
রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (২ আগস্ট) সকালে রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে করোনায় সাত ও উপসর্গে আট জন মারা গেছেন। তাদের মধ্যে রাজশাহীর ছয়, নাটোরের দুই, পাবনার পাঁচ, কুষ্টিয়ার এক ও নওগাঁর এক জন। নয় জন পুরুষ ও ছয় জন নারী। তাদের আট জনের বয়স ৬১ বছরের ওপরে। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে দুই, ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সের মধ্যে তিন ও ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সের মধ্যে দুই জন।
শামীম ইয়াজদানী আরও জানান, করোনা ইউনিটে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৭ জন ভর্তি হয়েছেন। একই সময় সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৫৯ জন। সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত করোনা ইউনিটের ৫১৩ শয্যার বিপরীতে ৩৯৯ জন ভর্তি আছেন। তাদের মধ্যে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রয়েছেন ২০ জন। করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন রোগীদের মধ্যে ১৭৪ জন করোনায় আক্রান্ত। উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছেন ১৪৬ জন। তাদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া করোনামুক্ত হয়েও পরবর্তী স্বাস্থ্য জটিলতায় চিকিৎসাধীন ৭০ জন।
হাসপাতাল পরিচালক জানান, রাজশাহীতে করোনা সংক্রমণের হার ওঠা-নামা করছে। রবিবার দুইটি ল্যাবে রাজশাহী জেলার ৩৬৮টি নমুনা পরীক্ষা করে ১০০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ২৭ দশমিক ১৭ শতাংশ। এর আগের দিন শনিবার ছিল ৩২ দশমিক ৭১ শতাংশ, শুক্রবার ২৪ দশমিক ৩২ শতাংশ, বৃহস্পতিবার ২২ দশমিক ৮৮ শতাংশ ও বুধবার ২৮ দশমিক ৯০ শতাংশ।
শামীম ইয়াজদানী বলেন, হাসপাতালে পৃথক চারটি প্যাথলজিক্যাল সেবা চালু করা হয়েছে। এখন থেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আর বাইরে যেতে হবে না।
তিনি আরও বলেন, ডি-ডাইমার, ডি-হাইড্রোজেনেস, সিআরপি, সিরাম ফেরিটিন পরীক্ষাগুলো রামেক হাসপাতালেই হবে। এই পরীক্ষাগুলো বাইরের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে করতে অনেক টাকা নেয়। তাই হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের জন্য এই সেবা চালু করা হয়েছে। সরকার নির্ধারিত ৬০০ টাকায় ডি-ডাইমার, ২৫০ টাকায় সিরাম ফেরিটিন এবং ১৫০ টাকায় ডি-হাইড্রোজেনেস ও সিআরপি পরীক্ষা করা যাবে। পাশাপাশি আইসিইউতে ভর্তি রোগীদের আরও তিনটি পরীক্ষা একসঙ্গে ৬০০ টাকায় করা হবে। ইসিজির ব্যবস্থা আগে থেকেই ছিল। এর সঙ্গে এখন ট্রপোনিন আইও টেস্ট করা যাবে ৫০০ টাকায়।
তিনি বলেন, করোনা রোগীদের এই পরীক্ষাগুলো একাধিকবার করতে হয়। ফলে করোনা পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যয়ভার বহন করতে না পেরে অনেক রোগী পরোপুরি সুস্থ হওয়ার আগেই রাজশাহী মেডিক্যাল ছেড়ে চলে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থা পরিবর্তন আনা হবে।