ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
কুমিল্লায় পরকীয়ায় প্রতিবাদ করায় স্ত্রীর হাতে প্রবাসী স্বামী খুন
সৌরভ মাহমুদ হারুন
Published : Sunday, 1 August, 2021 at 2:30 PM, Update: 01.08.2021 2:34:07 PM
কুমিল্লায় পরকীয়ায় প্রতিবাদ করায় স্ত্রীর হাতে প্রবাসী স্বামী খুন কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার নিশ্চিন্তপুর এলাকায় ভাড়াটিয়া বাসা থেকে ৩০ জুলাই শুক্রবার দুপুরে মমিনুল ইসলাম (৩৫) নামের এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে স্ত্রীর পরকিয়ার প্রতিবাদ করায় সুকৌশলে হত্যা করার অভিযোগ করেছে নিহতের মা রাবেয়া বেগম ও বোন সহ স্বজনরা ।  গত শনিবার মাগরিবের পূর্বে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের সদস্যরা গ্রামবাসীর সহায়তায় নিহতের বসত ভিটায় তার দাফন সম্পন্ন করেছে। 
নিহতের পারিবারিক সুত্রে জানা যায়,জেলার বুড়িচং উপজেলা সদরের ফকির বাড়ির মৃত জাফর আলী শাহ’র পুত্র মমিনুল ইসলাম সৌদিতে প্রায় ১৩ বছর দীর্ঘ প্রবাস জীবন শেষে চলতি বছরের মার্চ মাসে দেশে ফিরে আসে। পরবর্তীতে সে নিজ বাড়িতে না উঠে কয়েকদিন শ্বশুড় বাড়ি থেকে বুড়িচং উপজেলা সদরে একটি ভাড়া বাসায় স্ত্রী ও এক সন্তান নিয়ে বসবাস শুরু করে। এরপর গত ১৪ জুলাই আদর্শ সদর উপজেলার দূর্গাপুর উত্তর ইউনিয়নের ময়নামতি সেনানিবাস সংলগ্ন নিশ্চিন্তপুর এলাকায় ভাই ভাই ভিলা নামের একটি বাড়ির নীচতলায় ভাড়া নিয়ে চলে আসে। এসময় ওই বাসায় স্ত্রী, শিশু সন্তান মাহমুদ ইসলামছাড়াও  শাশুড়ি,শ্যালিকা রিমিকে নিয়ে বসবাস শুরু করে। নিহতের বড় বোন হাজেরা আক্তার জানান, আতাউর নামের এক ব্যক্তির মোবাইল ফোনে ভাইয়ের নিহতের খবর পেয়ে গত ৩০ জুলাই বেলা আড়াইটায় নিশ্চিন্তপুর ভাড়া বাসায় গিয়ে দেখে লাশ মাটিতে শোয়ানো অবস্থায় । এসময় তারা লাশ দেখতে চাইলেও তাদের লাশ দেখতে দেয়নি মমিনের স্ত্রী মাহমুদা ইসলাম সুমি (২৪)।একই সময় কোতয়ালী থানার নাজিরাবাজার পুলিশ ফাড়ির এসআই    ঘটনাস্থলে এসে লাশের সুরতহাল করে প্রথমে নাজিরাবাজার ফাঁড়ি ও পরে কোতয়ালী মডেল থানায় নিয়ে যায়। এসময় নিহতের মা রাবেয়া বেগমসহ পরিবারের অন্যান্য স্বজনরাও থানায় উপস্থিত হওয়ার পর পুলিশ নিহতের মাকে অভিযোগপত্র না শুনিয়ে জোরপূর্বক তার কাছ থেকে অপমৃত্যুর স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। নিহতের মা রাবেয়া বেগম অভিযোগ করেন,আমি আমার পুত্রের নিহতের ঘটনায় থানায় স্ত্রী সুমি,শ্বশুড় সফিক,শ্বাশুড়ি আনোয়ারা ও পরকিয়া প্রেমিক মনিরের বিরুদ্ধে মামলার জন্য বারবার অনুরোধ করলেও পুলিশ তাকে ধমকায় এবং মামলা নিতে অস্বীকার করেন। নিহতের মা রাবেয়া ও বোন হাজেরা আক্তার সাংবাদিকদের আরো জানান, নিহত মমিন ২০০৭ সালে সৌদিতে যায়। ২০১৪ সালে ফিরে এসে পারিবারিকভাবে সুমির সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। পরে সে আবারো সৌদি আবরে চলে গেলে সুমির সাথে বুড়িচং উপজেলার পীরযাত্রাপুর ইউনিয়নের গোপিনাথপুর গ্রামের মৃত সুলতান আহমদ  এর পুত্র মনিরের অবৈধ সম্পর্ক গড়ে উঠে।  বিষয়টি জানার পরই মমিন বিদেশ থেকে চলে এসেছিল। পরবর্তীতে মমিন স্ত্রীকে অবৈধ সম্পর্ক থেকে ফেরানোর চেষ্টা করলে তাদের বিরোধ চরমে উঠে। এনিয়ে গত কয়েকদিন তাদের মাঝে ঝগড়াও হয়। এরই জের ধরে ৩০ জুলাই শুক্রবার মমিনকে অজ্ঞাত সহযোগীদের নিয়ে কৌশলে হত্যা করে বলে নিহতের মা রাবেয়া বেগম সন্দেহ করছেন। পরিবারের সদস্যরা আরো জানায়,নিহতের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। নিহতের মার দাবী সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক তার সন্তানের হত্যার ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির আওতায় এনে বিচার নিশ্চিত করার। এব্যাপারে মামলার তদন্তকারী নাজিরাবাজার পুলিশ ফাঁড়ির এসআই ফারুক আহমেদ জানান,তাদের পারিবারিক দ্বন্দ্বের বিরোধের জের এঘটনা ঘটতে পারে। আমরা লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করেছি। ময়নাতদন্তের পর শনিবার লাশ বুড়িচং উপজেলা সদরে তার গ্রামে দাফন করেছে। মৃত্যুর প্রকৃত কারন জানা যায়নি। তবে পুলিশ তদন্ত চলছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলাম মৃত্যু রহস্য উম্মেচন হবে। অভিযোগ অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।