অস্ট্রেলিয়ার
বিপক্ষে অতি সহজে বাংলাদেশ সিরিজ জিতবে প্রত্যাশাও করতে পারেননি বিসিবি
সভাপতি নাজমুল হাসান। গণমাধ্যমে এমন কথা পরিস্কার বলেছিলেন তিনি। তার কাছে
বাংলাদেশের ৪-১ ব্যবধানে জয় যেন অসাধ্য সাধনের মতোই। কেন-ই বা হবে না, দলটা
যখন অস্ট্রেলিয়া তখন মাহমুদউল্লাহ, সাকিবদের কীর্তি বড় করে দেখতেই হবে।
নিজেদের
ডেরায় বাংলাদেশ যে কাউকে যখন তখন হারাতে পারে এমন কথা অজানা নয়। বিশেষ করে
স্বাগতিক সুবিধা নেওয়ার অভ্যাস গড়ে ওঠার পর এমন বিশ্বাস সবার মধ্যেই ছড়িয়ে
গেছে। যার শুরুটা হয়েছিল চন্ডিকা হাথুরুসিংহের সময় থেকে। তার অধীনে
বাংলাদেশ নিজেদের মাঠে হয়ে উঠেছিল পরাশক্তি। শক্তিধর দলগুলিও এখানে এসে
নাকানিচুবানি খেয়েছিল।
মন্থর, অসমান বাউন্স ও স্পিন বান্ধব উইকেট বানিয়ে
বাংলাদেশ বড় সবগুলি দলকেই নিজেদের মাটিতে হারিয়েছে। বাদ ছিল কেবল নিউ
জিল্যান্ড। এবার সেই সুযোগটিই পাচ্ছে বাংলাদেশ। হাতছাড়া করার পে নয়
সংশ্লিষ্টরা কেউ।
২০১৫ বিশ্বকাপের পর যে পালাবদলের সুর বেজেছে দেশের
ক্রিকেটে, সেই সুরে ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তানকে হারিয়েছে
বাংলাদেশ। উপমহাদেশের বাইরের ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, ওয়েস্ট ইন্ডিজও
নাকানিচুবানি খেয়েছে। ২০১৩ সালের পর বাংলাদেশের বিপে সিরিজ খেলতে বাংলাদেশে
আসছে নিউ জিল্যান্ড। পাঁচ টি-টোয়েন্টি খেলবে তারা।
কিউইদের হারানোর
জন্য বাংলাদেশ একই ছক কাটছে টিম ম্যানেজমেন্ট। জাতীয় নির্বাচক মিনহাজুল
আবেদীন নান্নু মনে করেন, নিজেদের শক্তি যেরকম সেরকম পরিকল্পনাই করছে
দল,‘আমরা স্পিন ফ্রেন্ডলি উইকেটে অভ্যস্ত। অস্ট্রেলিয়ার বিপে এভাবেই সাফল্য
পেয়েছি। নিউ জিল্যান্ডের বিপওে এমন পরিকল্পনা করা উচিত।’
তার মতে, রান
প্রসবা উইকেটে খেলা যেমন জরুরী তেমন জয়ের অভ্যাস থাকাও জরুরী, দটি-টোয়েন্টি
ক্রিকেট মোমেনটামের খেলা। মাত্র ২০ ওভারের ম্যাচ। আপনি ভালো উইকেটে খেললে
আপনা আপনি ব্যাটসম্যানরা রান পাবে। আপনি জয়ের আত্মবিশ্বাসে থাকলে যে কোনো
উইকেটে বড় রান করা যাবে। আবার বোলিংয়ে আপনার শারীরিক ভাষা অর্ধেক কাজ করে
দেবে। বোলাররা নিজেদের সামর্থ্য দেখাতে পারলে যেকোনো কন্ডিশনে গিয়েই সাফল্য
পাবে।’
সামনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। বিশ্বকাপের আগে সবগুলি দল কন্ডিশন
অনুযায়ী প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার বিপে যেই উইকেটে খেলেছে
তাতে আদর্শ অনুশীলন হয়েছে কি না তা নিয়ে বিরাট প্রশ্ন উঠেছে। তবে এসব
প্রশ্নের আড়ালে ইতিবাচক কিছু দিকও ছিল। যেমন, তরুণরা দায়িত্ব নিয়ে ম্যাচ
জেতাচ্ছে। আফিফ, সোহান, মোস্তাফিজ, শামীম, শরিফুলরা নিজেদের কাজ শেষ করছে
ভালোভাবে। তাতে সিনিয়রদের ওপর নির্ভরতা কমছে।
পাইপলাইনের এ শক্তিকে বড়
করে দেখছেন বিসিবির পরিচালক জালাল ইউনুস। ‘পাইপলাইনে যারা থাকে, তারা
পারফর্ম করলে খুবই আনন্দের বিষয়। ব্যাকআপ খেলোয়াড়রা ভালো খেললে সবাইকে
স্বস্তি দেয়। ফ্রন্টলাইনের খেলোয়াড়রা ইনজুরিতে পড়লে ব্যাকআপ খেলোয়াড়দের
পাবেন। এটা আমাদের জন্য বড় সাপোর্ট। হুট করে কোনো গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়
খেলতে না পারলে অন্তত ব্যাকআপ পাব। তারা মাঠে নেমে পারফর্ম করবে এই
বিশ্বাসটুকু সবাই পেয়ে গেছে।’
নিউ জিল্যান্ডের বিপে ১০ টি-টোয়েন্টি
খেলেছে বাংলাদেশে। হেরেছে প্রতিটি ম্যাচ। এবার ঘরের বদলা নেওয়ার পালা।
অনেকটা নতুন মোড়কেই আসছে তারা। সেই একই ছক। যেখানে বাংলাদেশ বরাবরই উড়ন্ত।
প্রতিপ ডুবন্ত।