জীবন ফুরিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত সংসদে
Published : Saturday, 31 July, 2021 at 12:00 AM
বিশেষ প্রতিনিধি:
‘জীবন
কে গণনা করো না যে কতদিন বাঁচলা, গণনা করো যে জীবনে কত মানুষের সাথে
সম্পৃক্ত হয়েছো। কর্ম দিয়েই তাদের বিচরণ হচ্ছে। মানুষের কল্যাণে কাজ করতে
হবে’।
অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ঠিক একমাস পূর্বে গত ২ জুন মহান
সংসদে বক্তৃতাকালে মৃত্যু নিয়ে এক প্রখ্যাত ব্যক্তির উদ্বৃতি দিয়ে
কুমিল্লা-৫ আসনের প্রয়াত সংসদ সদস্য এড. আব্দুল মতিন খসরুর বর্ণাঢ্য
রাজনৈতিক জীবন কাহিনী তুলে ধরে ওই উক্তি করেছিলেন অধ্যাপক মো. আলী আশরাফ
এমপি। তাঁর ওই সাড়া জাগানো বক্তৃতায় একজন রাজনৈতিক নেতার মাঝে একজন
দার্শনিকের রূপও দেখিছিলেন দেশবাসী।
ওই বক্তৃতায় তিনি নিজের জীবন
ফুরিয়ে যাওয়ার কিছুটা ইঙ্গিত করে বলেছিলেন- ‘অত্যন্ত ¯েœহপরায়ণ মতিন খসরু,
মোহাম্মদ নাছিম, সাহারা আপাসহ আমাদের পাশের অনেকেই হারিয়ে গেছেন, আমরাও কে
কখন হারিয়ে যাই তার ঠিক নেই। সুতরাং এই পৃথিবীতে এগুলো কিন্তু একটা
সাংঘাতিক কঠিন সংকেত; মানুষ যাতে সতর্ক হয়। এই মৃত্যুগুলো দেখে আমরা যে
একটু হিসাব-নিকাশ করি না। যে আমরা মরব, মরলে আমাদের হিসাব দিতে হবে’।
তিনি
আরও বলেছিলেন- ‘আমার পাশের সংসদ সদস্য আব্দুল মতিন খসরু। ছোটকাল থেকে আমার
অত্যন্ত ¯েœহপরায়ন ছিল মতিন, যা মৃত্যুর আগদিন পর্যন্ত। অত্যন্ত ভাল,
জনপ্রিয় ছিল মতিন খসরু। তাঁর মৃত্যুর পর নামাজে জানাজায় দাঁড়িয়ে আমাকে
বক্তৃতা করতে হবে? মূলত আমারটাতে তাঁর দাঁড়িয়ে বক্তৃতা করা কথা ছিল। কিন্তু
অদৃষ্টের কি নির্মম পরিহাস। এটা যে কোন সময় যে কারও ক্ষেত্রে ঘটতে পারে’।
তাঁর
ওই শ্রুতি মধুর বক্তৃতায় সাড়া পড়ে দেশজুড়ে। জীবন-মৃত্যু নিয়ে ধ্রুব সত্য
কথাগুলো অটপটে বলে মাত্র এক মাসের মধ্যেই চিকিৎসার জন্য গত ২ জুলাই
হাসপাতালে ভর্তি হন প্রবীণ ওই সংসদ সদস্য। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার মাত্র এক
সপ্তাহ পরে গত ৯ জুলাই জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দ্রুত তাঁকে আইসিইউতে
স্থানাস্তর করা হয়। অবশেষে ৩০ জুলাই বিকাল সাড়ে ৩টায় মৃত্যুর কাছে হার মেনে
না ফেরার দেশে পারি জমান ৭১’র এই বীর সৈনিক।