের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। এ কারণে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা প্রদানের জন্য সুরক্ষা অ্যাপে সুযোগ করে দেওয়া সরকারের অন্যতম দায়িত্ব।’
তাই নোটিশ পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের করোনো টিকা প্রদান শুরু করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। না হলে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনার জন্য হাইকোর্টে প্রতিকার চেয়ে জনস্বার্থে রিট মামলা দায়ের করা হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।